নবাবগঞ্জে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ

নবাবগঞ্জে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় আগলা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবু বক্কর চৌধুরী (পটল) এর বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

উপজেলার আগলা ছাঁতিয়া এলাকায় অবস্থিত আদর্শ গ্রাম। প্রায় ৫০ টি পরিবার বসবাস করেন এই আদর্শ গ্রামে৷ ভূমিহীনদের জন্য সরকার বরাদ্দ দেয় এই আদর্শ গ্রামের সম্পত্তি। এখানে প্রায় ২৫-৩০ বছর আগে তৎকালীন সময়ে বপনকৃত গাছ গুলোর মধ্যে মেহেগনি৷ কড়াই গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকটি কাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল স্থানীয় আগলা ইউনিয়নে ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবু বক্কর চৌধুরী ওরফে পটল; (১১মার্চ) সোমবার নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর এমনি অভিযোগ করেছে ঐ আদর্শ গ্রামের জনগণ। অভিযোগত্রে প্রায় ২০-৩০ জনের সাক্ষ্যরও রয়েছে।

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ আছে, (৯ মার্চ) শনিবার সকাল ৯ টা থেকে গাছ গুলো কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ছাঁতিয়া ঐ গ্রামের বাসিন্দা গাছ কাটূয় লিপ্ত জাহাঙ্গীর কন্ট্রাক্টরের লেবারকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, আমাদেরকে ৬ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবু বক্কর চৌধুরী (পটল) মেম্বার গাছ কাটার নির্দেশ দিয়েছেন৷ অভিযোগে আরও উল্লেখ্য আছে যে, আবু বক্কর চৌধুরী পটল মেম্বার তার নিজস্ব লোক দিয়ে ছাতিয়া আদর্শ গ্রামের সরকারি রাস্তার ঠিক নিচ থেকে কয়েকদিন যাবৎ অবৈধভাবে মাটি কেটে নিয়ে যায়। যার ফলে রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে৷

আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা মো. নুরুল ইসলাম নুরু বলেন, আমার জমির দলিল অনুযায়ী ৩ শতাংশ জায়গায় রয়েছে৷ এখানে আমার ৩ শতাংশ জায়গার মাঝে ৩-৪ টি বড় গাছ রয়েছেন৷ গাছ গুলোর ওখানে ঘর তুলার জন্য ইউপি মেম্বারকে জানালে তিনি আমার কাগজপত্র নিয়ে যান৷ কাগজপত্র নেওয়ার পর কয়েকজন লোক শনিবার সকালে গাছ কাটার জন্য লেবার নিয়ে আসেন৷ এবং দুইটা গাছ কেটেও ফেলেন৷ আমি গাছ কাটার লোকদের জিজ্ঞেস করেছি, কে পাঠিয়েছে তোমাদের তারা বলেন আবু বক্কর চৌধুরী (পটল) মেম্বার পাঠিয়েছে৷ ঐ দিনই মেম্বার আসলে তাকে বললাম গাছ গুলো কি বিক্রি করেছো নাকি, তিনি বলেন না বিক্রি করিনি৷

নুরু আরও বলেন, এই আদর্শ গ্রামের যে গাছ গুলো কাটা হয়েছে এই গাছ গুলো অনেক পুরোনো গাছ৷ এগুলোর মালিক আমি না৷ আমি আসার আগে থেকেই এখানে গাছ ছিল৷ এই গুলোর মালিক সরকার। সরকারি অনুমতি ছাড়া তো গাছ কাটা অন্যায়। মেম্বার গাছ কাটার ব্যাপারে কোন অনুমতি এনেছে কি না জানতে চাইলে নুরু বলেন, অনুমতি এনেছি কি না আমার জানা নেই৷ তবে, শুনেছি গাছ কাটার ব্যাপারে ভূমি অফিসে এসিল্যান্ডের বরাবর আবেদন দিয়েছিল কিন্ত কোন অনুমতি দেয়নি শুনেছি৷

স্থানীয়রা আরও বলেন, আমরা জানি গাছ গুলো সরকারি। বিগত প্রায় অনেক বছর ধরে গাছ গুলো দেখে আসছি। কিভাবে সরকারি কোন অনুমতি ছাড়া গাছ গুলো মেম্বার কেটে নিয়ে যাচ্ছিল৷ ঠিকাদাররা গাছ কাটতে আসলে তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলেছে মেম্বার পাঠিয়েছে গাছ কাটার জন্য। গাছ গুলো বেশ বড় আকারের এবং অনেক টাকা মূল্যের৷

প্রতিবেদককে স্থানীয় কয়েকজন বলেছেন, এই গাছ কর্তন করে কাঠ তৈরি করে নাকি আদর্শ গ্রামে অবস্থিত ভূমি অফিসের কাজে ব্যবহার করবে৷ কিন্ত ভূমি অফিসের কাজে ব্যবহার এবং গাছ কর্তনের বিষয়ে কোথায়ও থেকে কোন অনুমোদন নিয়েছেন; ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু বক্কর চৌধুরীর কাছে গাছ কাটার অনুমোদন এবং গাছ কেটে আদর্শ গ্রামের ভূমি অফিসের কাজে ব্যবহার করবে এমন অনুমোদনের কাগজ দেখতে চাইলে ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু বক্কর চৌধুরী কোন কাগজ দেখাতে পারে নি৷ এবং তার নির্দেশে গাছ কাটা হয়েছে তিনি অস্বীকার করেন৷

অন্যদিকে, এই প্রতিবেদনে আদর্শ গ্রামের বাসিন্দারা আবু বক্কর চৌধুরী (পটল) মেম্বারের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলে মঙ্গলবার বিকেলে তাদের হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ হুমকির বিষয়ে ইউপি সদস্য আবু বক্কর চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন এবং পরে কথা বলবে বলে মোবাইলের সংযোগ কেটে দেয়৷

নবাবগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার( ভূমি) মঞ্জুর হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এবিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment