প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান, স্কুলছাত্রীকে কোপাল বখাটে

প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান, স্কুলছাত্রীকে কোপাল বখাটে

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় স্কুলছাত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়েছে জুয়েল আহমদ (২০) নামে এক বখাটে। আহত স্কুলছাত্রী মায়মুনা জান্নাত সামিরা (১৪) উপজেলার আল-হেরা ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। শনিবার দুপুর আড়াইটায় উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের মীরশংকর এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয়, এলাকাবাসী ঘটনাস্থল থেকে বখাটে জুয়েলকে আটক করে গণধোলাই দেয়। তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি শান্ত করতে উপস্থিত হন স্থানীয় ভূকশিমইল ইউপির চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির। খবর পেয়ে কুলাউড়া থানার এসআই হারুন আল রশিদ ঘটনাস্থলে গিয়ে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন।

এলাকাবাসী ও পরিবারের স্বজনরা সামিরাকে গুরুতর আহত অবস্থায় কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক জাকির হোসেন তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

এ বিষয়ে আহত স্কুলছাত্রী ছামিরার মা সাহারা বেগম বাদী হয়ে জুয়েল আহমদকে আসামী করে কুলাউড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ছামিরা স্কুলে যাওয়া আসার সময় প্রায়ই মীরশংকর গ্রামের বকুল মিয়ার ছেলে জুয়েল আহমদ তার গতিরোধ করত এবং প্রেমের প্রস্তাব দিত। সর্বশেষ আজ শনিবার দুপুর আড়াইটায় সামিরা ও তার ছোট বোন মনিরা স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় মীরশংকর এলাকায় অপেক্ষমাণ জুয়েল তাকে প্রেম নিবেদন করে। এতে রাজি না হলে সে তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে সামিরার মাথায়, হাতে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। বিগত ৩ বছর পূর্বেও স্থানীয় সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় সামিরাকে একইভাবে উত্ত্যক্ত করত একই স্কুলের ছাত্র জুয়েল। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে সালিসি বৈঠক করলে জুয়েলকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তখন জুয়েল মুচলেখা দিয়ে রেহাই পায়। এরপর মেয়েটির নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তার বাবা-মা ওই স্কুল থেকে তাকে বদলি করে কুলাউড়া আল হেরা ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি করান।

স্কুলছাত্রী সামিরার মা সাহারা বেগম আহাজারি করে কালের কণ্ঠকে বলেন, জুয়েল আমার বড় মেয়েকে সব সময় রাস্তা-ঘাটে উত্ত্যক্ত করত। স্থানীয় মেম্বার বিষয়টি জানতেন। আমার স্বামী প্রবাসে থাকেন। আজ আমার মেয়ের জীবন চরম সংকটে। আমি আমার মেয়েকে হত্যারচেষ্টাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

আল-হেরা ক্যাডেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মাশুক কালের কণ্ঠকে বলেন, মেয়েটি অত্যন্ত সহজ-সরল। পড়ালেখায় বেশ ভালো। বখাটে জুয়েলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান কালের কণ্ঠকে বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। আসামি জুয়েল থানাহাজতে আছে। আগামীকাল রবিবার মৌলভীবাজার জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment