স্বামীকে দইয়ে ঘুমের ট্যাবলেট দেন স্ত্রী, কোপায় প্রেমিক

স্বামীকে দইয়ে ঘুমের ট্যাবলেট দেন স্ত্রী, কোপায় প্রেমিক

পরকীয়ার জেরে স্বামীকে খুন। পিবিআইয়ের তদন্তে ঘাতক স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমিলি (৩০) ও প্রেমিক রবিউল করিম পিন্টু (৩৫) আটক করা হয়েছে।

কেমিলি ও তার প্রেমিককে গ্রেপ্তারের পর বের হয়ে এসেছে এমন চাঞ্চল্য তথ্য।

আজ বুধবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের পিবিআইয়ের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ খোরশেদ আলম।

তিনি জানান, পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ার জেরে স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমিলি ও তার প্রেমিক রবিউল করিম পিন্টু মিলে স্বামী এলিম সরকারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ভাড়াটিয়া খুনি দিয়ে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করতে চাইলেও ব্যর্থ হন কেমিলি ও পিন্টু। পরে পিন্টু নিজেই কাজটি করার সিদ্ধান্ত নেন। সেই অনুযায়ী কেমিলি রাতেই স্বামীকে দইয়ের সঙ্গে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে খাইয়ে দেন। পরদিন সকালে কেমিলির পরামর্শে পিন্টু তার এক বন্ধুকে নিয়ে বাসায় ঢোকেন। নিস্তেজ পড়ে থাকা এলিমকে চাকু দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে বাসার সিসি ক্যামেরা ও ডিভিআর নিয়ে পালিয়ে যাযন পিন্টু ও তার বন্ধু।

তিনি জানান, এই ঘটনায় ভুক্তভোগী এলিমের বাবা ফজল হক সরকার বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। থানা-পুলিশের পর ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে পিবিআই ঢাকা জেলার একটি টিম।

তদন্ত ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় আশুলিয়া জিরাবো জামগড়া এলাকা থেকে হত্যার পরিকল্পনাকারী ও নিহতের স্ত্রী মোসা. সুলতানা আক্তার কেমিলি (৩০) ও তার পরকীয়া প্রেমিক মো. রবিউল করিম পিন্টুকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা পিবিআই।

এসপি বলেন, গত ২৭ মার্চ রাত ১০টার দিকে খাওয়া-দাওয়া শেষে এলিম সরকার স্ত্রী সন্তানসহ ঘুমিয়ে পড়েন। পরদিন ২৮ মার্চ সকাল ৮টার দিকে কেমিলি ঘুম থেকে উঠে জরুরি প্রয়োজনে তার শ্বশুর ফজল হক সরকারের বাড়িতে যান। বাড়ির অন্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শেষে ওইদিন সকাল ১০টার দিকে বাসায় ফেরেন কেমিলি। বাসায় ঢুকেই স্বামী এলিম সরকারের গলার নিচে একটি, পেটে ১১টি ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের একটি আঘাত দেখতে পান বলে প্রথমে জানান। এ বিষয়ে আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা পর পুলিশের পাশাপাশি পিবিআইও ঘটনা তদন্ত করছিল।

 

তিনি বলেন, আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে জানান, রবিউল করিম পিন্টু আশুলিয়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে লাইনম্যান হিসেবে চাকরি করেন। এলিম সরকারের বাসায় বিদ্যুতের মিটার লাগানোর কাজ করতে গিয়ে কেমিলির সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে ঘটনাটি জানাজানি হয়ে যায়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। এতেই বিপত্তি ঘটে। পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ার জেরেই এলিম সরকারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেন কেমিলি ও তার প্রেমিক পিন্টু।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় জড়িত পিন্টুর এক বন্ধু পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তদন্তের স্বার্থে তার নাম এখনই বলা যাচ্ছে না।

আপনি আরও পড়তে পারেন