পর্যটকশূন্য মিশরের নীলনদ আর পিরামিড

নীল নদ থেকে ভ্যালি অব দ্যা কিং, মিশরের চোখ ধাঁধানো আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলো এখন ফাঁকা। সেপ্টেম্বরে উন্মুক্ত করে দেয়ার পর এখানে মাত্র ১২ জনের একটি পর্যটক দল এসেছিলো ঘুরতে। কয়েকজন পর্যটককে আবার শহরে ঘুরে বেড়াতেও দেখা যায়। রহস্যে ঘেরা এই পিরামিডে বছরের পুরোটা সময় অনেক মানুষ ঘিরে থাকে প্রাচীন নিদর্শনের আশেপাশে। অথচ এখন গিজার মহাপিরামিডের সামনে মাত্র কয়েকজন পর্যটক ঘুরে বেড়ায়। 

চলতি মাসে এ পর্যটন স্থান উন্মুক্ত করে দেয়ার পর মিশরের বিখ্যাত রেড সি রিসোর্টেও পর্যটক গেলো বছরের তুলনায় অনেক কম। শূন্যতা কায়রোর খান আল খলিলি মার্কেটেও। অনেক দোকান এখনো বন্ধ হয়ে আছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু আর পর্যটন স্থান উন্মুক্ত করে দেয়া হলেও শীতের পর্যটন মৌসুমটা বেশ কঠিন হবে বলে মনে করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু আর পর্যটন স্থান খুলে দেয়া হলেও মিশরে দেখা নেই পর্যটকের। এখানকার কর্মীরা বলছেন, ভাইরাস এসে সব শেষ করে দিয়েছে। অথচ পর্যটন ব্যবস্থা খুব ভালোই চলছিলো।

দেশের অর্থনীতির জন্যেও এ খবরটা নেতিবাচক। দেশটির মোট অর্থনীতির ১৫ শতাংশ নির্ভর করে পর্যটন খাতের ওপর। করোনা মহামারিতে মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত প্রতি মাসে পর্যটন খাতে ১শ’ কোটি ডলার করে লোকান গুনছে মিশর। দেশের পর্যটন খাতকে সচল করতে পর্যটকদের নিরাপত্তার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে মিশরীয়রা। পশ্চিমারা মূলত মিশরে ঘুরতে আসেন অক্টোবর থেকে মে মাসের সময়টায়। এসময়, নিজ নিজ দেশের অতিরিক্ত শীত আবার মিশরের অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচা যায়।

পর্যটকরা বলছেন, তারা শুধু খুঁজছিলেন কোন দেশে যাবেন। প্রায় সব দেশই বন্ধ। আগস্টে মিশর খুলেছে। তাই এখানেই এসেছেন।

এখানকার দোকান মালিকরা বলছেন, মাঝে মাঝে তারা খোঁজেন কায়রো বা মিশরে কাজ করে এমন বিদেশিদের। কিন্তু কাউকেই দেখেন না। আগে এখানে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড় থাকতো। জার্মান, আমেরিকান, ইতালিয়ান, চীনা আর জাপানি পর্যটকই বেশি আসতো। এখন তো কেউ আসে না।

হোটেলগুলো অর্ধেক লোকবল নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বৃহত্তম পর্যটন স্থানগুলো একরকম ফাঁকাই। জুলাই থেকে মাত্র ২ লাখ পর্যটক এসেছেন দেশটির লোহিত সাগর আর দক্ষিণ সিনাই প্রদেশে। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে তা অনেক কম। বিশ্ব পর্যটন সংস্থা বলছে, করোনা মহামারে শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু পর্যটকরা এখানে আসতে পারেন, কারণ এখানে ভ্রমণ নিরাপদ। সাথে এখানকার জাদুকরী সৌন্দর্য্য উপভোগের সুযোগ থাকছে।

এ খাতের ধস ঠেকাতে জরুরি তহবিল ঘোষণা করেছে মিশর সরকার। নিবন্ধিত ৯ হাজার ট্যুর গাইডকে বছরের শেষ নাগাদ প্রতি মাসে ৩২ ডলার করে অর্থ দেয়া হচ্ছে। ট্যুরিজম ফার্মগুলোর ফি পরিশোধের সময়সীমা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র আর হোটেল রেস্টুরেন্টগুলো এখনো কঠোর নিয়মনীতির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো মিশরকে ভ্রমণের জন্য নিরাপদ ঘোষণা করেনি।

আপনি আরও পড়তে পারেন