সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি:
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের দড়িকান্দি এলাকাটি সড়ক দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় পরিণত হয়েছে। গত ৪ বছরে ওই এলাকার মহাসড়কের একই স্থানে ছোট বড় প্রায় ১০ টি বড় দুঘর্টনা ঘটেছে।
এতে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় ২১ জন। পঙ্গত্ব বরণ করেছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। সবশেষ শুক্রবার (১ জানুয়ারী) বিকালে উল্লেখিত স্থানে বাসের চাপায় প্রাণ হারিয়েছেন একই পরিবারের তিনবোনসহ ৪ জন। আহত হয়েছেন ১ জন।
স্থানীয়রা জানান, দড়িকান্দি, জংগুয়া, নোয়াকান্দি, আমিনপুর পাশাপাশি এই চার গ্রামের পাশ ঘেষে অতিক্রম করেছে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক। চার গ্রামের মধ্যে সবচেয়ে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় পরিণত হয়েছে দড়িকান্দি গ্রাম।
এই এলাকাটিতে সড়ক দুর্ঘটনা থামছেই না বরং বেড়েই চলছে। প্রতিনিয়ন ঘটা এসব দুর্ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করাসহ প্রাণ হারাচ্ছেন সকল বয়সী মানুষ। আর এসব দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয়রা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলাচলকেই দায়ি করছেন।
স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরেই দুর্ঘটনা রোধে দুর্ঘটনাপ্রবণ ওই এলাকার মহাসড়কে গতিনিয়ন্ত্রক ও রোড ডিভাইডার স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছেন। নিয়মিত মহাসড়ক সংস্কার কাজ হলেও গতিরোধক ও ডিভাইডার নির্মাণ করা হয়নি ঝুঁকিপূর্ণ ওই স্থানে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা না কমে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে এলাকাটি।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, শুক্রবার বেপরোয়া গতির বাসের চাপায় ৪ জন নিহত হওয়ার আগে গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর একই স্থানে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ১ জন, একই সালের ২৭ জুন দুঘর্টনায় মারা গেছেন এক দম্পত্তি।
২০১৭ সালের ১১ ফেব্রয়ারী ট্রাক ও প্রাইভেটকার মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান ১৫ জন, ২০১৮ সালে বাসের নিচে পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান শারমিন নামে নারায়নপুর রাবেয়া মহাবিদ্যালয়ের এক মেধাবী শিক্ষার্থী, ২০১৬ সালে দুঘর্টনায় মারা যায় চাঁদনী নামে এক শিশু শিক্ষার্থী।
এছাড়া ২০১৩ সালে উল্লেখিত স্থানেই দূঘর্টনায় নুরল ইসলাম নামে স্থানীয় মসজিদের এক মুয়াজ্জিন নিহত হয়। এমন দুর্ঘটনা যেন স্থানটিতে নিয়মিত হয়ে দাড়িয়েছে। প্রায় দুর্ঘটনার শিকার স্থানীয় লোকজনসহ মহাসড়কে যাতায়াতকারী দেশের বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন বয়সী মানুষের মরদেহ দেখে স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ছে। মহাসড়কে যানবাহনের বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে রোববার (৩ জানুয়ারি) বিকালে দড়িকান্দি এলাকাবাসি দুঘর্টনা এড়াতে উল্লেখিত স্থানে রোড ডিভাইডার ও স্পিড ব্রেকার স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন। এসময় বক্তব্য রাখেন, প্রাক্তন শিক্ষক ও আওয়ামীলীগ নেতা মতিউর রহমান, জেলা ন্যাশনাল কিন্ডার গার্টেন এর সভাপতি মোঃ জাহানুল হক বাবুল, দৈনিক লাল সবুজের সম্পাদক মোঃ সোহেল আহমেদ, বেলাব প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন নীলু প্রমুখ।
যোগাযোগ করা হলে নরসিংদী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মোফাজ্জল হায়দার বলেন, সরেজমিনে মহাসড়কের উক্ত এলাকা আমরা পরিদর্শন করবো। যদি মনে হয় এখানে রোড ডিভাইডার ও স্পিড ব্রেকার নির্মাণ করা উচিত তাহলে নির্মাণ করা হবে।