এইচআইভি নির্ণয়ে স্মার্টফোন

এইচআইভি নিয়ে মানুষের মধ্যে কত রকমের ভয়। সেটা পরীক্ষা করতে গিয়েও পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। তবে এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতে এগিয়ে এসেছেন বিজ্ঞানীরা। এইচআইভি পরীক্ষায় তারা আবিষ্কার করেছেন এক ধরনের স্মার্টফোন।

এই স্মার্টফোনের মাধ্যমে মাত্র ১০ সেকেন্ডেই যাচাই করে নেওয়া যাবে আপনি এইচআইভি আক্রান্ত কিনা। প্রচলিত পদ্ধতিতে এইচআইভি পরীক্ষা করতে অন্তত ৭২ ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু এখন আর এত সময় লাগবে না।

চিকিৎসকদের এই স্মার্টফোনের ফলাফল এইচআইভি রোগীদের খুঁজে বের করে চিকিৎসা করাতে বিশেষ সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ইংল্যান্ডের গবেষক দলের বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যে তত্ত্বে ভর করে এইচআইভি টেস্ট করা সম্ভব হয়েছে তা ব্যবহার করে জিকা, ইবোলার মতো ভাইরাসের সন্ধানও করা যেতে পারে।

গোটা প্রক্রিয়াটির বিজ্ঞানের ভাষায় নাম ‘সারফেস অ্যাকোস্টিক ওয়েভ’ বায়েচিপ। এটি মাইক্রোইলেক্টনিক যৌগ দিয়ে তৈরি বায়োচিপ যা স্মার্টফোনে ভরা থাকছে। এর সঙ্গে থাকছে একটি কন্ট্রোল বক্স যা সিগন্যালের মাধ্যমে ফলাফল দেখিয়ে দেবে।

বায়োচিপ অনেকটা ইউএসবি ড্রাইভের মতো যা স্মার্টফোনে ভরা থাকবে। গবেষকরা জানান, ইউএসবি ড্রাইভের স্টিকের ওপর একটা জায়গা চিহ্নিত করা থাকবে।
খুব সামান্য মাত্রায় তার ওপর রক্ত ফেলতে হবে। রক্তে এইডস ভাইরাস থাকলে বা তার মাত্রা বেড়ে গেলে ওই যন্ত্রটির স্টিকে লাগানো এসিডের রং বদলে যাবে, বদলে যাবে এসিডের কিছু গুণাগুণও।

ওই রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে যে শক্তি উৎপন্ন হবে, তার একটা অংশ বিদ্যুৎশক্তিতে রূপ নেবে। এর ফলে সৃষ্টি হবে ইলেকট্রিক সিগন্যাল। অনেকটা ‘ইলেকট্রিক্যাল স্পার্ক’-এর মতো। ইউএসবি ড্রাইভের স্টিকের মাধ্যমে সেই স্পার্ক স্মার্টফোনের স্ক্রিনে পরীক্ষার ফল ফুটিয়ে তুলবে। এই পদ্ধতিতে এইচআইভি পরীক্ষায় যথার্থতার (অ্যাকিউরেসি) মাত্রা ৯৫ শতাংশ।

গবেষকরা জানাচ্ছেন, আগে থেকে এইচআইভি ধরা পড়লে আয়ু অন্তত ১০ বছর বেড়ে যায়। পাশাপাশি গর্ভবতী মহিলাদের সন্তানদেরও নিরাপদ রাখার ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। নতুন পদ্ধতি ফলপ্রসূ হলে সারা বিশ্বে বহু মানুষের প্রভূত উপকার হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment