করোনায় অবরুদ্ধ ক্রীড়া সাংবাদিকতা। মাঠে খেলা নেই, আছে সংক্রমণ শঙ্কা ও মুত্যু ঝুঁকি। সঙ্গে যোগ হয়েছে চাকরি হারানোর আতঙ্ক। এর মধ্যেই মোকাবিলা করতে হচ্ছে খবর সংগ্রহ ও উপস্থাপনার চ্যালেঞ্জ। দর্শক আর পাঠকদের প্রতি দায়বদ্ধতা আর পেশার প্রতি নিষ্ঠা থেকেই প্রতিনিয়ত সবশেষ খবরটি পরিবশেন করছেন ক্রীড়া সাংবাদিকরা।
সহকর্মী হারানো তীব্রতর শোকেও তারা অবিচল। ২ জুলাই। বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিকতা দিবস।
এ এক অস্থির সময়। স্তব্ধ, অবরুদ্ধ বিশ্ব। টালমাটাল বিশ্বের ক্রীড়াঙ্গনও। ফলে সংবাদ খুঁজতে হয়রান সব দেশের ক্রীড়া সাংবাদিকরা।
স্মৃতির ঝাঁপি উপুড় করে দর্শক আর পাঠকের সঙ্গে সেতু রচনার কঠিন কাজটা করতে হয়েছে দিনের পর দিন।
এর মাঝে কিছুটা হলেও সুবাতাস বইয়েছে ইউরোপের ফুটবল। শুরু বুন্দেসলিগা দিয়ে। এরপর অন্যরাও কাফেলায় হয়েছে সামিল স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
বাংলাদেশে সে ঢেউ দর্শকদের মধ্যে আছড়ে পড়লেও মাঠে কোনো প্রতিফলন মেলেনি। ফলে হ্যাপেনিং সংকটের মধ্যেই কাজ করে যেতে হচ্ছে ক্রীড়া সাংবাদিকদের।
কাজের গণ্ডি সীমাবদ্ধ হলেও সম্মুখ সমর থেকে সরে দাঁড়ানোর অবকাশ মিলছে না। এরই মধ্যে খবর হচ্ছেন আক্রান্ত সাথীরা। কখনো শিরোনাম হচ্ছেন করোনার পায়ে জীবন সঁপে দিয়ে। আশা-নিরাশার দোলাচলে বন্ধু-সহকর্মীদের সুস্থতার সংবাদ হচ্ছে স্বস্তির উপাচার।
করোনার থাবা মারাত্মকভাবে বেসামাল করে দিচ্ছে গণমাধ্যমকে। বেশিরভাগ টেলিভিশনগুলোতে বন্ধ হয়েছে স্পোর্টস শো। খবরের কাগজে কমেছে পাতার সংখ্যা।
সময় যত যাচ্ছে ততই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে ক্রীড়া সাংবাদিকদের পেশাদার জীবন।
তবে করোনাকাল কিছু শিখিয়েছেও। ভার্চুয়াল কর্মযজ্ঞে ইতিমধ্যেই অভ্যস্ত করে তুলেছে অন্যদের মতো ক্রীড়া সাংবাদিকদেরও। জীবনসংগ্রামে টিকে থাকার লড়াইয়ে তারাও প্রতিনিয়ত দেখিয়ে চলেছেন তাদের মুন্সিয়ানা।
খেলাহীন দেশে খেলোয়াড়দের সঙ্গে সমান কষ্টের ভাগিদার সংবাদকর্মীরাও। সংকট থেকেই তো আসে দারুণ কিছু। প্রতিবন্ধকতা নতুন দিশার সন্ধান দেয়। পেশাদারিত্বের পরীক্ষায় বারংবার উত্তীর্ণ হওয়া ক্রীড়া সাংবাদিকরা কোভিডকালের এই হার্ডলও ঠিকঠাক উৎরে যাবে। কিন্তু আক্ষেপ একটাই কোনোদিন আর সঙ্গী হবেন না কতিপয় সুহৃদ। বিশ্ব ক্রীড়া সাংবাদিক দিবসে তাদের জন্য আমাদের অমলিন ভালোবাসা আর চির কল্যাণের কামনা।