তিন ঘণ্টায় দুই সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে পদ্মায়, ৩০টি গ্রাম প্লাবিত

তিন ঘণ্টায় দুই সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে পদ্মায়, ৩০টি গ্রাম প্লাবিত

ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় কুষ্টিয়ায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় পদ্মার পানি বিপজ্জনক হারে বাড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশঙ্কা, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে। কারণ, প্রতি তিন ঘণ্টায় সেখানে ২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। এরই মধ্যে অবশ্য দৌলতপুর উপজেলার ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ।

Eid Special offer UpTO 65% Discount LED, 3D, Smart LED 4K TV - SONY BRAVIA, SAMSUNG led

এদিকে রাজশাহীতেও পদ্মার পানি বাড়ছে। পাউবো’র স্থানীয় কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, সেখানেও আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (শুক্রবার সন্ধ্যা) পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। সেখানে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
পাউবো’র স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, পদ্মায় পানির বিপদসীমা হলো ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার। সেখানে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ১৪ দশমিক ৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে। অর্থাৎ, বিপদসীমা থেকে দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার দূরে।

তিন ঘণ্টায় দুই সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে পদ্মায়, ৩০টি গ্রাম প্লাবিত

পাউবোর পানি পরিমাপ কাজে নিয়োজিত এক কর্মকর্তা জানান, প্রতি তিন ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, ১৮ আগস্ট পদ্মায় পানির মাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৩২ সেন্টিমিটার। ১৯ আগস্ট ছিল ১৩ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। ২৫ আগস্ট ছিল ১৩ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার।

পদ্মার সঙ্গে-সঙ্গে এর প্রধান শাখা গড়াই নদেও পানি বাড়ছে। পাউবো বলছে, পদ্মা নদী ও গড়াই নদের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও বাঁধগুলোতে নজর রাখা হচ্ছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নৈমূল হক বলেন, ‘যে গতিতে পানি বাড়ছে, তাতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে। ভারতের বিহার রাজ্যে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। ভারত তাদের ফারাক্কা বাঁধ খুলে দিয়েছে। এসব কারণে পদ্মায় পানি বেড়ে যাচ্ছে।’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চল পানি পরিমাপ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক কে এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ফারাক্কায় প্রতি বছরই কয়েকটি করে গেট খুলে দেওয়া হয়। এবার তার চেয়ে বেশি গেট খুলে দেওয়ায় পানি বাড়ার হার বেশি।’

এদিকে পদ্মায় পানি বাড়ায় দৌলতপুরের চিলমারী ও রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। এসব গ্রামের প্রায় প্রতিটি ঘরেই পানি ঢুকেছে। এতে করে ঘরে মজুদ রাখা পাট, ধান ও মরিচসহ অনেক প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। দেখা দিয়েছে খাবার পানির সংকট।

চিলমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈয়দ আহমেদ বলেন, ‘পদ্মার পানি বাড়ায় চিলমারীর ১৮টি গ্রামের ৪০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে তারা।’

রামকৃঞ্চপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিরাজ উদ্দিন জানান, সেখানকার চরাঞ্চলের ১২টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুজিব উল ফেরদৌস জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের পুরো বিষয়ের ওপর নজর রাখতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে চিলমারীতে ছয় টন চাল দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী প্রস্তত আছে বলেও দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে রাজশাহী প্রতিনিধি জানান, রাজশাহীতে পদ্মার বিপদসীমা হলো ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় সেখানে পানির উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৩১ মিটার। অর্থাৎ, বিপদসীমা থেকে ১৯ সেন্টিমিটার কম। শুক্রবার সকাল ৯টায় সেখানে পানির এই উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ২৮ মিটার। তার মানে, সেখানে ৯ ঘণ্টায় পানির উচ্চতা ৩ সেন্টিমিটার বেড়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment