বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে লোডশেডিং চলছে, বিদ্যুৎ নেই। আমাদের মা-বোনেরা আজ সমাবেশে হারিকেন নিয়ে এসেছেন। আওয়ামী লীগের পতন ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে। আমি সরকারকে বলব, পদত্যাগ করুন। নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে জনগণের ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সমাবেশটির আয়োজন করে।
সরকার বিদ্যুতের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছে অভিযোগ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০২১ দেশে সালে বিদ্যুৎ খাতে লোকসান হয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা। অনেক কোম্পানি শেখ হাসিনার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তারা হাজার হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে টাকা নিয়ে চলে গেছে।
এই বিদ্যুৎ আমদানির জন্য কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট করা হয়েছিল। যে পাওয়ার প্যান্টগুলো এসেছিল কোনো টেন্ডার না করে। এর মাধ্যমে হাজার কোটি টাকা লুটে নেওয়া হয়েছে। যার জন্য কোনো মামলা হবে না। তারা ইনডেমনিটি আইন তৈরি করেছে।
আওয়ামী লীগের পতন ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন বিদ্যুৎ, এরপর জ্বালানি তেল। এরপর দেখবেন রিজার্ভ শেষ হচ্ছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এখন আর দফা-টফা নেই। এখন একটাই দাবি, এই মুহূর্তে পদত্যাগ করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে এই সংসদ বাতিল করুন। নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে জনগণের ক্ষমতা, জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিন।
সবদিকে আজ হাহাকার ছড়িয়ে পড়েছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, প্রতিদিন বাংলাদেশের মানুষ হয় সড়ক দুর্ঘটনায়, না হলে আওয়ামী লীগের নির্যাতনে মারা যাচ্ছে। মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, শুধু মিটিংয়ে হারিকেন নিয়ে আসলে চলবে না। যখনই লোডশেডিং হবে তখনই হারিকেন আর মোমবাতি নিয়ে বের হতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গতকালই ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ঘাটতি নেই। তাহলে লোডশেডিং কেন? ঘাটতি নেই তো ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ নেই কেন? কেন জ্বালানি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে বাংলাদেশ এখন অশনি সংকেতে?
তিনি বলেন, এই সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সুতরাং তাদের আর সুযোগ দেওয়া যাবে না।
সরকার মিটিং-মিছিল করতে দিচ্ছে না অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, কিছুদিন আগে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কী বললেন? কাউকে বাধা দেওয়া হবে না। সবাই মিটিং-মিছিল করতে পারবে। কিন্তু ঢাকা শহরে একটা সভা করার মতো জায়গা দেওয়া হয় না। আর প্রেস ক্লাবে জায়গা হয় না।
নয়াপল্টনে পার্টি অফিসের সামনে আজকের এই সমাবেশের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই সরকার অনর্গল মিথ্যা বলে, মানুষকে ধোঁকার মধ্যে রাখে। দেশে এখন সত্য কথা বললে বিরোধীদের শাস্তি দেওয়া হয়।
বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলনসহ মহানগর ও দলের বিভিন্ন অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।