জগন্নাথপুরে কোরবানির পশুর হাট জমজমাট, উপেক্ষিত স্বাস্থ্য বিধি

জগন্নাথপুরে কোরবানির পশুর হাট জমজমাট, উপেক্ষিত স্বাস্থ্য বিধি

মোঃ হুমায়ুন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) স্টাফ রিপোর্টারঃ

পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তে  জগন্নাথপুরে কোরবানির পশুর হাট জমজমাট হয়ে উঠেছে। দেশী গরুর মূল্য বেশী। হাটে মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্য বিধি।
আর মাত্র এক দিন পরই ২১ শে জুলাই রোজ বুধবার পবিত্র ঈদুল আযহা। এই ঈদকে লক্ষ্য করে হাওর কন্যা খ্যাত সুনামগঞ্জ জেলার অন্যতম প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলা জগন্নাথপুরে শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে পশুর হাট। ১৯ শে জুলাই সোমবার জগন্নাথপুর এর প্রাচীনতম পশুর হাট রসুলগঞ্জ বাজারের শেষ হাট ছিল। যার ফলে বাজার জুড়েই দেশী ও বিদেশি জাতের  প্রচুর গরু,ছাগল ও ভেড়া উঠেছে। বিশেষ করে দেশী জাতের কোরবানির পশুর চাহিদা ও মূল্য বেশী। বাজার জুড়ে মানুষের উপচে পড়া ভীড়। মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্য বিধি।

সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রসুলগঞ্জ বাজারে অন্য দিনের তুলনায় ১৯ শে জুলাই সোমবার হাটে বিভিন্ন জাতের গরি,ছাগল ও ভেড়া নিয়ে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন। ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড়। ক্রেতা -বিক্রেতাদের মধ্যে নেই স্বাস্থ্য বিধির বালাই। চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে গরু,ছাগল ও ভেড়া।

অনেকেই সামর্থ্য অনুযায়ী কোরবানির পশু ক্রয় করতে না পেরে হতাশ হয়ে বাড়ী ফিরছেন। আবার কেউ কেউ ঈদের আগের দিন অর্থাৎ ২০ শে জুলাই উপজেলা গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত গরুর খামার থেকে কোরবানির পশু ক্রয় করবেন বলে জানা গেছে।

ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, অন্য বছরের তুলনায়  কোরবানির পশুর হাটের চেয়ে এবার একটু দেরীতে বেচাবিক্রি জমে উঠেছে। তবে এবারের হাটে গরু, ছাগল ও ভেঁড়ার মূল্য অনেক বেশি । যা এর আগে এতো চড়া মূল্যে গরু- ছাগল বিক্রি হয়নি। এবার একদম ছোট আকারের দেশী  গরু বিক্রি হচ্ছে ৩৬ থেকে ৫৫ হাজার টাকায়। এধরনের আকারের ছোট গরু সাধারণত কেউ কোরবানি নিতে চান না। কিন্তু নিরুপায় হয়ে কেউ কেউ কিনছেন। তবে এ জাতের গরু ক্রয়ে প্রচন্ড অনিহায ক্রেতাদের। হাটে মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা খুবই বেশি। এ আকারের গরু ৭০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। একটু বড় আকারের গরু এক লাখ থেকে সর্বচ্চো দু থেকে তিন লাখ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

কোরবানির হাটে আসা বাবুল মিয়া নামের এক ক্রেতা বলেন, হাটে গরু বেশি থাকলেও চাহিদা অনুয়ায়ী পাচ্ছিনা। এরমধ্যে অতিরিক্ত দাম। এখনও কিনা হয়নি। হাটে ঘুরছি।
আরেক ক্রেতা রাহী বলেন, ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা মুল্যের সাইজের একটি গরুর মুল্যে। চাহিদা অনুয়ারী গরুই নেই। অনেকক্ষণ ঘুরে দেখেছি। শেষ পর্যন্ত ফিরে যাচ্ছি ঈদের শেষ হাট রবিবারে উপজেলা সদর বাজারে কিংবা কোন এক হাটে কিনবো।

হাটে আসা গরু ব্যবসায়ী রহমত আলী বলেন, হাটে দেশি গরুই বেশি। ক্রেতারা তাদের পছন্দ অনুয়ায়ী গরু কিনছেন। ন্যায়্য মূল্যের গরু বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
রসুলগঞ্জ বাজার তরাদক কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ  ইসলাম উদ্দিন জসীম বলেন, প্রাচীনতম এই রসুলগঞ্জ বাজারে কোরবানির হাটে জগন্নাথপুর ছাড়াও পাশ্ববর্তী ছাতক, বিশ্বনাথ উপজেলাসহ সিলেটর আশপাশ অনেক অঞ্চল থেকে ক্রেতা বিক্রেতার গরু-ছাগল বেচাবিক্রির জন্য ছুটে আসেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গরু ও ছাগলের দাম বেশি। তবে ক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুয়ারী গরু ছাগল কিনছেন।
পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক  ইউপি সদস্য আবু সাকের বলেন, ঐতিহ্যবাহী  রসুলগন্জ বাজারে আজ শেষ কোরবানির হাট বসে। দিনভর ক্রেতাদের উপস্থিতে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো বাজার এলাকা।শান্তুিপূর্ণ পরিবেশে হাট সম্পন্ন হয়েছে।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পদ্মাসন সিংহ  বলেন, জগন্নাথপুরে স্থায়ী দুইটি পশুর হাট রয়েছে। তমধ্যে রসুলগঞ্জ বাজার একটি। অপর হাটটি হলো রানীগঞ্জ বাজার। অস্থায়ী হাট রয়েছে বেশ কয়েকটি।
কোরবানির ঈদের শেষ মূর্হুতে পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন