মানিকগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা

মানিকগঞ্জে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নে নারী ওষুধ বিক্রেতাকে ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান হারুন সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই নারী বাদি হয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইবুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।

একজন চেয়ারম্যানের এমন নৈতিকতাবহির্ভূত অপকর্মে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে মামলা হলেও গত সোম-মঙ্গলবার বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধু পেশায় একজন ওষুধ ব্যবসায়ী। সেই সুবাদে উপজেলার বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুনার রশিদ হারুন ওই নারীর ওষুধের ফার্মেসিতে সময়ে অসময়ে আসা যাওয়া করতো, মাঝে মধ্যেই ইশারা ইঙ্গিত করে অশ্লীল কথা বার্তা বলতো, এরই ধারাবাহিকতায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বলে ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক পর্যায়ে বাদীনিকে জিম্মি করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

ধর্ষণকালে চেয়ারম্যানের ভাগ্নে মামলার ১ নং আসামী আসিফুর রহমান ওরফে রাশেদুল ইসলাম তার মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও চিত্র ধারণ করে। পরে ওই ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে এবং ওই গৃহবধুর স্বামীকে দেখাবে বলে ভয় দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সে অসংখ্যবার ধর্ষণ করে। ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ ও আসিফুর রহমান সম্পর্কে মামা-ভাগ্নে বলে জানা গেছে।

চেয়ারম্যানের ভাগ্নে আসিফুর রহমান মামা হারুনার রশিদকে না জানিয়ে গোপনে ওই গৃহবধুকে ধর্ষণের ভিডিও ও নগ্ন ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূর কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

মামলা সূত্রে আরো জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হারুনের ভাগ্নে গৃহবধুর বাড়িতে ও কক্সবাজারে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। আসামি আসিফুর রহমান কৌশলে বাদিনীর ফেসবুক আইডি ও পাসওয়ার্ড নিয়ে ধর্ষণের ভিডিও ও নগ্ন ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আবারো ১ লাখ টাকা দাবি করে, টাকা না দেওয়ায় আসিফুর রহমান উপজেলার বরাইদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সাইদ, ইউনিয়ন প্রচার লীগের সভাপতি আব্দুস সালাম শফিক ও রিপনের মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ও নগ্ন ছবি ছড়িয়ে দেয়।

পরে বাদী এ বিষয়ে সাটুরিয়া থানায় মামলা করতে গেলে আসামিরা ওই গৃহবধুকে হুমকি ধামকি দিয়ে জানে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হারুন প্রভাব খাটিয়ে সালিশের মাধ্যমে ওই গৃহবধুকে এলাকা ছাড়া করার পায়তারা করে। পরে বাদীনি উপায়ান্তর না পেয়ে জীবন বাঁচাতে বাবার বাড়িতে চলে যায়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হারুন নিজের দোষ অস্বীকার করে বলেন, আমি ধর্ষণ করিনি, আমার ভাগ্নে আসিফুর রহমান ধর্ষণ করেছে। মেয়েটিকে এলাকা ছাড়া করার বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, মেয়েটি খারাপ তাই সালিশের মাধ্যমে আমি তাকে এলাকা ছাড়া করেছি।

মামলার বিষয়ে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মামলাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, পিবিআইয়ের একটি টিম ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে মাঠে কাজ শুরু করেছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন