শিক্ষক সংকট ও রাজনীতির ফল সেশন জট

শিক্ষক সংকট ও রাজনীতির ফল সেশন জট

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকটের কারনে তীব্র সেশন জটে ভোগছে  শিক্ষার্থীরা । ছয় হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর বিপরীতে বর্তমানে শিক্ষক সংখ্যা ১৪৭ জন । যার মধ্যে একজন অস্থায়ী ভাবে বহিষ্কার । অন্যদিকে বর্তমানে শিক্ষা ছুটিতে আছে  ২০ জন ।

২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি বর্তমানে ১৯টি বিভাগের ছয় হাজারের অধিক শিক্ষার্থী নিয়ে  পা দিবে এক যুগে । কিন্তু যখন এক যুগ পর পূর্ন দমে পথ চলার কথা তখন সেখানে যেন মন্থর হয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের পথ চলা ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগের অধিকাংশ বিভাগেই সময়মত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়না । যার প্রেক্ষিত তৈরী হয়েছে সেশন জট । আর এই সংকটের মূল কারন হিসেবে অভিযোগ উঠেছে  শিক্ষক সংকট ও শিক্ষকদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির । আর সেই সাথে রয়েছে অনেক  শিক্ষকের শিক্ষা ছুটিতে থাকার কারণ।

শিক্ষক রাজনীতির প্রভাব পড়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে । তবে এই বক্তব্য মানতে নারাজ অধিকাংশ শিক্ষক । নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষক এই দায় স্বীকার করেছেন । তবে মূল কারণ হিসেবে তাদের বক্তব্য শিক্ষক সল্পতাই এর প্রধান কারন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন বিভাগের মধ্যে থাকা শিক্ষকদের রাজনীতি বা কোরামনীতির প্রভাবে শিক্ষার্থীরাও মানসিক চাপে পড়ে কোন এক  পক্ষে পড়ে যায় এবং ভিন্ন পক্ষের রাজনীতির স্বীকার হতে হয়। যার ফল পাওয়া যায় পরীক্ষার ফলাফলে । বিশেষ করে গত উপাচার্যের সময়কালে এর প্রভাব প্রকট রূপ ধারন করেছিলো । নতুন উপাচার্য, নতুন রাজনীতি । তাই নতুন ধরন তৈরী করতে শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাজনীতি সাময়িক  ভাবে স্থবির থাকলেও  বন্ধ হয়নি ।

শিক্ষকদের শিক্ষা ছুটি একটি ধারাবাহিক বিষয় তবে শিক্ষক সংকটের কারনে এক সময়ে অনেক শিক্ষকের ছুটিতে যাওয়ার ফলে এক প্রকার সংকটঁ তৈরী হয়েছে । অন্যদিকে এমনও অভিযোগ রয়েছে রাজনৈতিক ভিন্ন কোরামের  কারনে দেশের বাইরে  গবেষণায় জন্যে শিক্ষা ছুটি তে যেতে দেয় নি প্রশাসন । বর্তমানে ২০ জন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে আছেন । আর তাই বর্তমানে স্থায়ী এবং অস্থায়ী দুই মিলে মোট দায়িত্বরত আছেন ১২৭ জন শিক্ষক ।

অন্যদিকে নারী শিক্ষার্থীর সাথে শিক্ষকের যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের  প্রভাষক মোঃ মিনহাজ উদ্দীন অস্থায়ী ভাবে বহিষ্কার আছেন । যৌন কেলেঙ্কারি অভিযোগের মামলা আদালতে থাকায় তাকে অস্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে ।

শিক্ষক সংকট,রাজনীতি ও ফলস্বরূপ সেশনজট বিষয়ক প্রশ্নে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সঠিক পথেই হাঁটছে । গত সময়ের প্রশাসনের দুর্নীতির ফলে সাময়িকভাবে শিক্ষক নিয়োগে সংকট দেখা দিয়েছে ,যার ফল স্বরূপ সেশনজট । তবে বর্তমান প্রশাসন অতিশীগ্রই এই সংকট সমাধানে ব্যবস্থা নিচ্ছে । তবে শিক্ষা ছুটির কারনে সেশন জট হচ্ছে কথাটি সম্পূর্ন সঠিক নয় কেননা শিক্ষা ছুটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের জন্য নিয়মতান্ত্রিক বিষয় । উচ্চতর গবেষনার জন্যে এই ছুটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দিয়ে থাকে । আর শিক্ষকগণ  রাজনীতি করতেই পারেন কিন্তু তার প্রভাব শিক্ষার্থীদের উপর পড়বে কেন ? তবে কেউ কেউ করতে পারে সেজন্য সমগ্র শিক্ষকদের এই দায় দেয়া উচিত নয় ।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment