জগন্নাথপুরে শিলা বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

 মোঃ হুমায়ুন কবীর ফরীদি,জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

জগন্নাথপুরে শিলা বৃষ্টিতে নলুয়ার হাওরের বোরো ফসল সহ বিভিন্ন ফল-মূলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে । ঝড়ের কারনে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। আজ ১ লা এপ্রিল রোজ সোমবার নলুয়ার হাওরে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, গত কাল ৩১ শে মার্চ রোববার বিকাল প্রায় ৪ ঘটিকা থেকে ৪ টা ২০ মিনিটের মধ্যে হাওর কন্যা খ্যাত সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দুইদফা শিলা বৃষ্টি আর ঝড়ের তান্ডবে উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওরের উত্তর, দক্ষিন ও পশ্চিমাংশে আনুমানিক ৩৫ শতাংশ জমির পাকা আধা পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও আম-কাঠাল সহ মৌসুমী বিভিন্ন ফুল -ফল ও শাক-সবজি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। হাওরপাড়ের কৃষক সুফি মিয়া বলেন, গতকাল ক্ষেতের পাকা ধান কাটার কথা ছিল। ধান কাটার শ্রমিকও নির্ধারণ ছিল।গতকাল রোববার ভোর থেকে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের জন্য ধান কাটতে পারিনি।এই দিন বিকালে দুই দফা শিলা বৃষ্টিতে জমির পাকা ধান ২৫ ভাগের মতো ক্ষতি হয়েছি। এবার তিনি ২৭ কেদার জমিতে বোরো ফসল আবাদ করেছিলেন। কৃষক আজাদ মিয়া ও তাজুদ মিয়া বলেন, বড় আশা করে কিছু জমি চাষাবাদ করেছিলাম,শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ের তান্ডবে সেই আশায় গুড়ে-বালি। পাকা ধান প্রায় ঝরেই পড়েছে।জমির অধিকাংশ থোড় আশা ধান গাছ শিলাবৃষ্টির আঘাতে নষ্ট হয়ে পড়েছে। যেখানে এক কেদার জমি থেকে ১৫/২০ মণ ধান পাওয়ার আশা ছিল এই জমি থেকে ৭/৮ মণ ধান সংগ্রহ করতে পারব কিনা সন্দেহ রয়েছে। হাওর বাঁচা সুনামগঞ্জ বাঁচা আন্দোলনের জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শিলাবৃষ্টিতে উপজেলার অন্যান্য হাওর থেকে বেশি ফসল ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে নলুয়া হাওরের উত্তর, দক্ষিন ও পশ্চিম অংশে। ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পাকা আধা পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে। জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার “দৈনিক আগামীর সময় ” পত্রিকাকে বলেন, প্রাথমিক ভাবে আমরা ধারানা করছি প্রায় ২ হেক্টর বোরো জমিনের পাকা ধান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে. কাঁচা ধানের ক্ষতির পরিমান সঠিকভাবে এই মহুর্তে বলা সম্ভব নয়।এবার জগন্নাথপুরের নলুয়া হাওরসহ উপজেলা ছোটবড় ১৫টি হাওরে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ফসল চাষাবাদ করা হয়েছে । এদিকে এমনিতেই সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীন জগন্নাথপুর উপজেলায় বিগত প্রায় এক মাস ধরে ঘন ঘন লোডশেডিং চলে আসছিল।গতকাল ৩১ শে মার্চ রোববার বিকাল প্রায় সাড়েতিন ঘটিকার পর থেকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আজ ১লা এপ্রিল তিন ঘটিকা পর্যন্ত একটানা প্রায় ২৩ ঘন্টা ধরে অত্র এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী ( বিদ্যুৎ) আজিজুল ইসলাম আজাদ বলেন,গতকাল রোববার উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ব্যাপক ঝড় বৃষ্টির তান্ডবে বিদ্যুৎ লাইনে গাছ-বাঁশ পড়েছে। যার ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। সংযোগ সচল রাখতে লাইন এর উপর থেকে গাছ-বাঁশ সরানোর কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment