নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ছোট ভাই মির্জা কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, দলীয় সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ দলে অপরিহার্য নয়। কোন বিশেষ ক্ষেত্রে কাউকে কোন ধরনের ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে যে কোন সিদ্ধান্ত দলীয় সভাপতি নিতে পারবেন।
বুধবার (৬ জানুয়ারি) সকালে ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সরকারের টানা এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে এবং ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ঊর্ধ্বে কেউ নয়, দল করলে সবাইকে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
সম্প্রতি আসন্ন পৌর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী কাদের মির্জার কয়েকটি বক্তব্য সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় আলোচিত হয়। তারমধ্যে একটি বক্তব্য তাকে বলতে শোনা গেছে- ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে তিন-চারটা আসন ছাড়া বাকি আসনে আমাদের এমপিরা দরজা টোয়াই পাইতো ন (খুঁজে পাবে না)। এটাই হলো সত্য কথা’।
এদিকে সরকারের ধারাবাহিকতায় গত ১২ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়ন অগ্রগতির সকল সূচকে যুগান্তকারী মাইলফলক স্পষ্ট করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে ও গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রূপায়নে অর্জিত হয়েছে দৃশ্যমান সফলতা। স্বাধীনভাবে কাজ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন, নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।
করোনার মতে বৈশ্বিক মহামারি নিয়ন্ত্রণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বিশ্বে অনুকরণীয় রাষ্ট্রের মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা, দৃঢ়তা, সাহসিকতা, সততা ও কর্মনিষ্ঠা আজ বিশ্ব নন্দিত। একসময়ে তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এখন ফিরে পেয়েছে ঐতিহ্য।
তিনি বলেন, পাট রপ্তানিতে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে প্রথম। ইলিশে প্রথম, তৈরি পোষাক রপ্তানিতে দ্বিতীয়, অন্যান্য ক্ষেত্রসহ চাল উৎপাদনে ৪র্থ স্থানে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় রেখে চলছে অনবদ্য অবদান উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিবেশী দেশের সাথে অতীতের অবিশ্বাসের কৃত্রিম দেয়াল ভেঙে নির্মিত হয়েছে সম্পর্কের নতুন সেতুবন্ধন। সমাধান হয়েছে দীর্ঘদিনের ছিটমহল বিনিময় কার্যক্রম।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, সামাজিক এবং যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই যোগাযোগ খাতে রীতিমতো বিপ্লব সাধিত হয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
তিনি বলেন, শতভাগ বিদ্যুৎ, পায়রা বন্দর, মাতারবাড়ি প্রকল্প, গভীর সমুদ্র বন্দর, বছরের প্রথমদিনে পাঠ্যপুস্তক উৎসব প্রধানমন্ত্রীর অবদান। শেখ হাসিনার হাত ধরেই মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণাধীন। স্বপ্নের পদ্মাসেতু এখন দৃশ্যমান।
ওবায়দুল কাদের মনে করেন সরকারের পরিবর্তন হতে পারে কিন্তু সরকারের গৃহীত নীতি এবং পরিকল্পনা থাকবে চলমান, ভিন্ন ভিন্ন দল সরকারে আসতে পারে তবে রাষ্ট্রের লক্ষ্য এবং অর্জনের ধারাবাহিকতা থাকবে গতিশীল।
তিনি বলেন, প্রতিহিংসা থাকবে না উন্নয়নে। উন্নয়ন প্রবাহমান জলধারার মতো। যতক্ষণ শেখ হাসিনা আছেন জনমানুষের পাশে ততক্ষণ কোন অপশক্তিই দেশকে পিছিয়ে দিতে পারবে না।
সেতুমন্ত্রী সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আর শেখ হাসিনার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।