বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর পণ্য খালাসের মাধ্যমে আজ শনিবার আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হচ্ছে পায়রা সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা ১১টায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে পায়রা সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে উপকূলীয় এলাকায় বইছে আনন্দের বন্যা। পায়রা বন্দর উদ্বোধনকে ঘিরে কলাপাড়া পৌরশহরসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে শোভা পাচ্ছে রঙ-বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন এবং পোস্টার। পায়রা বন্দরের প্রবেশ দ্বারে নির্মাণ করা হয়েছে বর্ণাঢ্য গেট। বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বজনদের বাড়িতে এসে পৌঁছেছেন মানুষ। প্রতীক্ষার পায়রা বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রম হবে এবং সেই বন্দরের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করবেন বলেই কলাপাড়ায় মানুষদের ছুটে আসা। এমনটি জানিয়েছে বরগুনা থেকে আগত ইদ্রিস মুন্সি।
গত ১ আগস্ট বিকালের দিকে মাদার ভ্যাসেল এমভি ফরচুন বার্ড চিন থেকে সমুদ্র পথে ৫৩ হাজার টন পাথর পদ্মা সেতুর জন্য পায়রা সমুদ্র বন্দরের বহির্নোঙরে আসে। আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি নৌপথে শুরু হবে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে সমুদ্রবন্দর কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার রামনাবাদ চ্যানেলের তীরে নির্মিত হয়েছে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা। বিদ্যমান দুটি বন্দরের পাশাপাশি তৃতীয় একটি বন্দর নির্মাণের মাধ্যমে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে নেওয়া হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি ও চতুর্মুখী পরিকল্পনা। ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মহা পরিকল্পনা নিয়ে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর সংসদে পাস হয় পায়রা বন্দর অধ্যাদেশ-২০১৩। একই বছর ১৯ নভেম্বর বন্দরের ভিত্তি ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পায়রা বন্দরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপটেন সাইদুর রহমান (ট্যাজ) জানান, বর্তমানে পায়রা সমুদ্র বন্দর এলাকায় চলছে বিরামহীন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড। ১৬ একর জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে জেটি ও অত্যাধুনিক কনটেইনার ক্যারিয়ার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শুল্ক স্টেশন, নিরাপত্তা ভবন এবং বন্দর পন্টুনে সরাসরি ট্রাক বা কনটেইনার লরি প্রবেশের জন্য অভ্যন্তরীণ রাস্তা। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে শিপিং এজেন্ট, সিঅ্যান্ডএফ, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার। রামনাবাদ চ্যানেলের লালুয়া ও ধুলাসার থেকে প্রায় সাত হাজার একর জমি অধিগ্রহণের কাজও প্রায় সম্পন্ন। বিমানবন্দর গড়ে তোলাসহ থাকবে নৌবাহিনীর ঘাঁটি বিএনএস শের-এ-বাংলা। চার লেনের মহাসড়ক ও ডাবল গেজ রেললাইনে যুক্ত হয়ে পরিপূর্ণভাবে বন্দরটি চালু হবে ২০২৩ সালে।