যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ফাঁসির দন্ডপ্রান্ত আসামি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরির ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জামাত নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে আরমানের হদিস মেলেনি আজও। আজ (১৩ আগষ্ট) শুক্রবার পর্যন্ত পুলিশ তাদের সন্ধান দিতে পারেনি। তারা কোথায় আছেন, কারা তাদেরকে তুলে নিয়ে গেছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবার ও স্বজনরা।
গত ৪ আগস্ট হুম্মাম কাদের চৌধুরীকে ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণ থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়। ঘটনার পর হুম্মামের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হুজ্জাতুল ইসলাম আল ফেসানি মিডিয়া কর্মীদের জানান, ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ট্রাইব্যুনালের রায় ফাঁসের ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিতে গেলে গাড়ি থেকে নামার পর ডিবি পরিচয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়।
হুম্মামের অপর আইনজীবী চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব রাগিব ওই দিন সাংবাদিকদের জানান, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী গতকাল তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান। কিন্তু গাড়ি থেকে নামার পরপরই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের নিচ থেকে কয়েকজন লোক নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে হুম্মামকে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায় ফাঁসের মামলায় তথ্যপ্রযুক্তি ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে আসেন হুম্মাম ও তার মা ফারহাত কাদের চৌধুরী। হুম্মাম সামনের আসনে চালকের পাশে ও তার মা পেছনের আসনে বসা ছিলেন। তারা ঢাকার দায়রা জজ আদালতের সামনে পৌঁছলে আরো মামলায় আটকের কথা বলে হুম্মামকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে যায় ডিবি পরিচয়ধারী পাঁচ থেকে ছয়জন। এরপর থেকেই হুম্মাম নিখোঁজ। অবশ্য ঘটনার পর থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে হুম্মামকে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার রাতে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছোট ছেলে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেম আরমানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সাদা পোশাকধারীরা রাজধানীর মিরপুরের ডিওএইচএসের বাসা থেকে তাকে নিয়ে যায় বলে পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ওই রাত সোয়া ৯টার দিকে ৬-৭ জনের সাদা পোশাকের একদল লোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ব্যারিস্টার আরমানের মিরপুরের ডিওএইচএসের বাসায় যায়। এ সময় আরমান দরজা খুললে তাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় ওই অজ্ঞাত লোকজন। পরিবারের সদস্যরা কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে কি না জানতে চাইলে তারা কোনো জবাব দেয়নি। এরপর থেকেই আরমান নিখোঁজ। আজ শুক্রবার পর্যন্ত জানা যায়নি আরমান কোথায়, কী অবস্থায় আছেন। আরমান বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী। তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একজন ডিফেন্স ল’ইয়ার। তারও কোনো হদিস দিতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।সূত্র: নয়াদিগন্ত