মৃত্যুর তারিখটা পর্যন্ত মিলিয়ে দিলো দুই বন্ধু

মৃত্যুর তারিখটা পর্যন্ত মিলিয়ে দিলো দুই বন্ধু

অদ্ভূত এক সমাপতন ছাড়া আর কী-ই বা বলা যেতে পারে একে? ঠিক চার বছর আগে ২৫ নভেম্বর প্রয়াত হন ডিয়েগো ম্যারাডোনার ‘দুঃসময়ের বন্ধু’ ফিদেল কাস্ত্রো।

১৯৮৬ সালে প্রথম বার কিউবা গিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। কাস্ত্রোর সঙ্গে পরিচয় হয়। সেই শুরু। তার পর অনেক বারই কিউবা গিয়েছেন তিনি। বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে ১০ নম্বর জার্সি উপহারও দিয়েছেন।

অবসরের পর এক সময় মাদক সেবনের জন্য মারাত্মক সমস্যায় পড়েন ম্যারাডোনা। তখন রীতিমতো বিপর্যস্ত অবস্থা তার। পাশে নেই কেউ। সেই সময় তাকে আশ্রয় দিয়েছিলেন কাস্ত্রো। ‘লা পেড্রেরা’ ক্লিনিকে ব্যবস্থা করে দেন ম্যারাডোনার রিহ্যাবের।

কিউবার স্বাস্থ্য পরিষেবার সুনাম ছিলই। ক্রমশ সুস্থও হতে থাকেন কিংবদন্তি ফুটবলার। ম্যারাডোনার ঘনিষ্ঠদের মতে, কাস্ত্রো এগিয়ে না এলে প্রাণ বাঁচানোই মুশকিল হয়ে যেতো আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের। শরীর এতোটাই খারাপ ছিলো তার।

সেই সময় ৪ বছর কিউবায় কাটিয়েছিলেন ম্যারাডোনা। মাঝে মাঝেই সকালে ম্যারাডোনার কাছে আসতো কাস্ত্রোর ফোন। খেলা থেকে রাজনীতি, কিছুই বাদ পড়তো না আলোচনায়। নেশায় আসক্তি কাটিয়ে ফেলতে ম্যারাডোনাকে উৎসাহ জোগাতেন কাস্ত্রো।

ম্যারাডোনা একবার বলেছিলেন, এমনকী রাত দু’টোর সময়ও ফোন করতেন কাস্ত্রো। আমিও সব সময় কথা বলতে প্রস্তুত থাকতাম। কোনো ইভেন্ট থাকলে জানতে চাইতেন, আমি যেতে চাই কি না। এগুলো আমি ভুলব না।

কাস্ত্রোর কাছে ম্যারাডোনা ঠিক কেমন ছিলেন? কাস্ত্রো একবার বলেছিলেন, ম্যারাডোনা আমার গ্রেট ফ্রেন্ড। কোনো সন্দেহ নেই যে ও অসাধারণ এক অ্যাথলিট। আর কিউবার সঙ্গে ম্যারাডোনা বন্ধুত্ব রেখে গিয়েছে কোনো পার্থিব লাভ ছাড়াই।

২০১৬ সালে প্রয়াত হন কাস্ত্রো। ম্যারাডোনা তখন কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন, আমার কাছে উনি ছিলেন দ্বিতীয় বাবার মতো। আর্জেন্টিনায় যখন আমার সামনে দরজাগুলো বন্ধ হচ্ছিলো, তখন উনি কিউবার দরজা খুলে দিয়েছিলেন।

কাস্ত্রোর মৃত্যুর পর জাতীয় শোকে যোগ দিতে ম্যারাডোনা তখন গিয়েছিলেন কিউবা। বলেছিলেন, আমি এ সময় কিউবার মানুষের পাশে থাকতে চাই। আর বিদায় জানাতে চাই আমার বন্ধু ফিদেলকে।

আপনি আরও পড়তে পারেন