রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের ৩৩ নম্বর হাউজিংয়ের একটি বাসায় পুলিশ ও ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের অভিযানে ‘মেজর মুরাদ’ নামে এক জঙ্গি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তিনি নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা তামিম চৌধুরীর ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রূপনগরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন।
এ সময় রূপনগর থানার ওসি সৈয়দ শহীদ আলম, পরিদর্শক (তদন্ত) শাহীন ফকির ও এসআই মো. মোমেনুর রহমান আহত হন। তারা বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, নিহত মুরাদ ছিলেন গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড জঙ্গি নিহত তামিম চৌধুরীর সেকেন্ড ইন কমান্ড। নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় যেদিন হামলা হয়েছিলো তার পরদিন মিরপুরের রূপনগরে মেজর মুরাদকে ধরতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সদস্যরা অভিযান চালিয়েছিলো। কিন্তু নারায়নগঞ্জে অভিযানের খবর পেয়েই মুরাদ তার রূপনগরের ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। একারণে তাকে আর সেদিন ওই বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
তিনি আরো জানান, মুরাদকে ওই বাসায় না পাওয়া গেলে বিষয়টি গোপন রেখে বাড়িওয়ালাকে বলে আসা হয়, মুরাদ আসা মাত্রই তিনি যেন বিষয়টি পুলিশকে জানান। গতকাল মুরাদ ঘরের মালপত্র নিয়ে যেতে আসলে বাড়িওয়ালা রূপনগর থানায় খবর দেয়। রাতে ওই ভবনে অভিযান চালালে পুলিশকে লক্ষ্য করে মুরাদ হামলা চালায়। এতে পুলিশের ৩ সদস্য আহত হন। কিন্তু থেমে থাকেনি অভিযান। একপর্যায়ে পুলিশের অভিযানে মুরাদ নিহত হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের (সিটি) প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, নিহত জঙ্গির নাম কথিত মেজর মুরাদ ওরফে রনি। সে ছিল নব্য ধারার জেএমবির প্রধান সামরিক প্রশিক্ষক। গুলশান ও শোলোকিয়ায় জঙ্গি হামলায় যেসব বিপদগামী যুবক অংশ নিয়েছিল, তাদের আগ্নেয়াস্ত্রের প্রশিক্ষণ দিয়েছিল এই কথিত মুরাদ। গাইবান্ধার চরে হয় এই অস্ত্র প্রশিক্ষণ। নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ার জঙ্গি আস্তানায় তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। বেশিরভাগ সময় থাকতো তামিম চৌধুরীর সঙ্গে।
তিনি জানান, গত ২৮ আগষ্ট পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের কর্মকর্তা জানতে পারেন কথিত মেজর মুরাদ রুপনগরের একটি বাড়িতে পরিবারসহ থাকে। পরে ওইদিন সিটির একটি টিম ওই বাড়িতে গেলে তালা মারা দেখতে পায় মুরাদের ফ্ল্যাট।
পুলিশকে বাড়িওয়ালা জানান, গত ২৭ আগষ্ট সন্ধ্যায় মুরাদ তার ফ্ল্যাট তালা মেরে পরিবারসহ বেরিয়ে গেছে। তখন পুলিশ বাড়িওয়ালা ও দারোয়ানকে বলে আসে ফের মুরাদ বাসায় আসলে যেন তাদের জানানো হয়। গতকাল মুরাদ বাসায় আসার পর বাড়িওয়ালা টেলিফোনে রুপনগর থানা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। তখন রুপনগর থানার ওসি ও ইন্সপেক্টর তদন্ত টিম নিয়ে রাতে ওই বাড়িতে যায়।