লৌহজং পদ্মা চরবাসীদের সুখ-দুঃখ (পর্ব-২)

লৌহজং পদ্মা চরবাসীদের সুখ-দুঃখ। মাদক এবং জুয়া শান্তির জনপদে অশান্তির ছায়া। (পর্ব-২)

মোঃ মানিক মিয়া, স্টাফ রিপোর্টার (মুন্সীগঞ্জ)!!

বিগত আড়াই দশক আগে থেকে শুরু হয়ে এক দশক পদ্মার ভয়াল গ্রাসে ধীরে ধীরে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার বাড়িঘর, হাটবাজার, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ফসলের মাঠ, জনপদ ও রাস্তাঘাট একে একে পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়। উপজেলার প্রায় ২০টি গ্রামের কোনো কোনোটি আংশিক, কোনোটি পুরোপুরি পদ্মার অতল তলে হারিয়ে যায়।

লৌহজং পদ্মা চরবাসীদের সুখ-দুঃখ। মাদক এবং জুয়া শান্তির জনপদে অশান্তির ছায়া। (পর্ব-২)

স্থানীয় মানুষজন তখন যে যেভাবে পেরেছে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজে নিয়েছে। এরপর গত দেড় দশক আগে পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া স্থানে চর জেগে ওঠে। বেশিরভাগ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ তখন থেকে জেগে ওঠা চরে ঘর তুলে বসবাস করতে শুরু করে। তখন থেকে ফসল ফলিয়ে ও গবাদিপশু পালন করে চরের বাসিন্দারা জৌলুস জীবনযাপন না করতে পারলেও অন্তত খেয়েবর্তে বেঁচে ছিল। সেই নতুন চরের মাটিতে কোনো অশান্তি কিংবা নোংরামি ছিল না। কিন্তু গত কয়েক বছরে সাবেক এলাকা থেকে এসে কতিপয় দুর্বৃত্তরা চরের কিছু নির্দিষ্ট স্থানকে মাদকসেবন ও জুয়া খেলার স্পট বানিয়ে ফেলেছে। লোকালয়কে এড়িয়ে চরাঞ্চলের নির্জন স্থানে এসে তারা নিজেরাই শুধু মাদকদ্রব্য সেবন কিংবা জুয়া খেলায় মত্ত থাকে না, সেই সাথে চরের কিশোর ও যুবকদের এই সর্বনাশা পথে ঠেলে দিচ্ছে দিনকে দিন। একদিকে চরের বাসিন্দারা এ নিয়ে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না, অন্যদিকে ভয়াবহ এ নেশার জগৎ থেকে পরিত্রাণের উদ্যোগ নিচ্ছে না কেউ। জাতীয় দৈনিক আগামীর সময় পত্রিকার মুন্সীগঞ্জ জেলার স্টাফ রিপোর্টার খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে, কনকসার ইউনিয়নের ক্ষমতাসীন দলের এক প্রভাবশালী নেতার ভাতিজা লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের পাইকারা গ্রামের কড়ই গাছ তলা ও ঠিক এই স্থান থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত কোলপাড় নামক স্থানে প্রতিদিন জুয়ার আসর বসায়। বিকেল ৪ টা থেকে রাত ১০/১১টা পর্যন্ত চলে এ জুয়ার আসর। প্রায় ১৫/২০ জন জুয়ারি প্রতিদিন উল্লেখিত স্থানে জমায়েত হয়। আর ইয়াবা ও গাঁজার আসর বসে ঝাউটিয়া গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল দেওয়ানের মুদি দোকানের দক্ষিণে একটি বাড়িতে। সেখানে প্রতিদিন ইয়াবা ও গাঁজা সেবনকারীরা জমায়েত হয় সন্ধ্যার পর পরই। প্রভাবশালী মাদক ও জুয়ারীদের কিছু বলার সাহস পায় না স্থানীয় ইউপি সদস্যরাও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন চরবাসী জানান, থানা পুলিশ এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলে মাদক ও জুয়া থেকে চরাঞ্চলকে মুক্ত করা সম্ভব।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment