বাবা নিশ্চয় অনেক খুশি হয়েছে : অনিক

বাবা নিশ্চয় অনেক খুশি হয়েছে : অনিক

১৯ বছর বয়সি তরুণ ক্রিকেটার কাজী অনিক। গড়নে ঠিকঠাক। কিন্তু চেহারায় এখনো কৈশরের ছাপ, প্রাণোচ্ছ্বল। দেখলে মনে হবে মাত্রই বুঝি কলেজ থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তরুণ এ ক্রিকেটারের কাঁধে বড় দায়িত্ব দিয়ে দিলেন টি-টোয়েন্টির দুবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। উপদেশ দিলেন, ‘নিজের বোলিংটা করো।’

বাবা নিশ্চয় অনেক খুশি হয়েছে : অনিক

বিপিএলের অভিষেক ম্যাচে আজ কাজী অনিক যখন বোলিংয়ে এলেন, তখন চিটাগং ভাইকিংসের ১৩ ওভারে প্রয়োজন ১০২ রান। চিটাগংয়ের হাতের মুঠোয় ম্যাচ। আগের ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে ৭৩ রানের ইনিংস খেলা এনামুল হক বিজয় তখন ব্যাটিংয়ে। মুস্তাফিজকে ছক্কা ও সামিকে চার হাঁকিয়ে এনামুল আজও দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন। রাজশাহীর জয়ের জন্য তাকে ফেরানোর দরকার ছিল। ২২ গজে প্রথম ওভারেই দলের হয়ে কাজটা করে দেন বাঁহাতি পেসার অনিক। শর্ট এবং স্লোয়ার ডেলিভারিতে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন বিজয়। প্রথম ওভারেই উইকেট পেয়ে অধিনায়কের আস্থা অর্জন করে অনিক। তাই তাকে শেষ দিকের ওভারের জন্য তুলে রাখেন স্যামি।

১৬তম ওভারে ফিরে এসে আবারো প্রথম বলে উইকেট। সেটাও চিটাগংয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭ রান করা স্টিয়ান ভন জিলের। তার শর্ট বলে লং অনে ক্যাচ দেন জিল। দারুণ দক্ষতায় বল তালুবন্দি করেন উসামা মির। ১৮তম ওভারে ফিরে এসে অনিক তুলে নেন সানজামুল ইসলাম ও তানভীর হায়দারের উইকেট। শেষ ওভারে অনিক যখন বল করতে আসেন, ততক্ষণে রাজশাহীর জয় নিশ্চিত। কারণ ৬ রানে চিটাগংয়ের দারকার ছিল ৩৫ রান। উইকেটে তাসকিন ও নাঈম হাসান। নিজের অভিষেক বিপিএল রাঙিয়ে রাখতে অনিকের দরকার ১ উইকেট, রাজশাহীর জয়ের জন্যও তাই।

৫ উইকেট পাওয়ার মঞ্চ ঠিকই প্রস্তুত ছিল, কিন্তু উইকেটরক্ষক জাকির হাসান দ্বিতীয় বলে তাসকিনকে করে দেন রানআউট। তাতেই স্বপ্নভঙ্গ অনিকের! ১৭ রানে ৪ উইকেটে শেষ তার প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ৫ উইকেট না পেলেও মন খারাপ নেই তার। কারণ তরুণ এ তুর্কি পূরণ করেছেন বাবার স্বপ্ন। বিপিএলের মঞ্চে অনিককে দেখতে চেয়েছিলেন কাজী বসিরুল ইসলাম।

মালয়েশিয়া থেকে ফিরে এসে বিপিএলের মঞ্চে রাঙিয়ে অনিক বলেন, ‘যখন থেকে আমি রাজশাহী কিংসের যোগ দিয়েছি, তখন থেকেই ভালো কিছু করার চেষ্টা করেছি। ভালো কিছু করতে পেরেছি বলে ভালো লাগছে। ভালো পারফরম্যান্স করছি ভালো লাগছে। বাবা নিশ্চয়ই অনেক খুশি হয়েছে এতটুকু জানি। নিশ্চিতভাবে আরো বেশি খুশি হয়েছে চার উইকেট পেয়েছি বলে।’

ম্যাচ শেষে ড্যারেন স্যামির থেকে ম্যাচ বল পেয়েছেন অনিক। স্যামি তাকে অটোগ্রাফ দিয়ে বলটি হোটেলে হস্তান্তর করবেন। স্যামিকে নিয়ে অনিক বলেন, ‘ও আমাকে নেট থেকে পছন্দ করেছে। স্যামি টপ ক্লাস খেলোয়াড়। একজন বোলারকে দেখলেই বুঝতে পারে, বোলারটা কেমন। ম্যাচের পর বলেছে, তুমি তোমার ভালো বলগুলো করেছ। পরের ম্যাচে সুযোগ পেলে এই ধারাটা ধরে রাখবে।’

শুরুতে নার্ভাস হলেও ধীরে ধীরে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন অনিক। উইকেট নিয়ে অর্জনের তালিকা ভারী হলেও ভালো বোলিং করায় অনিকের সন্তুষ্টি বেশি। বোলিং নিয়ে নিজের পরিকল্পনা জানাতে গিয়ে অনিক বলেন, ‘পরিকল্পনা ছিল রান যতটা কম দিতে পারি। উইকেট পাওয়াটা তো ভাগ্যের ওপর নির্ভর করে। ভালো লাগছে সেই পরিকল্পনাতে সফল হয়েছি বলে। আমাদের সামনের ম্যাচগুলো জিততে হবে। আশা করি, আমাদের ফোকাসটা সেই দিকেই আছে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment