নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ থেমে গেছে ঠিকাদার লাপাত্তা,নয় বছরেও নির্মাণ হয়নি ভবন

 হিমেল আহমেদ,নিকলী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ কার্যক্রম থেমে গেছে। নতুন ভবনগুলো নির্মাণ হয়নি নয় বছরেও। অর্ধেক কাজ শেষে বেশির ভাগ বিল নিয়ে ঠিকাদার লাপাত্তা বলে অভিযোগ উঠেছে। সরজমিনে দেখা যায়, ১৮ মাস সময়ের মধ্যে ভবনগুলোর নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। যতটুকু কাজ হয়েছে, তাও খুব নিম্নমানের বলে অভিযোগ উঠেছে। অর্ধনির্মিত ভবনগুলোর একাধিক স্থানে বড় বড় ফাটল ধরেছে।চুরি হচ্ছে ফাটলকৃত অংশের ইট। পরিত্যক্ত থাকায় এগুলোতে দিন-রাত চলছে মদ, গাঁজা ও ইয়াবাসেবীদের আড্ডা ও জুয়া খেলাসহ ভাসমান পতিতাবৃত্তি এবং অসামাজিক কার্যকলাপ। এলাকাবাসীও বঞ্চিত হচ্ছে কাঙ্খীত স্বাস্থ্যসেবা থেকে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের জন্য নতুন একটি হাসপাতাল ভবন ও তিনটি আবাসিক ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে।নয় বছরেও নির্মাণ হয়নি টেন্ডারকৃত নতুন ভবন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঠিকাদার ভবনগুলোর অর্ধেক কাজ করেই তিন কোটি ৬৮ লাখ টাকা বিল তুলে নিয়েছেন। এ ব্যাপারে নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এ ডি মাহমুদ আসাদ জানান, ভবন নির্মাণকাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ডাক্তার ও স্টাফদের আবাসিক সমস্যা চরম আকার ধারণ করেছে। এ কারণে তারা নিকলীতে আসতে বা থাকতে চায় না। বেড সংকটের কারণে রোগীদের রাখতে হচ্ছে মেঝেতে। পুরাণ হাসপাতাল ভবনে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আগের কোয়ার্টারগুলোও অনেক পুরনো। এ ছাড়া হাসপাতালের নিরাপত্তা দেয়াল নেই। কিশোরগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী সালাহ্ উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ভবনগুলোর ৬০ ভাগ কাজ করা হয়েছে, বাকি কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কাজল বিল্ডার্সকে অনেকবার তাগাদা দেওয়া হয়েছে, তাতেও কাজ হয়নি। নিকলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কারার সাইফুল ইসলাম এর মতে,স্থানীয় সাংসদ বেশ কয়েকবার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রাণালয়ে লিখিত অভিযোগ করেন এতে কোন কাজ হয়নি। কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ হবীবুর রহমান জানান, জেলার সবকটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণের কাজ শেষপর্যায়ে রয়েছে; কিন্তু নিকলী হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণে বিলম্ব হওয়ায় ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ থমকে গেছে। বিষয়টি জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় অনেকবার উপস্থাপন করা হয়েছে; ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিত ও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়েকবার অবহিত করা হয়েছে। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। জানি না ঠিকাদারের এতো শক্তির উৎস কোথায়?

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment