জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একাত্তরের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ‘মেমরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা ‘বিশ্বের স্মৃতি’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় গতকাল ২২ নভেম্বর ২০১৭ রোজ বুধবার নিউইয়র্কে মহানগর আওয়ামী লীগ ও প্রাক্তন ছাত্রলীগের নের্তৃবৃন্দ আনন্দ সমাবেশ এর আয়োজনে করে।
নিউইয়র্কে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাকারিয়া চৌদুরীর সভাপতিত্বে এ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে প্যানেল মেয়র ডেইজী সারওয়ার, সিলেট সিটি কর্পোরেশন কাউন্সিলর, আজাদুর রহমান আজাদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান ও আব্দুল হাসিব মামুন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মিসবাহ আহমেদ, উপ-প্রচার সম্পাদক তৈয়বুর রহমান টনি, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল কাদের মিয়া, আবুল হুসেন ও মাসুদ হুসেন সিরাজি। অন্যান্য নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আরবাব সিমন, সদস্য মোঃ মাহফুজুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক, সুমন মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক, নান্টু মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে প্যানেল মেয়র ও সংরক্ষিত নারী আসনের ৩১, ৩৩ ও ৩৪ নং ওয়ার্ডের উন্নয়নের রূপকার জনপ্রিয় ও জননন্দিত সফল কাউন্সিলর এবং বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ডেইজী সারওয়ার বলেন, ইউনেস্কো ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছে ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যায় না।
তিনি আরো বলেন, জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে এ দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণে সোহওয়ার্দী উদ্যানে লাখো মানুষ সমাবেত হয়েছিল। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সোহওয়ার্দী উদ্যানে মানুষ এসেছিলেন। ধীরে ধীরে একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি জাতিকে স্বতন্ত্র জাতিসত্তার চেতনায় তিনি জাগ্রত করেছিলেন তার আন্দোলন সংগ্রামের পথ ধরে। আর সেই বাঙালি এসেছিল দিক-নির্দেশনা নিতে। ডেইজী সারওয়ার বলেন পৃথিবীতে আর কোনো ভাষণ এতবার বাজানো হয়নি। ৭ মার্চের ভাষণ যতবার বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, ততবার বাঙালিরা জাগ্রত হয়েছে। কিন্তু এই ভাষণকে কখনো বন্ধ করে রাখতে পারে নাই। পঁচাত্তরের পর অবৈধভাবে যারা ক্ষমতা দখল শুরু করেছিল, যারা এ দেশের মাটিতে জন্মগ্রহণ করেনি, এ দেশ মাটির প্রতি যাদের কোনো মায়া ছিল না, তারাই বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। সেটাই আজ প্রমাণিত হয়েছে।
ডেইজী সারওয়ার বলেন, ‘যতই মুছে ফেলার চেষ্টা করুক, ইতিহাস তার জায়গা করে নেবে। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির মাধ্যমে সেটাই প্রমাণ হয়েছে। আজ যখন ইউনেস্কো এই ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে তখন কি তাদের সম্মানে লাগে না? পাকিস্তানিরা আমাদের সব সময় দাবিয়ে রাখত। কোনো অধিকার বাঙালির ছিল না। পশ্চিম পাকিস্তানিদের কাছে বাঙালিরা সব সময় অত্যাচার, শোষণ করেছে। কিন্তু তারা আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারে নাই। অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে আমাদের এই স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি। ৭ মার্চের ভাষণে জাতির পিতা সমগ্র বাংলাদেশের জনগণের ২৩ বছরের বঞ্চনা, শোষণ, নিপীড়নের কথা বলেছিলেন। সেই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি একটি জাতিকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছিলেন।
ডেইজী সারওয়ার বলেন, ‘জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। আমাদের প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা, জাতির পিতার সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবেন। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যে’র স্বীকৃতি দেওয়ায় ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জানান ডেইজী সারওয়ার।