আজ পবিত্র হজ : লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক

আজ পবিত্র হজ : লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক

হাজার হাজার নয়, লাখ লাখ মানুষ। বর্ণ-গোত্র, সাদা-কালোয় ভেদাভেদ নেই। আছে ভাষার পার্থক্য; তাতেও সমস্যা নেই। কারণ, সবাই আল্লাহর অতিথি। তাদের মুখে তারই মহান বাণী। দমে দমে সবাই আল্লাহকে ডাকছেন। বলছেন, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্‌দা ওয়ান্নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাকা।’ আজ সোমবার পবিত্র হজ। এদিনই হজের সবচেয়ে বড় আনুষ্ঠানিকতা হবে। হাজিরা সকালে মিনা থেকে যাবেন ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে। সেখানে সারাদিন অবস্থান করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত-বন্দেগি করবেন। সাদা ইহরাম বাঁধা অবস্থায় মুসল্লিদের পদচারণায় আরাফাতের ময়দান পরিণত হবে শুভ্রতার সমুদ্রে। খবর এএফপি, সৌদি গেজেট, আরব টাইমস ও বিবিসির।

‘হজ’ শব্দের অর্থ ‘ইচ্ছা করা’। এটি ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। সৌদি হজ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্বের ১৫০টি দেশের ২০ লাখেরও বেশি মুসল্লি এবার হজ পালন করছেন। তাদের মধ্যে এক লাখ ২৬ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন।

গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, হজ পালনের জন্য মক্কায় আসা মুসল্লিরা গত শুক্রবার মসজিদুল হারামে (কাবা শরিফ) জুমার নামাজ আদায় করেন। সৌদিতে ৭ জিলহজ, অর্থাৎ গত শনিবার থেকেই তারা হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন, তা শেষ হবে ১২ তারিখে। ওই দিন তারা মক্কা থেকে হেঁটে, বাসে করে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে মিনার উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে তারা দু’দিন অবস্থান করেন। সেখান থেকে তালবিয়া পাঠ করে মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়ে পাপমুক্তির আকুল বাসনায় হাজিরা আজ সোমবার ফজরের নামাজের পর আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে দাঁড়িয়েই সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তার বিদায়ী হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি ইসলামের পূর্ণতা দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে গেছেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে থেকে হাজিরা ইবাদত-বন্দেগি করবেন। মসজিদে নামিরাহ থেকে হজের খুতবা পাঠ করা হবে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আরাফাতের ময়দানে হাজিদের অবস্থানের দৃশ্য টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এর পর তারা যাবেন মুজদালিফা।

১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে মিনায় ফিরবেন হাজিরা। এর পর জামারায় পাথর নিক্ষেপের জন্য রওনা দেবেন। সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়ার আগেই জামারাতুল আকাবায় (বড় শয়তান) সাতটি পাথর নিক্ষেপ করা হবে। পাথর নিক্ষেপের পর আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তারা পশু কোরবানি করবেন। ১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে সূর্য হেলে পড়ার পর প্রতিদিন ছোট, মধ্য ও বড় জামারায় পাথর নিক্ষেপ করে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের আগে হাজিরা মিনা ত্যাগ করবেন।

এদিকে, মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে হজ পালনের জন্য সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে মক্কা, মদিনা, মিনা, আরাফাত ময়দান, মুজদালিফা ও এর আশপাশের এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে এক লাখের বেশি নিরাপত্তাকর্মী। কাজ করছেন ২৬ হাজার চিকিৎসা কর্মকর্তা ও চার হাজার পাঁচশ’ স্বেচ্ছাসেবী।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment