স্কুল -কলেজে কোচিং

বাংলাদেশের প্রায় সকল স্কুল-কলেজে কোচিং বা প্রাইভেট পড়ানো হয়।আমিও এর বিপক্ষে নই।কোচিং বা প্রাইভেটের অবশ্যই দরকার আছে।সবাই তো আর শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক স্যারের মত মেধাবী হয়ে জন্মায় না।তাঁরা তো হাজারে বা লাখে একজন থাকেন।একটি ক্লাসে একজন শিক্ষক যতটুকু সময় পান তাতে পাঠ পুরোপুরি শেষ করতে পারেন না।হাজিরা টানা ,কে গত ক্লাসে আসেনি তার খোঁজ নেয়া,বাড়ির কাজ থাকলে তা দেখা,এগুলো শেষ করে খুব সামান্য সময় পান একজন শিক্ষক পড়ানোর জন্য,যাতে ভালো ভাবে পাঠ শেষ করে দেয়া সম্ভব হয়না।কিংবা যদিও বা তিনি অনেক ভালোভাবে পাঠ শেষ করে দেন কিছু শিক্ষার্থী সেটাকে মনে রাখতে পারলেও বেশির ভাগই তা ভুলে যায় ।পরে সে বিষয়গুলো আবার শেখার প্রয়োজন হয় ।শিক্ষক যদিও ক্লাসের বাহিরে কোনো টাকার বিনিময় ছাড়া অনেক সময় দেন যারা না বুঝে তাদের জন্য।তারপরও কোথাও ঘাটতি থেকে যায় কিছু জানার ,কিছু বুঝার ক্ষেত্রে।আর এ তাগাদা থেকেই দরকার হয় কোচিং করার কিংবা প্রাইভেট পড়ার।
এতে একদিকে শিক্ষার্থী যে রকম ভাবে উপকৃত হচ্ছে অন্যদিকে শিক্ষকের পকেটেও বাড়তি কিছু পয়সা আসছে।তবে বর্তমানে এক শ্রেণির শিক্ষক যাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল মানুষ গড়া কিন্তু তারা এখন সেটি না করে ব্যবসায়ীক মন মানসিকতা পোষণ করছেন।তারা এখন শিক্ষার্থীদের কাাঁচামাল,অভিভাবক কে কাস্টমার এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মনে করেন। আর তাদের মত কিছু শিক্ষক নামধারীদের জন্য আজ শিক্ষকদের মান ক্ষুন্ন হচ্ছে,শিক্ষার মান খুন্ন হচ্ছে,শিক্ষার্থীরাও ক্লাসে  প্রতিদিন প্রাইভেট বা কোচিং এর জন্য শিক্ষকরা চাপ প্রয়োগ করায় স্কুলে উপস্থিত হওয়া এবং পড়াশুনার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।আবার কোনো কোনো শিক্ষক যে সকল শিক্ষার্থী তাদের কাছে প্রাইভেট বা কোচিং করে না ,তাদের কে পরীক্ষায় ফেল করাচ্ছেন ,ভালো নম্বর দিচ্ছেন না। একধরনের হত্যা করছেন।যার ফলে ভালোর চেয়ে আজ মন্দ ই বেশি হচ্ছে।সাম্প্রতিক সরিষাবাড়ী উপজেলার বাউসি বাঙালি স্কুল আ্যান্ড কলেজের প্রাইভেট না পড়ায় ৪২ শিক্ষার্থীকে ফেল করানোর বিষয়টি উল্লেখ্যযোগ্য।
  আবার অন্যদিকে অনেক শিক্ষক শিক্ষাথীদের কম টাকায়,অর্থনৈতিক সমস্যাগ্রস্তদের বিনামূল্যে পড়ান ,সবসময় ভালো কিছু করতে উৎসাহিত করেন।তাই আমি বলব যেহেতু কোচিং এর প্রয়োজন আছে তাই উচিত হবে শুধুমাত্র অসাধূ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।আর কোথাও এ ধরণের অসাধু শিক্ষকদের দ্বারা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলঙ্কিত হলে কিংবা কোনো শিক্ষার্থী অন্যায় আচরণের শিকার হলে শিক্ষা অফিসারদের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।পত্র পত্রিকা,রেড়িও, টেলিভিশনের মাধ্যমেও বিষয় টিকে তুলে ধরতে হবে।মাঝে মধ্যে সেমিনারের আয়োজন করে বিষয়টিকে তুলে ধরে অসাধু শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা তুলে ধরতে হবে,শিক্ষার আসল উদ্যেশ্য এবং শিক্ষক -শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত এ বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment