স্কুল ইউনিফর্মে চাপাতি হাতে তরুণ | দৈনিক আগামীর সময়

স্কুল ইউনিফর্মে চাপাতি হাতে তরুণ | দৈনিক আগামীর সময়

নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়কে অবস্থান, লাইসেন্স ও কাগজপত্র পরীক্ষার চিত্রটা হঠাৎ পাল্টে গেল। গুজব, সংঘর্ষ, হেলমেটধারী যুবকদের আবির্ভাবের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের জমায়েতেও দেখা গেছে অস্ত্র।

রবিবার দুপুরের পর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় হেলমেট পরা যুবকদের সঙ্গে স্কুল ড্রেস পরা তরুণ, যুবকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।

এর মধ্যে হেলমেটধারীদের বিপরীত দিকে থাজা জমায়েতে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পোশাক পরা এর তরুণকে দেখা যায়, যার হাতে ছিল বড়সড় একটি চাপাতি। ছেলেটি ধাওয়া খেয়ে দৌড়ে আসছিল তাদের অবস্থানের দিকে। এ সময়ই তার হাতে চাপাতিটা দেখা যায়। তবে দৌড়ে জমায়েতের দিকে আসতে আসতে তার ব্যাগে চাপাতিটি ঢুকিয়ে ফেলতে দেখা যায় তাকে।

ছেলেটি কে, আদৌ কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র কি না, সেটি শনাক্ত করা যায়নি। তবে শিক্ষার্থী হিসেবে যে জমায়েত ছিল, সেখানেই অবস্থান ছিল তার।

২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পরদিন থেকে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়ে দাবি জানাতে থাকে।

শুরুতে বিমানবন্দর সড়কে এমইএইচ এলাকায় অবস্থান থাকলেও পরে তা উত্তরা, ফার্মগেট, শাহবাগ, মিরপুর, মিরপুর রোডে ছড়ায়।

শিক্ষার্থীরা টানা অবস্থান ছেড়ে যখন ফিরতে রাজি হচ্ছে না, তখনই এখানে অন্য পক্ষের সুযোগ নেয়ার খবর আসতে থাকে। বছরের শেষ বেলায় এসে স্কুল পোশাক এমনকি পুরনো পোশাক বিক্রি হয়, এমন দোকানে অস্বাভাবিক চাহিদার খবরটি ছিল সন্দেহজনক। এর মধ্যে আবার পরিচয়পত্র তৈরির দোকানেও বাড়তি চাহিদার খবর আসে।

তবে শনিবার জিগাতলায় দিনভর সংঘর্ষের পর ছাত্রদের প্রতিনিধি দলের আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্ালয় ঘুরে আসার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়। ছাত্ররাই জানায় ওসব ছিল গুজব।

এর আগে দুপুরের গুজব ছড়ায় ওই কার্ালয়ে চার জনকে হত্যা করা হয়েছে, ধর্ষণও করা হয়েছে চারজনবে। আর এরপরই শিক্ষার্থীদের জমায়েত থেকে হামলার চেষ্টা হয়। তবে এই হামলা শিক্ষার্থীদের পোশাক পরে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা করেছে, এমন বক্তব্য এসেছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন তুলেছেন, হামলাকারীরা তাদের ব্যাগ থেকে পাথর বের করে ঢিল ছুড়বে কেন। শিক্ষার্থীদের ব্যাগে পাথর থাকার কথা না।

শনিবার দিনভর তুলকালামের পর অবশ্য রবিবার আর ছোটদেরকে রাস্তায় দেখা যায়নি সেভাবে। তবে এবার নামে বড়রা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় নেমেছে। আর ক্ষমতাসীন দলের কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষও হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।

এর মধ্যে শাহবাগ থেকে জিগাতলাগামী মিছিল নিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদেরকে কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এরপরও বিকালে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা দাওয়ার ঘটনা ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন জন ছাত্র এবং বেশ কয়েকজন ফটো সাংবাদিকদেরকে পেটানো হয়েছে। এই হামলা করেছে হেলমেটধারী যুবকরাই। ধারণা করা হচ্ছে তারা ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment