দোহারে নীতিমালা অনুসরন না করেই প্রভাবশালীদের জাহাজ ডকইয়ার্ড চলছে

মাহবুবুর রহমান টিপুৃ,দোহার(ঢাকা) প্রতিনিধি:

দোহার উপজেলার নারিশা খাদ্য গুদাম সংলগ্ন ও মুকসুদপুর ইউনিয়নের পূর্বচর পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকায় প্রভাবশালীদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জাহাজ শিল্পের নীতিমালা অনুসরন না করেই গড়ে তোলা হয়েছে জাহাজ ডকইয়ার্ড শিল্প।এই ডকইয়ার্ডে প্রতি বছর তৈরী হচ্ছে ৩০/৩৫ টি দেড় থেকে দুই হাজার টন ধারন ক্ষমতা সম্পূর্ন মালবাহী জাহাজ।


নদী তীরবর্তী খালি জায়গায় প্রতিটা জাহাজ তৈরীতে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছে ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,উপজেলার নারিশা খাদ্য গুদাম সংলগ্ন নদী তীরবর্তি খালি জায়গায় ও মুকসুদপুর ইউনিয়নের পূর্বচর এলাকায় পদ্মা নদী তীরবর্তী খালি জায়গায় প্রভাবশালীদের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এক বৃহৎ জাহাজ শিল্পের ডকইয়ার্ড চোখে পড়ে।সেখানে পল্লী বিদ্যুতের একাধিক থ্রী ফেইস সংযোগ বসিয়ে এলোমেলোভাবে বিদ্যুৎ লাইন নিয়ে প্রায় ত্রিশটি দেড় থেকে দুই হাজার টন ধারন ক্ষমতা সম্পূর্ন মালবাহী জাহাজ নির্মান করছেন ওয়েলডার শ্রমিকরা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ওয়েলডার শ্রমিক প্রতিবেদকের কাছে জানান,দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ওয়েলডার শ্রমিকদের স্বল্প মজুরীতে কন্টাকড করে এখানে আনা হয়েছে।তারা দিন-রাত পরিশ্রম করে সাধারনত এক বছরের মধ্যে দেড় থেকে দুই হাজার টন ধারন ক্ষমতা সম্পূর্ন চার-পাচঁতলা মালবাহী জাহাজ তৈরী করতে পারেন।শ্রমিকদের কাজের সময়ে দেখা যায়,তাদের কোন নিরাপত্তা পোশাক তারা পড়েন না কিংবা ঠিকাদার মারফত সেফটি পোশাক পান না। এছাড়াও যত্রতত্রভাবে বিদ্যুৎ সংযোগের তার যেখানে সেখানে পড়ে রয়েছে।এতে যে কোন সময়ে ঘটতে পারে বড় কোন দূর্ঘটনা। স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে তারা জানান,ঢাকা-১(দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনের এমপি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্পখাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান স্যারের একান্ত প্রচেষ্টায় মাঝিরচর হয়ে মুকসুদপুরের শাইনপুকুর পর্যন্ত নদী ভাঙ্গন রোধে নদী শাসনের কাজ চলছে।সেনাবাহিনী থেকে এসব এলাকায় সকল জনসাধারনের কর্মকান্ড বন্ধ রাখার বলা হয়েছে।এগুলো ছাড়াই কিভাবে জাহাজ ডকইয়ার্ড চলছে এবং পল্লী বিদ্যুতের একাধিক বানিজ্যিক সংযোগ দ্বারা জাহাজ ডকইয়ার্ড শিল্প চলছে বিষয়টি আমরা মেনে নিতে পারছি না।সরকারিভাবে সুনজর দেওয়ার জন্য দাবী সকলের।


শ্রীনগর ও মাওয়া নিবাসী দুই জাহাজ নির্মান মালিকের সাথে কথা বলে জানা যায়,প্রতিটা জাহাজ তৈরীতে খালি জায়গার মাসিক ভাড়া হিসাবে গুনতে হচ্ছে ষাট হাজার টাকা এবং জায়গার ভাড়া এ্যাডভান্স হিসাবে প্রতিটা জাহাজ প্রতি তিন থেকে পাচঁ লক্ষ টাকা নিচ্ছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটরা।কারা এই সিন্ডিকেট জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাহাজ নির্মানকারী জানান তারা জমির মালিক।এর বেশী কিছু জানাতে নারাজ প্রতিবেদকের কাছে।
এ বিষয়ে মুকসুদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ হান্নান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,গত দুই বছরের আমার দুই আত্বীয় লন্ডন প্রবাসী দুই জাহাজ নির্মান করেছেন।এছাড়া আমার নামে বেনামে কোন জাহাজ তৈরী হয় নাই।
এ বিষয়ে দোহার পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম প্রকৌশলী মো.খুরশীদ আলম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন পল্লী বিদ্যুতের পাচঁটি থ্রী ফেইস সংযোগ রয়েছে।তাছাড়া এই সংযোগের অনুমোদন গত তিন-চার বছর পূর্বে ঢাকার আরওবি হেডকোয়াটার থেকে অনুমোদন নেওয়া।এখানে আমার কিছু করার নাই।


এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবা জানান,বছরে প্রায় ত্রিশটি ছোট-বড় জাহাজ নির্মান হচ্ছে আমার জানা নেই।তবে এই জাহাজ ডকইয়ার্ড থেকে সরকার কোন রাজস্ব পাচ্ছে না।বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আলমগীর হোসেন কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার জানা মতে সরকারি কোন অনুমোদন নাই।তাছাড়া জাহাজ ডকইয়ার্ড নির্মানে সরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ন অধিদপ্তরের অনুমোদন লাগে।ঢাকা-১(দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনের এমপি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্পখাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান স্যারের একান্ত প্রচেষ্টায় মাঝিরচর হয়ে মুকসুদপুরের শাইনপুকুর পর্যন্ত নদী ভাঙ্গন রোধে নদী শাসনের কাজ চলছে। সেনাবাহিনী থেকে এসব এলাকায় সকল জনসাধারনের কর্মকান্ড বন্ধ রাখার বলা হয়েছে।এগুলো ছাড়াই কিভাবে জাহাজ ডকইয়ার্ড হলো এবং পল্লী বিদ্যুৎ কিভাবে বানিজ্যিক সংযোগ প্রদান করলো? বিষয়টি আমি না জেনে কোন মন্তব্য করতে পারছি না।

আপনি আরও পড়তে পারেন