রাণীনগরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তিনদিনের রাস পূজা অনুষ্ঠিত

রাণীনগরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তিনদিনের রাস পূজা অনুষ্ঠিত
বিকাশ চন্দ্র প্রাং, নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর রাণীনগরে মহামারী থেকে মুক্তি লাভের প্রার্থনায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তিনদিনের রাস পূজা শনিবার শেষ হচ্ছে। রাস পূর্ণিমার প্রথম দিন (বৃহস্পতিবার) থেকে তৃতীয় দিন পর্যন্ত এই রাস পূজা চলে। উপজেলার বড়গাছায় বৃহত্তম রাস মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় রাস পূজা।
এই মন্দিরে ৩৯টি প্রতিমা স্থান পায়। এসময় হাজার হাজার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মন্দিরে পূজা অর্চনা প্রদান করে। এই পূজাকে ঘিরে মন্দিরের আশেপাশে বসে মেলা, মাছের বাজার, হরেক রকমের মিষ্টির দোকান। এই পূজাকে ঘিরে বড়গাছাগ্রামসহ আশেপাশের অঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে আগমন ঘটে আত্মীয়দের সমাগম। চারিদিকে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে কয়েকদিন যাবত। রাতে মন্দিরে আলোকসজ্জায় ফুটে তোলা হয়।
মহামারী অবস্থার মধ্যে এবারের রাস উৎসব শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে রাসপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবলু সাহা জানান। তিনি বলেন, “পাপ মোচন ও পুণ্য লাভের আশায় উৎসবের প্রথম দিন থেকেই পর্যটকদের ঢল নামে। পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে করোনা থেকে মুক্তি পেতে সকলেই প্রার্থনা করেছেন। অনেকে আবার ভিন্ন ভিন্ন মানত করে পূজা দিয়েছেন। শনিবার শেষ হচ্ছে তিনদিনব্যাপী এই রাস পূজা”
প্রায় দু’শ বছর ধরে শ্রী কৃষ্ণের রাস লীলাকে ধারন করে এই রাস মেলা বা রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বলে তিনি জানান। তিনদিনের এ উৎসবে মুখরিত হয় জন-মানুষের মিলন মেলায়। শুধু পুণ্যার্থীরাই নয়, নানা ধর্ম-বর্নের মানুষ মিলিত হয় রাস লীলা ও পূজায়।
নওগাঁ থেকে আসা আশিষ কুমার ঘোষ, চপল সরকারসহ অনেকেই বলেন আমার একটি মনের বাসনা ছিল, মানত ছিল। সেটি পূর্ণ হয়েছে এখানে এসে। এছাড়াও বিশ্বের সকল জীবের মঙ্গল কামনায় সৃষ্টিকর্তার কাছে কায়মনে প্রার্থনা করেছি।”
নওগাঁ থেকে আসা আরেক পর্যটক আব্দুর রউফ পাভেল, সাহেব আলী বলেন, “ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। আমরা এখানে আগে কখনও আসিনি। শুধু লোকমুখে শুনেছি তাই আজকে এসে দেখলাম রাস মন্দিরে পূজা। খুব ভালো লেগেছে। খুবই সুন্দর পরিবেশে। বেশ উপভোগ করলাম।”
বড়গাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি স্বদেশ সরকার বলেন অত্র অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী উৎসব হচ্ছে এই রাসপূজা। তবে এবার কোন সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজন করা হয়নি। তবে শতবছরের ঐতিহ্যবাহী রাস মন্দিরটি এখনোও অনেক অবহেলিত। তাই সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ঐতিহ্যবাহী মন্দিরটি আরো আধুনিকায়ন করা সম্ভব হতো।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিন আকন্দ বলেন উপজেলার সবচেয়ে বড় রাস মন্দির হচ্ছে বড়গাছা রাস মন্দির। এই রাস মন্দিরে পূজার শুরু থেকেই আইন-শৃঙ্খলার বিষয়ে সুদৃষ্টি রাখা হয়েছিলো। শান্তিপূর্ন ভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের পূজার কাজ শেষ করেছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন