আস্থার প্রতিদান পেলেন ইশরাক

ঢাকার রাজনীতির অন্যতম প্রভাবশালী ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ মেয়র সাদেক হোসেন খোকার দূর্গ ছিল পুরান ঢাকার ওয়ারী, গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর, কোতোয়ালি ও বংশালের অংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-৬ আসন।

আলোচিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী করা হয়েছিল খোকার ছেলে ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে। মনোনয়ন পেয়ে মাঠে নেমেও গিয়েছিলেন ইশরাক। কিন্তু আসনটি নিয়ে বেকে বসেছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

ওই সময় ঐক্যফ্রন্ট সূত্রে জানা যায়, এই আসনে জোটের মনোনয়ন প্রত্যাশি ছিলেন গণফোরামের তৎকালীন নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী। কিন্তু খোকার ছেলে মনোনয়ন পাওয়ায় বেকে বসেন তিনি। শঙ্কায় পড়ে যায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিয়েই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা জানিয়েছিলেন, এই আসনে মনোনয়ন না পেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ভেঙে ফেলার হুমকিও দিয়েছিলেন সুব্রত চৌধুরী। নানা চেষ্টা করেও তাকে বোঝানো যায়নি। শেষপর্যন্ত জোট রক্ষার্থে হস্তক্ষেপ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার আহবানেই সাড়া দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলেন ইশরাক হোসেন।

মনোনয়ন প্রত্যাহার করে সাংবাদিকদের ইশরাক বলেছিলেন, ‘আমার নেতা দেশনায়ক তারেক রহমান জোটের স্বার্থে আমাকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বলেছেন। তাই আমি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি।’

শুধু প্রত্যাহারই নন সুব্রত চৌধুরীর পক্ষে কাজও করেন ইশরাক। সুব্রত চৌধুরীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে জোরালো ভূমিকা পালন করে নজরে আসেন তরুণ এই বিএনপি নেতা। নজরে আসেন তারেক রহমানেও।

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, এরপরই সাদেক হোসেন খোকার এই উত্তরসূরিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। স্বয়ং তারেক রহমানের এই পূর্বাভাসে দক্ষিণ সিটিতে অনেক হেভিওয়েট প্রার্থীও বিএনপির মনোনয়ন ফরম তুলেননি। বলা হয় যায় দক্ষিণে প্রার্থী প্রায় চূড়ান্তই ছিল।

আস্থার এই প্রতিদান পাওয়ার পরই ইশরাক হোসেন বিএনপি, খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং নেতা-কর্মী-সমর্থকদের প্রতি ধন্যবাদ জানান।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমাকে এতো অল্প বয়সে এতবড় একটি দায়িত্ব দেয়ার জন্য মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমরা যেন ওনার (তারেক রহমান) দেয়া দায়িত্ব পালন করতে পারি।’

তিনি বলেন, ‘দেশে একদলীয় যে শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছে তা মুক্তিযুদ্ধের পরিপন্থী। এ সংকট থেকে উত্তরণের জন্য নবীন ও প্রবীণ উভয়ের সমন্বয় ঘটাতে হবে। এই আন্দোলন সংগ্রামের জন্য আমি যেন অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারি। এ কারণে দেশবাসীর কাছে দোয়া চাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোটের অধিকার ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের অংশ হিসেবে দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে আমরা জনগণের কাছে পৌঁছাব।’

আপনি আরও পড়তে পারেন