ছাদ থেকে গুঁড়া আমাদের গায়ে পড়ে, আমরা ভয়ে থাকি

ছাদ থেকে গুঁড়া আমাদের গায়ে পড়ে, আমরা ভয়ে থাকি

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ফুলবাড়ী জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের পাঁচটি শ্রেণিকক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ। ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে বেরিয়ে এসেছে রড। তাও মরীচিকায় ক্ষয়ে গেছে সব রড। এভাবেই শ্রেণিকক্ষে চলে পাঠদান। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় ও শিক্ষকদের অফিস কক্ষেরও একই অবস্থা।

প্রতিদিন এমন ভবনে পাঠদান করায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এতে আতঙ্কে থাকতে হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের।

জানা গেছে, ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ২০১৮ সালে জাতীয়করণ হয়। বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৮০০। এখানে রয়েছে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র। ১৯৬০ ও ৮০-এর দশকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে বিদ্যালয়ের দুটি ভবন নির্মিত হয়। কিন্তু দুই বছর আগ থেকে ভবন দুটিসহ ঝুঁকিপূর্ণ আরও আধাপাকা দুটি টিনশেড ঘরে পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষকরা।

তবে এ বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করার আবেদন জানিয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়ে একটি আবেদনও করেছে।

শিক্ষার্থী মণি জুঁই ও মণিকা বলে, আমাদের ক্লাসরুমের ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ছাদ থেকে গুঁড়া আমাদের গায়ে পড়ে। আমরা ভয়ে থাকি। এটি ভেঙে ফেলে নতুন ভবন নির্মাণ করলে আমাদের লেখাপড়া জন্য খুবই ভালো হবে।

সহকারী শিক্ষক আইয়ুব আলী ও আকতারা বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান করাতে গিয়ে আমাদের ভয়ে থাকতে হয়। এ ছাড়া শিক্ষকদের বসার রুমটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা মাঝেমধ্যে বাইরে গিয়ে বসি।

প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী খন্দকার জানান, আমাদের এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর শ্রেণিকক্ষের সংকট, শিক্ষকদের বসার জায়গা সংকট, প্রধান শিক্ষকের রুমের সংকট। ১৯৩৪ সালে নির্মিত ভবনগুলো পুরোনো ও জরাজীর্ণ। এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচে আমরা পাঠদান চালাচ্ছি। যত দ্রুত সম্ভব এখানে নতুন ভবন তৈরি করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।

উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আব্দুল হাই জানান, বিদ্যালয়টির ভবনগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি আমরা জানি। শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে, এতে তারা সব সময় আতঙ্কে থাকে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে আমি বিষয়টি সমাধানের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন দাস জানান, বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দুটি ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণার জন্য একটি আবেদন আমরা পেয়েছি। আবেদনটি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তরে পাঠিয়েছি। তাদের প্রতিবেদনের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন