এক রাতের ভেতরেই ইসরায়েলের একটি কারাগার থেকে পালিয়েছেন ফিলিস্তিনি ৬ বন্দি। সুড়ঙ্গ ব্যবহার করে কৌশলে রাতের আধারে কারাগার থেকে পালিয়ে যান তারা। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে- ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে, সেটি ইসরায়েলের অন্যতম সুরক্ষিত একটি কারাগার।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। ঘটনার পরই পালিয়ে যাওয়া ফিলিস্তিনি বন্দিদের খোঁজে বড় ধরনের তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল।
বিবিসি জানিয়েছে, সুড়ঙ্গ দিয়ে বন্দি পালিয়ে যাওয়ার এই ঘটনা ঘটেছে ইসরায়েলের জিলবোয়া কারাগারে। ধারণা করা হচ্ছে- গত কয়েক মাস ধরে পালিয়ে যাওয়া ওই ৬ ফিলিস্তিনি কারাগারের যে সেলটিতে অবস্থান করছিলেন, সেখানে গোপনে একটি সুড়ঙ্গ খুঁড়েছিলেন। সেই সুড়ঙ্গ দিয়েই তারা পালিয়ে যান। কারাগারটির দেয়ালের ঠিক পাশেই বড় রাস্তা রয়েছে। কারাগারের ভেতরে শুরু হওয়া এই সুড়ঙ্গটির অপর মাথা কারাগারের ঠিক বাইরেই গিয়ে উঠেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, বন্দিদের পালিয়ে যাওয়ার এই দৃশ্য দেখেন কারাগারের বাইরে কৃষি মাঠগুলোতে থাকা কৃষকরা। তারাই পরে কারাগারের কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানান।
বিবিসি বলছে, পালিয়ে যাওয়া ওই ছয় ফিলিস্তিনির মধ্যে সশস্ত্র দল আল-আকসা মারটায়ার্স ব্রিগেড’র সাবেক একজন নেতা রয়েছেন। এছাড়া বাকি পাঁচজন ইসলামিক জিহাদের সদস্য।
ইসরায়েলি কারাগারের নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বন্দি পালিয়ে যাওয়ার এই ঘটনাকে ‘বড় ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি ও গোয়েন্দা ব্যর্থতা’ বলে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গ্রুপগুলো এই ঘটনাকে ‘বীরত্বপূর্ণ’ বলে বর্ণনা করেছে।
ফিলিস্তিনি বন্দিরা তাদের গোসলখানার মেঝে খুঁড়ে সুড়ঙ্গটি তৈরি করতে শুরু করেন এবং এর অপর মুখটি ঠিক কারাগারের বাইরে গিয়ে পৌঁছেছে। একপর্যায়ে সেই সুড়ঙ্গ ব্যবহার করেই পালিয়ে যান ওই ৬ ফিলিস্তিনি।
পরে কৃষকদের নিকট থেকে সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কারাগারের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে স্থানীয় সময় ভোররাত ৪টায় আটক বন্দিদের সংখ্যা গণনা করেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। পরে ছয় জনকে খুঁজে না পেয়ে বন্দি পলায়নের ঘটনাটি নিশ্চিত করেন তারা।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজে একটি মরিচা-ধরা চামচ ব্যবহার করেন ফিলিস্তিনি বন্দিরা। পরে সেটি কারাগারের একটি পোস্টারের পেছনে খুঁজে পাওয়া যায়।