দোহারে নববধূ শিখা হত্যার প্রধান আসামী আটক। স্বজনদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

 দোহার(ঢাকা)প্রতিনিধি:

ঢাকার দোহার উপজেলার শাইনপুকুর এলাকা থেকে দোহারের চাঞ্চল্যকর নববধূ শিখা হত্যার মূল আসামী রুহুল আমীনকে গ্রেপ্তার করেছে দোহার থানা পুলিশ। গতকাল রোববার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে তাকে আটক করে পুলিশ।হত্যা মামলার পাঁচ আসামীর মধ্যে অন্যতম দুই প্রধান আসামীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে দোহার থানা পুলিশ।অন্যরা হলেন নিহত শিখার শশুর মনোয়ার হোসেন খান(৫৯)দেবর মারুফ খান(২৭),ননদের স্বামী সাইদুর রহমান। দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান,ঘটনার পর থেকেই ঘাতক স্বামী রুহুল আমীনের মোবাইল ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি শিখা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকারী তার স্বামী রুহুল আমীনের অবস্থান চট্রগামে।সেই অবস্থান থেকে নজরে রেখে তাকে রোববার খুব ভোরে দোহার ও শ্রীনগরের সীমান্তবর্তি শাইনপুকুর এলাকা থেকে আমরা আটক করি।হত্যার ঘটনা ১৬১ ধারায় পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে বলে জানান।বাকি আসামীরা শীঘ্রই আটক হবে জানান তিনি।সোমবার সকালে ঘাতক স্বামী রুহুল আমীনকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। এদিকে নববধূ শিখা হত্যাকারী রুহুল আমীন গ্রেপ্তার হওয়ার খবরে তার গ্রামের বাড়ি দোহার খালপাড়ের এলাকাবাসি ও তার স্বজনরা ফাঁসির দাবিতে জয়পাড়া রতন চত্তরে মানববন্ধন করেছে। নিহত শিখার পরিবার সুত্রে জানা যায়,গত ৩ আগষ্ট শুক্রবার উপজেলার উত্তর জয়পাড়া মিয়াপাড়া কাজি বাড়ি মাঠ সংলগ্ন আনোয়ার হোসেনের ছেলে রুহুল আমিনের সাথে নববধু শিখা আক্তারের(১৮)বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।বিয়েতে শিখার বাবা-মা মেয়েকে উপহার সরুপ সেগুন কাঠের তৈরী বক্স খাট,ড্রেসিং ও ডাইনিং টেবিল,কাঠের শোকেস,আলমারিয়া,সোপাসেট ও প্রায় দশ ভরি ওজনের সোনার বিভিন্ন অলংকার দেন মেয়ের সাথে।একদিন পর জামাই রুহুল আমিন ও মেয়ে শিখা বিয়ে বাড়িতে প্রথা অনুযায়ী বাবার বাড়িতে আসে।এ সময়ে জামাই রুহুল আমিনের সাথে শিখার কাছে ফোনকল আসা নিয়ে ঝগড়া হলেও বিষয়টি নিয়ে দুজনের মধ্যে আপোষ-মিমাংসা হয়ে যায় এবং তারা হাসিমুখে বাড়ি থেকে বিদায় নেন বলে জানান শিখার বাবা সিরাজ মিয়া ও মা রুনু আকতার।এ ঘটনার একদিন পড়ে সোমবার সকালে রুনু বেগম ও তার আপন তিন বোন নিয়ে নব আত্বীয় মেয়ের জামাই বাড়িতে গেলে মেয়ে শিখাকে দেখতে না পেয়ে শিখার শাশুরী আসমা বেগমকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন আপনার মেয়ের সাথে অন্য ছেলের প্রেম ছিলো,সে রাত্রে কোন এক সময়ে কাউকে না বলে পরকিয়ার জেরে পালিয়ে গেছে।এ সংবাদে রুনু বেগম তার নিজ বাড়িতে এসে ঘটনাটি সবাইকে বলে পুনরায় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মেয়ের শশুরবাড়িতে যায়।সেখানে গেলে মেয়ের শশুর-শাশুরী,দেবর ও ননদ সবাই একই কথা বললে মনে সন্দেহ হলে বাড়ির পিছনে ঝোপ- জঙ্গলে খোজাঁখুজি করতে থাকি।এ সময়ে বাড়ির পশ্চিমে ১০০গজ দুরে একটি পুকুর চোখে পড়ে।সেখানে গেলে পুকুরের সমস্ত কচুরিপানা একজায়গায় পালা দিয়ে রাখা দেখতে পাই।পুকুরের কচুরিপানা পালা দেওয়া কেন জানতে চাইলে মেয়ের জামাই রুহুল আমিন ও তার মা আসমা বেগম জানান,মাছ ধরা হবে বলে সব কচুরিপানা এক জায়গায় স্তুপ করে রাখা হয়েছে।তাদের আচার ও আচরনে সন্দেহ হলে আমি ও আমার ছোট বোন তাদের বাধাঁ উপেক্ষা করে বাশেঁর কঞ্চি দিয়ে কচুরিপানা সরালে আমার মেয়ের ওড়না দেখতে পেয়ে ভালোভাবে কচুরিপানা সরালে আমার মেয়েকে গলায় কলসি বাধাঁ অবস্থায় মৃত দেখতে পাই এবং তাৎক্ষনিকভাবে দোহার থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানাই। অপরদিকে এ ঘটনায় পুলিশ বাথরুমের ভিতর থেকে রুহুল আমিনের মা আসমা বেগম,বোন মারিয়া আক্তার,ভাই মারুফ খানের স্ত্রী মোহনা ও চাচা খোকন খানকে আটক করে। সোমবার রাত্রে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের পর আসামী রুহুল আমিনের আটক চাচা,বোন ও ভাবীকে ছেড়ে দেন।আটক রুহুল আমিনের মা আসমা বেগমসহ মোট পাচঁজনকে আসামী করে মামলা গ্রহন করে পুলিশ। দোহার,ঢাকা।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment