প্রতিনিধি, সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) ঃ
আসছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও পৌরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনে এমপি পত্নী ডালিয়া লিয়াকত হয়েছেন মেয়র পদের প্রার্থী। তার প্রার্থীতা নিয়ে পৌরসভায় শুরু হয়েছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এরই মধ্যে সোনারগাঁও জিআর ইনষ্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের উন্নয়ণ কাজের নাম ফলকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নাম মুছে দেয়া বা নাম ফলকটি সবার অগোচরে ভাংচুর করেছে অজ্ঞাত দুবৃত্তরা। নাম ফলক ভাংচুরের বিষয়টিকে পুজি করে একটি স্থার্থান্বেসী মহল এমপি পত্নী ডালিয়া লিয়াকতকে পৌরসভা নির্বাচনে হেনস্থা করতে শুরু করেছে নানা ষরযন্ত্র।
অপর একটি মহল বলছেন, জি.আর স্কুলের ঠিকাদারী কাজ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তার পছন্দের লোক দিয়ে করাবেন। তাই কাজ না পেয়ে সরকার দলীয় লোকজনই এমন জঘন্যতম কাজটি করেছেন।
তবে পৌরসভার সচেতন মহল বলছেন, এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা সোনারগাঁওয়ের একজন জননেতা। তিনি সোনারগাঁওয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে প্রত্যেকটি ইউনিয়ন ও পৌরসভাসহ স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়নসহ করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় তার অবদানের জন্য সোনারগাঁও বাসীর কাছে চির স্মরনীয় হয়ে থাকবেন।
তিনি যে সমস্ত উন্নয়ন করেছেন বিগত সময়ে থাকা কোন সংসদ সদস্য করতে পারেননি।
সোনারগাঁও পৌরসভারবাসী আরও বলেছেন, সোনারগাঁও জি.আর ইনষ্টিটিউশন স্কুল এবং কলেজের উন্নয়নে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ারের নাম মোছা বা নাম ফলক ভাঙ্গা একজন সংসদ সদস্যের কাজ না, তিনি এ কাজ কখনো করতে পারেন না।
নাম ফলক ভাঙ্গার সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব জননেতা লিয়াকত হোসেন খোকা কোন ভাবেই জড়িত নন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। স্থানীয় এমপি লিয়াকত হোসেন খোকার বিারুদ্ধে ঐ নামফলক ভাঙ্গার অভিযোগ তোলা হলেও এমপি খোকার অজান্তেই নামফলকটি ভাঙ্গা হয়েছে বলে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
সোনারগাঁও পৌরসভার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলে জানাগেছে, সোনারগাঁও জি.আর ইনস্টিটিউশন স্কুল এন্ড কলেজের অভিভাবকদের মাঝে করোনাকালে শিক্ষার্থীদের বেতন নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। ঐ বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করতে যান এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা।
১৭ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে তিনি সেখানে প্রবেশ করেন। প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশের সময় তিনি গেইটের নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। এ সময় প্রধান ফটকের সামনে আনোয়ার হোসেনের নামে লাগানো নামফলকটি নিয়ে উপস্থিতিদের মধ্যে একজন এমপি খোকার দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রশ্ন রাখেন, এটা কি জেলা পরিষদের বরাদ্ধে কাজ হচ্ছে? তখন এমপি উত্তর দেন, না। এটার জন্য আমি ডিও লেটার দিয়েছিলাম।
ওই ব্যক্তি তখন পাল্টা প্রশ্ন করে এমপি খোকাকে বলেন, তাহলে এখানে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের নাম কেন? তখন এমপি বলেন, থাক, সমস্যা নাই। উন্নয়ন হলেই হলো।’ কয়েক সেকেন্টের এমন কথাপোকথন হতে হতে এমপি ততক্ষণে কলেজের ভেতরে প্রবেশ করেন।
অন্যদিকে ঐ বৈঠক শেষে কে বা কারা কলেজের গেইটে লাগানো আনোয়ার হোসেনের নামফলকটি ভেঙ্গে ফেলে। স্থানীয়দের অনেকেই জানিয়েছেন এই নামফলকটি বেশকজন পৌর ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ভেঙ্গেছে। এর কারন হিসেবে জানাগেছে, জেলা পরিষদের বরাদ্ধের এই কাজটির ঠিকাদারী চেয়েছিল পৌর ছাত্রলীগের বেশকজন নেতা।
কিন্তু কাজটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের পছন্দের একজন ঠিকাদারকে পাইয়ে দেয়া হয়। যে কারনে ছাত্রলীগের ওইসব নেতাদের মাঝে ক্ষোভ ছিল। আর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এই নামফলকটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। কিন্তু এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় এমপি খোকার কোন সম্পৃক্ততা নাই।
মুলত ঠিকাদারী কাজের বিরোধ নিয়ে নামফলকটি ভাঙ্গা হয়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। এমপি খোকা দাঁড়িয়ে থেকে ভেঙ্গেছেন কিংবা কাউকে নামফলক ভাঙ্গতে নির্দেশ দিয়েছেন এমনটা কেউ বলতে পারেননি।