ইডেন কলেজ ছাত্রলীগে ডিভোর্সী সহ-সভাপতি!

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগে ডিভোর্সী সহ-সভাপতি!

খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ ইউনিউনের ঘাটাখালি গ্রামের রহিমা খাতুন ওরফে সোনালী। নবম শ্রেণীতে থাকাকালীন বিয়ে হয় খালাতো ভাইয়ের সাথে। চার বছর ঘর সংসারের পর ২০১৫ সালে তাদের ডিভোর্স হয়। নাম বদলে রহিমা খাতুন হয়ে যায় সোনালী আক্তার। যিনি সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়েছেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটিতে।

সোনালী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী। তাকে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ না দেয়ায় সে ও কয়েকজন নেত্রী মিলে বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার অভিযোগ আছে।

সোনালীর বিয়ের কাবিননামা ও তালাকনামা নয়া দিগন্তের কাছে এসেছে। কাবিননামায় দেখা যায়, ২৭ মে ২০১১ সালে খুলনার কয়রা উপজেলার গোবরা পূর্ব চক গ্রামের আব্দুস ছালাম গাজীর ছেলে মেহেদী হাসান দিদারের সাথে বিয়ে হয় রহিমা খাতুনের (সোনালী)। এ সময় উকিল ছিল মঠবাড়ী গ্রামের মো: আব্দুস সাত্তার, সাক্ষীও ছিলেন দু’জন। পঞ্চাশ হাজার টাকা দেনমোহর করা হয়েছিল। তা ‘সম্পূর্ণ বাকী রইল’ বলে কাবিননামায় উল্লেখ করা হয়।

তালাক নামায় দেখা যায়, ২১ অক্টোবর ২০১৫ সালে মেহেদী হাসান দিদারুলকে তালাক দেয় রহিমা খাতুন সোনালী। তালাক নামায় স্বাক্ষী হয়ে স্বাক্ষর করেন তার বড় ভাই হাসানুল বান্না ও তার গ্রামের আল আমিন। সেখানেও পঞ্চাশ হাজার টাকার দেনমোহরের কথা উল্লেখ করা হয়। সেখানে তালাকের সিদ্ধান্ত হয় ১৫ জুলাই ২০১৫ আর লিখিতভাবে তালাক দেয় একই বছরের ২১ অক্টোবরে। তালাক নামায় সোনালীর ছবিও সংযুক্ত ছিল।

তবে বিয়ের কথা অস্বীকার করেন রহিমা খাতুন ওরফে সোনালী আক্তার।
তিনি বলেন, আপনি যে ঘটনাটি শুনেছেন সেটি সম্পুর্ণ বানোয়াট। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে আমার এলাকার ও ইডেন কলেজের কিছু লোকজন মিলে আমার বিরুদ্ধে এটি ছড়াচ্ছে।

প্রতিবেদকের হাতে প্রমাণ আছে জানালে তিনি বলেন, আপনি মিলিয়ে দেখেন এসব ভুয়া। এ সবের কোনো ভিত্তি নেই। কমিটিতে পদ পাওয়ার পর থেকেই আমার বিরুদ্ধে এসব শুরু হয়েছে। কারা করছে আমি জানি কিন্তু তাদের নাম বলবো না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোনালীর সাবেক স্বামী মেহেদী হাসান দিদারুল বলেন, সোনালী আমার খালাতো বোন। সে ক্লাস নাইনে থাকাকালীন পারিবারিকভাবে তার সাথে আমার বিয়ে হয়। সে যখন ঢাকা আসে তার আচার আচরণে পরিবর্তন হয়। তখন তার সাথে আমার সম্পর্ক খারাপ হয়। পরে আমি তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইলে সে নিজ থেকে আমাকে তালাক দেয়। তালাক নামায় যে স্বাক্ষর সেটা তার নিজের। এটা ভালোভাবে চেক করলে প্রমাণিত হবে। তার ভাইসহ আরেকজন তালাকনামায় স্বাক্ষর করে। তাদের স্বাক্ষর যাচাই করলেও প্রমাণিত হবে।

তার এলাকার মানুষের সাথে কথা বললে তারা বলেন, সোনালীর পরিবারের অবস্থা ভালো না হওয়ায় পারিবারিকভাবে সোনালীকে তার খালাতো ভাই মেহেদীর সাথে বিয়ে দেয়া হয়। ঢাকায় পড়তে যাওয়ার পর সোনালী অন্য আরেকজনের সাথে বিয়ে করে বলে শুনেছি। মেহেদীকে তালাক দেয়। যে সোনালীর পারিবারিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল সে সোনালী চাকরি বাকরি না করে কিভাবে সে আইফোন চালায়। বাড়িতে টাকা পাঠায়?

সোনালী ছাড়াও ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটিতে আরো কয়েকজন বিবাহিত নেত্রীর খোজ পাওয়া গেছে। তারা হলেন, সহ-সভাপতি সুষ্মিতা বাড়ৈ, সহ-সভাপতি মীম ইসলাম, যার স্বামী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক দফতর সম্পাদক দেলওয়ার হোসেন শাহজাদা।

এছাড়াও তথ্য প্রমাণ হাতে আসার অপেক্ষায় রয়েছে একাধিক নেত্রীর বিবাহিত জীবনের পরিচয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন