দোহারে নিয়মনীতি ছাড়াই চলছে(এস.বি.আই) ইটের ভাটা

 মহিউল ইসলাম পলাশ দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি:

ঢাকার দোহার উপজেলার নারিশা ইউনিয়নের উত্তর শিমুলিয়া গ্রামের ফসলি জমি ও ঘনবসতি এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে, সরকারের নীতিমালাকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি দেখিয়ে গড়ে তুলেছে পরিবেশ দূষণের ঘাতক (এস. বি. আই) নামের ইটের ভাটা। যাহার আদলে পরিবেশ, ফসলী জমি, রাস্তাঘাট, গাছপালা, ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ জনজীবনে নেমে এসেছে দূর্দশা। এই ইট ভাটার কালো ধোয়া বাতাসের সাথে মিশে পরিবেশের উপাদান বায়ুকে করছে দূষিত। যাহার ফলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে পৃথিবী হচ্ছে উত্তপ্ত। যার দরুন দেখা দিচ্ছে খড়া, অনাবৃষ্টি ও ভয়াবহ বন্যা। এছাড়া ইট ভাটার বিকট আওয়াজে শব্দ দূষণ, ধুলা বালিতে বায়ু দূষন, আশে পাশের ফসলী জমির মাটি দূষণ, গাছ পালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ গাছের ফলন কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। উত্তর শিমুলিয়ার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, এই ভাটার কারনে আমাদের বাড়িতে বসবাস করাই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সারাদিন রাত মেশিন ও গাড়ির বিকট আওয়াজ আর ধুলাবালির কারণে আমাদের ঘরবাড়ি, গাছপালা, রাস্তাঘাট অন্ধকার হয়ে আছে। আম গাছের মুকুল ঝরে পরছে, নারিকেল গাছের নারিকেল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ভয়ে আমরা কিছু বলতেও পারছি না। এই ভাটাটি এখান থেকে সরিয়ে নিলে ভাল হতো। সড়েজমিনে গিয়ে দেখা যায় এ ভাটার কাচামাল হিসেবে ব্যবহারিত হচ্ছে ফসলি জমির উপরের উর্বর মাটির অংশ বা টপ সয়েল। এতে কৃষকরা হারাচ্ছে ফসলি জমি এবং কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন। এছাড়া ইট ভাটায় চলছে শিশু শ্রম ও শ্রমিক নির্যাতনের মত নির্মম ঘটনা। আবার ভাটার কাচামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহারিত হচ্ছে মাহেন্দ্র। যার ফলে অচিরেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত রাস্তা ঘাট। এসব মাহেন্দ্রার চালকদের নাই কোন প্রকার ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং অনেক মাহেন্দ্র চালকের বয়স ১৮ এর নিচে। ফলশ্রুতিতে ঘনঘন ঘটে চলেছে মারাত্মক দূর্ঘটনা। এছাড়া বিকট শব্দ ও ধুলাবালির কারনে মানুষের নানা ধরনের ফুসফুসীয় রোগ দেখা দিচ্ছে। এ বিষয়ে (এস. বি. আই) অর্থাৎ শিমুলিয়া ব্রিক ইন্ডাস্ট্রিস এর কর্ণধার রিয়াজুল খালাসীর সাথে মোঠফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার মোঠফোনটি বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী ইট ভাটা গড়ে উঠার কথা নদীর পারে, জনবসতি নেই এবং আশে পাশে ফসলি জমি নেই এমন স্থানে। কিন্তু এই প্রভাবশালী ইট ভাটার মালিক নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র, ফায়ার স্টেশনের ছাড়পত্র, লাইসেন্স এবং ইট ভাটার ড্রয়িং বা স্টাকচার ছাড়াই দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে এই (এস. বি. আই) ইটের ভাটা। প্রশাসন নিরব ভূমিকায়। হতাশয় এলাকাবাসী।

আপনি আরও পড়তে পারেন