জিন ছাড়ানোর নামে মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ!

যশোরের চৌগাছায় উপজেলায় ‘জিন ছাড়ানোর’ চিকিৎসা করতে গিয়ে এনায়েত আলী (৫০) নামে এক কবিরাজের বিরুদ্ধে দশ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) নির্যাতিত শিশুর বাবা চৌগাছা থানায় মামলা করেন।

কবিরাজ এনায়েত আলী উপজেলার তিলকপুর গ্রামের আমজেম আলীর ছেলে।

অভিযুক্ত কবিরাজ এনায়েত আলীকে (৬০) আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজীব। ভুক্তভোগী শিশুটি উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দা ও চৌগাছা শহরের একটি মাদরাসায় ৩য় শ্রেণির ছাত্রী।

ভিকটিমের পিতার অভিযোগ করেন, কিছুদিন আগে মেয়েটি হঠাৎ ভয় পেয়ে বাড়ির উঠানে পড়ে গিয়ে বমি করতে থাকে। এ সময় কবিরাজ এনায়েত আলী (৬০) তাদের বাড়িতে গিয়ে বলেন মেয়েটিকে জিনে ধরেছে। ঝাড়ফুঁক করলে ঠিক হয়ে যাবে। তার কথায় বিশ্বাস করে প্রতি শনি ও মঙ্গলবার মেয়েটিকে ঝাড়ফুঁক করানোর জন্য পাশের গ্রামের মানিকতলা দরগায় আমার স্ত্রীসহ নিয়ে যায়। পথিমধ্যে কবিরাজ আমার স্ত্রীকে বলে ঝাড়ফুঁক করানোর সময় অন্য কেউ থাকতে পারবে না। তখন আমার স্ত্রী এনায়েত আলীর সাথে আমার মেয়েকে দিয়ে গ্রামের জনৈক ব্যক্তির বাড়ির সামনে অপেক্ষা করতে থাকে। কিন্তু এনায়েত আলী আমার মেয়েকে মানিকতলায় না নিয়ে গ্রামের এক পেয়ারা বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। এভাবে একমাসে মেয়েটিকে চিকিৎসার নামে প্রতি শনি, মঙ্গলবারে ঝাড়-ফুকের নামে ৬/৭ দিন একই পেয়ারা বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে ১৮ আগস্ট আমার মেয়ে তার মার নিকট বিষয়টি খুলে বলে। এরপরও মান সম্মানের কথা চিন্তা করে আমরা স্থানীয় ডাক্তারের মাধ্যমে চৌগাছা শহরের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে চিকিৎসা করাই। চৌগাছা শহরের একটি মাদরাসায় তাকে রেখে আসি। কিন্তু আসামি এনায়েত আলী গত ২৫ অক্টোবর বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ওই মাদরাসায় গিয়ে নিজেকে আমার মেয়ের চাচা পরিচয় দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে চায়। তখন ওই মাদরাসার একজন শিক্ষক আমাকে মোবাইলে জানালে নিষেধ করি। পরে আমরা মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি।

ভিকটিমের স্বজনরা আরো জানান, এই ঘটনায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে একাধিকবার শালিসও হয়েছে। শালিসে অভিযুক্ত এনায়েত আলী নিজেই স্বীকার করেছে অন্তত ৭ বার মেয়েটিকে ধর্ষণ করেছে। মীমাংসার নামে সময়ক্ষেপণ করেছে। এনায়েতের লোকজন নানাভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে।

চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজীব বলেন, ঘটনাটি প্রায় আড়াই মাস আগের। বুধবার রাতে মামলা রেকর্ড হয়েছে। শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন