জটিলতা কাটছে না বিএনপির গণসমাবেশ নিয়ে

জটিলতা কাটছে না বিএনপির গণসমাবেশ নিয়ে

বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে জটিলতা কাটছে না। শনিবার মহানগর পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বিএনপির প্রতিনিধি দল অনুমতি চেয়ে আরেকটি আবেদন করেছে। তবে এখনো পুলিশ অনুমতি দেয়নি। ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে গণসমাবেশ করার অনুমতি বিএনপি পাবে কিনা তা নিশ্চিত নয়। এদিকে বিএনপির সমাবেশ কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবিরের নাশকতার আশঙ্কায় মহানগরের বিভিন্ন থানা এলাকায় পুলিশ সতর্কতা জারি করেছে। জামায়াত-শিবিরের নাশকতা রুখতে আগেভাগেই নগরীর মেস ও সম্ভাব্য সব আস্তানায় পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। ২৩ নভেম্বর থেকে নগরীজুড়ে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে।

জানা গেছে, ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে ৩ ডিসেম্বর সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ১০ নভেম্বর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ কমিশনার বরাবর আবেদন করেন বিএনপি নেতারা। সমাবেশের দিন এগিয়ে এলেও পুলিশ ও জেলা প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। এ নিয়ে আলোচনার জন্য শনিবার বিকালে মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দল আরএমপির সদর দপ্তরে যান। আরএমপির বিশেষ শাখার উপকমিশনার (ডিসি-এসবি) আবদুর রাকিমের সঙ্গে প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে। আবেদনটি পর্যালোচনা করে পরে জানাবেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

এদিকে বিভিন্ন দাবিতে রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহণ মালিক সমিতি আগামী ১ ও ২ ডিসেম্বর বিভাগের আট জেলায় পরিবহণ ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার নাটোরে পরিবহণ মালিকরা সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন। রাজনৈতিক কারণে পরিবহণ ধর্মঘট নয় বলে দাবি মালিক সমিতির। তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, ৩ ডিসেম্বরের বিভাগীয় সমাবেশ বানচাল করতে ধর্মঘট ডেকেছে মালিক সমিতি। সরকারের চাপে তারা এ কাজ করেছে।

পরিবহণ ধর্মঘট ডাকা হলেও সমাবেশে নেতাকর্মীদের অংশ নিতে তা কোনো বাধা হবে না বলে জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। রোববার যুগান্তরকে তিনি বলেন, রাজশাহী বিভাগ বিএনপির ঘাঁটি। যত বাধাই আসুক রাজশাহীর সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে। সরকার ও পুলিশকে আমরা বলতে চাই-রাজনৈতিক সমাবেশ করা আমাদের মৌলিক অধিকার। এভাবে গায়েবি মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হলে তাদেরও একদিন জবাবদিহি করতে হবে। বিশেষ দল ও পক্ষের হয়ে পুলিশকে কাজ না করতে তিনি অনুরোধ জানান। বিশেষ করে রাজশাহী বিভাগজুড়ে থানায় থানায় গায়েবি মামলা বন্ধ করতে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুরোধ করেন।

জানা গেছে, বিএনপির সমাবেশ যাতে সুষ্ঠুভাবে হতে পারে সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে সমাবেশের ভেন্যুর বিষয়টি আগে নির্ধারণ করা। পুলিশ চাইছে না, এমন স্থানে বিএনপির সমাবেশ হোক যেখানে নিরাপত্তা নিশ্চিতে তাদের সমস্যা হবে। সমাবেশ স্থলকে সিসি ক্যামেরার বেষ্টনীতে আনা ও ড্রোন দিয়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করার উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। আরএমপির একজন কর্মকর্তা জানান, যেখানেই সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে সেখানেই বিএনপিকে কিছু শর্ত দেওয়া হবে। বিএনপি শর্ত পালনে ব্যর্থ হলে মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। সে ক্ষেত্রে বিকল্প ভেন্যু হিসাবে গণকপাড়া চৌরাস্তায় সমাবেশ করতে বিএনপিকে অনুরোধ করবে পুলিশ। এ প্রসঙ্গে মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক যুগান্তরকে বলেন, বিএনপির সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখা ও যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। শনিবার রাতে আরএমপির রাজপাড়া থানায় বিএনপির দেড় শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। অন্যসব থানায়ও একই ধরনের মামলা হবে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানায়। বিএনপির সমাবেশ ঘিরে নগরীতে জামায়াত-শিবিরের ব্যাপক অনুপ্রবেশের আশঙ্কায় পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন