আমিরাতের উদ্দেশে প্রথমবার উড়ল ইসরাইলি উড়োজাহাজ

সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে তেল আবিব ত্যাগ করেছে ইসরাইল এবং যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। প্রথমবারের মতো দেশ দুটির মধ্যে কমার্শিয়াল ফ্লাইট চালু হলো। তৃপক্ষীয় বৈঠকে আমিরত-ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিকের চুক্তির শেষ পর্যায়ের আলোচনার কথা রয়েছে।

সোমবার (৩১ আগস্ট) ইসরাইলি পতাকাবাহিনী বিমানটি তেল আবিব থেকে উড্ডয়ন করেছে। গন্তব্য আমিরাতের রাজধানী দোহা। ফ্লাইটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগীদের সঙ্গে রয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বিনইয়ামিন নেতানিয়াহু।

রোববার (৩০ আগস্ট) সৌদি আরবের আকাশ পথ ব্যবহারে ইসরাইলকে অনুমতি দেয় রিয়াদ। এর আগে রিয়াদের আকাশ পথ ব্যবহারের জন্য সৌদি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী। মার্কিন এবং ইসরাইলি প্রতিনিধিদের বহনকারী বিমানে শান্তি শব্দটি ইংরেজি, হিব্রু এবং আরবি ভাষায় লেখা হয়েছে।

১৩ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক স্বাভাবিকের ঘোষণা দেয় আমিরাত-ইসরাইল। প্রথমবারের মতো কোনো আরব দেশের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক এটি। ইরানের ভয় দু’পক্ষকে একত্রিত হতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।

ইসরাইলের সঙ্গে আমিরাতের সম্পর্কে হতাশা ব্যক্ত করেছেন ফিলিস্তিনিরা। এতোদিন ফিলিস্তিনি ভূমি থেকে ইসরাইলকে উৎখাত করে সেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে ছিল আরব দেশগুলো। আমিরাতে সরে যাওয়া তাদের সে লক্ষ্য আরো দীর্ঘায়িত করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ঐতিহাসিক ফ্লাইট

মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের জামাতা হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ওব্রায়ান। ইসরাইলি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্ট মিয়ের বেন-সাব্বাত।

আমিরাত-ইসরাইল চুক্তি ওই অঞ্চলে শান্তির নতুন যুগের সূচনা করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন কুশনার। ফ্লাইটে অরোহনের আগে তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ফ্লাইট এটি। আশা করি এ যাত্রা ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বে নতুন ঐতিহাসিক মুহূর্ত তৈরি করবে।

বাণিজ্য, পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে দু’পক্ষের সম্পর্ক স্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করবেন উভয় দেশের প্রতিনিধিরা। এর আগে আলাদাভাবে আমিরাত সফর করেছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

ইসরাইলি কর্মকর্তারা আশাবাদী এ সফরের মধ্যদিয়ে ওয়াশিংটনে চুক্তি স্বাক্ষরের দিন তারিখ চূড়ান্ত হবে। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই নেতানিয়াহু এবং আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মধ্যে চুক্তি সই হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আমিরাত-ইসরাইল চুক্তিকে ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতির বিজয় হিসেবে দেখা যাচ্ছে। যা নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে একধাপ এগিয়ে রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রোববার জেরুজালেমে আমিরত-ইসরাইল চুক্তি সামনে এগিয়ে যাওয়ার বিশাল সিঁড়ি বলে মন্তব্য করেছেন। ইরানকে মোকাবিলায় ইসরাইলের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশের জন্য আরব দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। চেষ্টা চলছে লক্ষ্য বাস্তবায়নে। ওই অঞ্চলের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ সৌদি আরব ইঙ্গিত দিয়েছে তারা এখনো সম্পর্ক স্থাপনের জন্য প্রস্তুত নয়।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন