রিকশাচালক থেকে ইয়াবা সম্রাট, দুই রাজপ্রাসাদ জব্দ

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় থাকা টেকনাফের আলোচিত ইয়াবা ব্যবসায়ী নুরুল হক ভুট্টোর দুটি দোতলা বাড়িসহ প্রায় ৩১ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করেছে পুলিশ।

আজ শনিবার বেলা একটা থেকে তিনটা পর্যন্ত টেকনাফ থানা–পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভুট্টো ও তাঁর পরিবারের স্থায়ী-অস্থায়ী সম্পদসমূহ জব্দ করেন।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ। ভবন দুটি জব্দের সময় বাড়িতে থাকা নুরুল হক ভুট্টো ও তাঁর ভাই নুর মোহাম্মদের পরিবারকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

যাদের বাড়ি ক্রোক করা হয়েছে, তারা হলেন টেকনাফের নাজিরপাড়ার এজাহার মিয়া (৭০) এবং তার দুই ছেলে নুরুল হক ভুট্টো (৩২) ও নূর মোহাম্মদ ওরফে মংগ্রী (৩৫)। এর মধ্যে দুই মাস আগে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নুর মোহাম্মদ নিহত হয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শনিবার সকাল থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত টেকনাফের নাজিরপাড়া এলাকায় ইয়াবা ব্যবসায়ীদের রাজপ্রসাদের মতো বাড়িগুলোতে অভিযান চালায়। এসময় ওই তিন ইয়াবা ব্যবসায়ীর দোতলা দুই বাড়ি ক্রোক করে পুলিশ। বাড়িতে থাকা লোকজনকে বের করে দিয়ে বাড়িগুলো পুলিশ নিজেদের জিম্মায় নেয়।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন, এই প্রথম আদালতের নির্দেশে শনিবার সকালে তিন ইয়াবা সম্রাটের বাড়ি ক্রোক করা হয়েছে। এই বাড়িগুলো এখন পুলিশের হেফাজতে থাকবে। আদালতের নির্দেশে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। যে বাড়িগুলো ক্রোক করা হয়েছে তারা এক সময় রিকশা ও ভ্যানচালক ছিলেন। এখন তারা সবাই কোটি টাকার মালিক।

তিনি বলেন, সীমান্তে লবণ চাষি, দিন মজুর, রিকশা ও ভ্যান চালকরা মরণ নেশা ইয়াবা বেচাকেনা করে টেকনাফে আলিশান বাড়ি বানিয়েছে। সারাদেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হলে এসব বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। আবার অনেকে গ্রেপ্তার ও বন্দুকযদ্ধে নিহত হয়েছে। ইয়াবার টাকায় যারা অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছে, পর্যায়ক্রমে তাদেরও একই পরিণতি হবে।

ওসি আরও বলেন, প্রতি বছরের ১৪ মে ক্রোক করা সম্পদের যাবতীয় আয়-ব্যয় সংক্রান্ত সার্বিক হিসাব আদালতে উপস্থাপন করবে পুলিশ। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির দায়ের করা মামলায় এই আদেশ দেন আদালত।

গত ২৩ মে এই রায় দেন কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ খোন্দকার হাসান মো. ফিরোজ। এই প্রথম মাদক-সংক্রান্ত ঘটনায় মানি লন্ডারিং আইনে দায়ের করা মামলায় আদালত এই ধরনের আদেশ দেন।

অভিযান পরিচালনাকারী দলে থাকা ওসি (তদন্ত) এবিএস দোহা তিনটি বাড়ি ক্রোকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইয়াবার টাকায় টেকনাফে অনেকে রাজপ্রসাদের মতো বাড়ি বানিয়েছেন। এই প্রথম কোনো ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বাড়িসহ সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন