সাভারে বংশী নদী ভরাট করে চলছে দখল প্রক্রিয়া

সাভারে বংশী নদী ভরাট করে চলছে দখল প্রক্রিয়া

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঢাকা জেলার সাভারের একমাত্র নদী বংশী বালু দিয়ে ভরাট করে দখল করছে একটি প্রভাবশালী মহল। উপজেলার পাথালিয়া ইউনিয়নে প্রবাহিত নদীর এক অংশে বালু ভরাট দ্বারা দখলের অভিযোগ করেন  এলাকাবাসী ।

সরেজমিন দেখা গেছে, পাথালিয়া ইউনিয়নের সিন্দুরিয়া এলাকায় সিন্দুরিয়া কবরস্থানের পাশ দিয়ে প্রবাহিত বংশী নদীর কিছু অংশ বালু দিয়ে ভরাট চলছে। এই বালু ভরাটের কাজ করছে পাথালিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন।

এই নদীর অংশ ভরাট করণের বিষয়ে মুঠোফোনে মোয়াজ্জেম হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাভার বাজার রোডের শাহাবউদ্দিন, মেহের এবং জহির তাদের জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করার কাজ আমাকে দিয়েছে। তবে সরকারি জায়গা ভরাট করা হচ্ছে কিনা সেটা আমি বলতে পারবো না। যারা ভরাট করার কাজ দিয়েছেন তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন।

‘নদীর ভিতরের জায়গাও তো বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে দেখলাম, এটা কেন করছেন?’ এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ‘আমি এটা জানি না, আমাকে যা ভরাট করার জন্য কাজ দেওয়া হয়েছে সেটুকুই করছি আমি। এ ব্যাপারে শাহাবউদ্দিনের কাছে জিজ্ঞেস করুন আপনি।’

বংশী নদীতে যেখানে বালু দিয়ে ভরাটকরণের কাজ চলছে, সরেজমিন সেখানে গিয়ে জহির নামের যিনি ভরাট করছেন তাঁর ম্যানেজারের কাছে জহিরের মুঠোফোন  নাম্বার চাইলে  তিনি দিতে অস্বীকার করেন। এক পর্যায়ে ম্যানেজারের নিজের নাম এবং মুঠোফোন নাম্বার চাইলে সেটাও দিতে অস্বীকার করেন। এজন্য বংশী নদীর অংশ বালু দ্বারা ভরাটকারী জহিরের কোনো বক্তব্য নেওয়া যায় নাই।
https://youtu.be/zI_mSy97Ze4

নদী ভরাটকরণের ব্যাপারে পাথালিয়া ইউনিয়ন ৭ নং ওয়ার্ড মেম্বার ফারুক হোসেনের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার নলেজে নাই এবং কেউ আমাকে বলেও নাই, তাই আমি যাইও নাই। তবে যদিও এটা আমার এলাকা, আমি লোক মারফত এতটুকু শুনেছি যে ওখানে তাদের জমি আছে, তারা তাদের নিজেদের জায়গা বালু দিয়ে ভরাট করছে।

‘জমি থাকলে উপরে আছে, কিন্তু নদীতে কি তাদের জমি আছে?’ এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ‘না, নদী তো জলাশয়, এটা কেউ ভরাট করতে পারে না। আমি দেখে এ ব্যাপারে আপনাকে জানাতে পারবো।’

এ বিষয়ে পাথালিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি  পারভেজ দেওয়ানের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নদী ভরাটকরণের কাজ চলছে বলে আমিও শুনেছি। এ ব্যাপারে সরেজমিন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাভার উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) প্রণব রায়ের মুঠোফোনে নদীর অংশ ভরাটের বিষয়ে জানতে চেয়ে কল করা হল তিনি ব্যস্ত থাকায় কল রিসিভ করেন নাই। এজন্য এব্যাপারে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান কে বংশী নদীর সিন্দুরিয়া কবরস্থানে পাশে বালু দ্বারা ভরাট করার বিষয়ে জানানো হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন বিষয়টি তদন্ত করার জন্য লোক পাঠাবেন তিনি।

পরিবেশ আইনে সুস্পষ্ট বলা আছে, নদী এবং নদী প্লাবিত যে অংশ থাকে, সেখানে নদীর প্রবাহকে বিঘ্ন করে এমন  কোনো স্থাপনা সহ যে কোনধরনের প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা যাবে না। এমন কিছু কেউ বা কারো দ্বারা করা হলে আইনত দন্ডনীয় অপরাধ হবে। আর এখানে তো বংশী নদীতে বাঁশ গেড়ে আটকে সেখানে বালু দিয়ে নদী ভরাট করার কাজ চলছে! যার ফলে এই নদীর প্রবাহে বিঘ্ন ঘটবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment