দোহারে নোংরা পরিবেশ ও মেয়াদহীন নিবন্ধনে চলছে ক্লিনিক

দোহারে নোংরা পরিবেশ ও মেয়াদহীন নিবন্ধনে চলছে ক্লিনিক
সাইফুল ইসলাম, দোহার-নবাবগঞ্জঃ
ঢাকার দোহারে নোংরা পরিবেশ ও মেয়াদহীন নিবন্ধনে চলছে কয়েকটি প্রাইভেট ক্লিনিক। প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মান নিয়েও রয়েছে নানান প্রশ্ন।
সরজমিনে উপজেলার লটাখোলা নতুন বাজারে অবস্থিত  লটাখোলা আশা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে টানানো নেই কোন নোটিশ বোর্ড। যে নোটিশ বোর্ডে থাকার কথা ছিলো ক্লিনিকের নিবন্ধনের বিবরন সহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনাবলি। ক্লিনিকের রোগিদের থাকার বেড গুলো অনেক পুরোনো ও নোংরা দেখা যায়। অপারেশন থিয়েটারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রগুলোও রাখা হয়েছে অযত্নে ও খোলামেলা অবস্থায়।
ক্লিনিকের ম্যানেজার মোক্তার হোসেন ছাড়া কোন ডাক্তার এবং পরিচালনা পর্ষদের কাউকে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকের ম্যানেজার মোক্তার হোসেন ক্লিনিকের কোন ধরনের কাগজ পত্রই সংবাদকর্মীদের দেখাতে পারেনি। এমনকি ক্লিনিকের ভিতরেই দেখা যায় মোটরসাইকেলের পার্কিং ব্যবস্থা।
পরে ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাঈম উর রহমানকে মুঠোফোনে ধরিয়ে দেন মোক্তার হোসেন। মুঠোফোনে কথোপকথনে নাঈম উর রহমান বলেন, ২০১৮-১৯ সাল পর্যšত নিবন্ধন মেয়াদ ছিলো, তারপর এখন পর্যন্ত নিবন্ধনের কাগজ পত্র আমরা পাইনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রট একাধিকবার এই লটাখোলা আশা ক্লিনিককে জরিমানা করে নবায়নের জন্য সময় দিলেও কোন প্রকার নির্দেশনা মানেনি ক্লিনিক কতৃপক্ষ।
অপরদিকে উপজেলার জয়পাড়া বাজারে অবস্থিত রেজিয়া ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গেলেও সেখানে তেমন কোন লোকজনের দেখা পাওয়া যায়না। ক্লিনিকটিতে নেই তেমন রোগীদেরও কোন আনাগোনা। ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায় রিসিপশনের চেয়ার খালি। দু’তলায় উঠতে সংবাদকর্মীদের উপস্থিত বুঝতে পেরে দ্রুত অপারেশন থিয়েটারের রুমে তালা মেরে দেয়। এসময় তারাহোরো করে তাদের একজন স্টাফকে ভিতরে রেখেই তালা দিয়ে সেখান থেকে চলে যায় আরেক স্টাফ।
অপারেশন থিয়েটারের আশেপাশে সব জিনিসেই ছিলো ধূলোর স্তুপ। অপারেশনের স্থানে দেখা যায় বিভিন্ন ওষধের খোলা প্যাকেট ও আবর্জনা। দেয়ালে ঝোলানো অগ্নি নির্বাপক বোতলে ছিলো মেয়াদহীন তারিখ।
সাংবাদিকদের উপস্থিতির কিছুক্ষণ পর হাজির হন ক্লিনিকের পরিচালক নুর মোহাম্মদ। প্রথমে তিনি নিজেকে চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচয় দিলেও পরে জানান তিনি ক্লিনিকটির পরিচালক। এসময় তার ক্লিনিকের নোংরা পরিবেশে রোগীদের যে সেবা দেয়া হচ্ছে সে বিষয়টি কোনভাবেই স্বীকার করতে তিনি নারাজ। পরবর্তীতে  কাগজপত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তেমন কোন সঠিক কাগজপত্র দেখাতে পারেনি নি। তার ক্লিনিকের নিবন্ধনের মেয়াদ তিন বছর আগে শেষ হলেও এখন পর্যন্ত মেয়াদহীন ভাবেই চলছে তার ক্লিনিক। এমনকি এই ক্লিনিকের স্টাফদের খারাপ আচরনেরও অভিযোগ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মো. জসিম উদ্দিন জানান, আমাদের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিদশৃন করে জরিমানার আওতায় এনে তাদের নবায়নের সময় দেয়া হয়েছে। যদি তারা নবায়ন না করে এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে থাকে তাহলে আমরা আবারও পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
এভাবে নিবন্ধনহীন ও নোংরা পরিবেশে তারা কতটুকু সঠিক সেবা দিচ্ছেন রোগিদের, নাকি শুধু ব্যবসাই খুচ্ছেন তারা এমন প্রশ্ন থেকেই যায়।
এব্যাপরে দোহার উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা মো. মোবাশে^র আলম জানান, দোহারে যে সকল ক্লিনিকগুলোকে নবায়নের সময় দেয়া হয়েছে তাদের সঠিক সময়ে নবায়ন করতে হবে। এছাড়া যদি কোন ক্লিনিকে খারাপ পরিবেবেশ ও নোংরা অবস্থায় রোগীদের সেবা প্রদান করা হয় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন