নওগাঁয় দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ: ভোগান্তীতে যাত্রীরা

নওগাঁয় দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ: ভোগান্তীতে যাত্রীরা

নওগাঁ প্রতিনিধি:-
নওগাঁ থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটসহ দূরপাল্লার সকল রুটের বাস চলাচল গত এক সপ্তাহ থেকে বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তীতে পড়েছে নওগাঁবাসী। নওগাঁ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাথে বগুড়া শাহ ফতেহ আলী বাস মালিকের অন্তর্দ্বন্দ্বে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নওগাঁ থেকে দূর পাল্লার সব বাস চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। নওগাঁবাসী পরিবহনের ক্ষেত্রে জিম্মি হয়ে পড়েছে বগুড়ার কাছে। সিন্ডিকেটের মূল হোতা শাহ ফতেহ আলীর মালিক। আর এসমস্যা নিরসনে নওগাঁ-নাটোর সড়ক দ্রুত চালু হওয়ার প্রয়েজন বলে মনে করছেন নওগাঁবাসী। জানা গেছে, ঢাকার মহাখালী থেকে নও গাঁর সাপাহার রুটে বগুড়া ও নওগাঁ শ্রমিক ইউনিয়নের দু’টি বাস সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে চলাচল করতো। গত কয়েকদিন ধরে বগুড়ার শাহ ফতেহ আলী বাসের মালিক পক্ষ চুক্তি ভঙ্গ করে তাদের দুটো বাস নিয়ে চলে যায়।
নওগাঁয় দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ: ভোগান্তীতে যাত্রীরাএরপর নওগাঁর বাসগুলো বগুড়ার ওপর দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়। ফলে ঢাকার উদ্যেশে নওগাঁর বাসগুলো রাজশাহী দিয়ে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হচ্ছে। এতে টাকা, সময় এবং ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে যাত্রী সাধা রনের। নওগাঁ শহরের ঢাকা বাস স্ট্যান্ডে কাউন্ডারগুলো বেশির ভাগই বন্ধ রয়েছে। কয়েকটি টিকিট কাউন্টার খোলা থাকলেও যাত্রীরা অপেক্ষা করছেন ঢাকা যাওয়ার জন্য। অপরদিকে বগুড়ার বাসগুলো নওগাঁ জেলার শেষ সীমান্তেÍ সান্তাহারের কাছে অবস্থান করছে। সেখান থেকে তারা যাত্রী উঠিয়ে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন। আবার টিকিটের টাকাও বেশি নেয়া হচ্ছে। ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে একতা কাউন্টারে ঢাকা যাওয়ার জন্য জেলার পতœীতলা উপজেলা থেকে আসা যাত্রী সুমাইয়া অপেক্ষা করছেন। তিনি বলেন, সকাল থেকে কাউন্টারে টিকিট নিয়ে অপেক্ষা করছি। আগে ৪০০ টাকা ভাড়া ছিল। বাস বন্ধ থাকায় ৫৫০ টাকায় টিকিট কিনতে হয়েছে। বাসে যাত্রী ভর্তি না হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। একদিকে টাকাও বেশি দিতে হচ্ছে। আবার সময়ও বেশি, ভোগান্তীতেও পড়তে হচ্ছে। হুমায়ন কবীর চাকুরির সুবাদে নওগাঁয় বসবাস করেন। টিকিটের জন্য এসেছেন শ্যামলী কাউন্টারে। তিনি বলেন, গ্রামের বাড়ী সিলেটে। পরিবারের সাথে দেখা গ্রামে দেখা করতে যাবে। কয়েকদিন থেকে বাড়ী যাওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু হচ্ছে না।

আর টিকিট কিনলেও তো বাড়ী যেতে পারবো না। যেখানে বাস চলাচল করেছনা।  শহীদুল ইসলাম নামে এক ড্রাইভার বলেন, প্রথম দিন গাড়ি নিয়ে ঢাকার উদ্যেশে বগুড়ায় গেলে যাত্রীদের নেমে দেয়া হয় এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। কয়েকদিন থেকে গাড়ি বন্ধ। বেকার হয়ে পড়েছি। পরিবার নিয়ে দিন চলাও কষ্টকর হয়ে উঠেছে।  নওগাঁ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সহ-সভাপতি তৌহিদুল বারী বলেন, বগুড়ার উপর দিয়ে নওগাঁর বাসগুলো ঢাকায় যেতে প্রতিটি বাসের জন্য ৩৫০ টাকা করে গুনতে হয়। প্রতিদিন শতাধিক বাস আসা যাওয়া করে। যে টাকা দেয়া হয় তার কোন রশিদ থাকে না। এটা এক প্রকার চাঁদাবাজী। আমরা নওগাঁবাসী পরিবহনের ক্ষেত্রে তাদের কাছে জিম্মি। তারা প্রায় নওগাঁর বাসগুলো বগুড়ার উপর দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়। আর সিন্ডিকেটের মূল হোতা শাহ ফতেহ আলীর মালিক। নওগাঁ জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, বগুড়ার সাথে এ সমস্যা সমাধানের একটাই উপায় আমাদের নওগাঁ-নাটোর সড়ক চালু হওয়া। নচেৎ যতোদিন বগুড়ার উপর দিয়ে নওগাঁর বাস চলবে ততোদিন এ সমস্যা হতেই থাকবে। বগুড়া বাস মালিকদের সাথে আমরা বসে শিগগিরই বাস চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment