ঢাকা মহানগরে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে আবারও নির্দেশ

নারায়ণগঞ্জে পাইরেসি চক্রের ২৩ সদস্য আটক

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে আবারও মহানগরের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর শিগগিরই কমিটি ঘোষণা দেওয়া হবে।

দলীয় সূত্র রাইজিংবিডিকে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে ওবায়দুল কাদের মুঠোফোনে সংগঠনের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘেষণা দেওয়ার নির্দেশ দেন।

ওবায়দুল কাদের এ সময় বলেন, দেখো, আজকের মধ্যে না হলে কালকের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটিগুলো দিয়ে দাও। অনেক দিন হয়ে গেল, আর কত সময় নেবে? সামনে নির্বাচন চলে আসছে। আবার সামনে ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্ররক্ষা দিবসের কর্মসূচি রয়েছে। নেত্রী আমাকে বলেছেন, তোমরা কমিটিগুলো ঘোষণা করে দাও।

তবে মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবুল হাসনাত রাইজিংবিডিকে বলেন, আমি এ ব্যাপারে খবর পাইনি।

মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি মিটিংয়ে আছি। পরে কথা বলব।

তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশ সরাসরি স্বীকার না করলেও ইঙ্গিত দিয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান রাইজিংবিডি বলেন, আমি আপনাদের জানাব। হলেই আপনারা জানতে পারবেন। এখনো সেটেল্ডড হয় নাই। গণভবন থেকে বের হলে কথাবার্তা হবে রাতে। কালকে (রোববার) বুঝতে পারব। এটা কালকে বলতে পারব।

দলীয় সূত্র জানায়, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে মহানগর আওয়ামী লীগের একটা বিশাল ভূমিকা থাকবে। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত এই হয়, এই হয় না- এমন করে এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়নি। এতে মহানগর আওয়ামী লীগের থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় নেতাকর্মীরা ঝিমিয়ে পড়ছেন। কবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে- এই সংশয় ও শঙ্কা থেকে মহানগরের নেতাকর্মীদের মনে সৃষ্টি হচ্ছে চাপা ক্ষোভ। কমিটি দিতে না পারায় অস্বস্তিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও। দফায় দফায় সময় নেওয়ার পরও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি এখনো ঘোষণা করতে পারেনি। নেতারা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে মনোবল হারিয়ে ফেলবেন কর্মীরা। যার প্রভাব পড়তে পারে আগামী জাতীয় নির্বাচনে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দুই ভাগে বিভক্ত করে ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং দুই শাখার অধীনস্ত ৪৫টি থানা ও ১০০টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে কেবল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এরপর ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলেও অধীনস্ত থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন বাকি রয়ে যায়।

এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের চলতি বছরের ২ জানুয়ারি রাজধানী এক অনুষ্ঠানে ২৫-৩০ শতাংশ নারীকে অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত এসব কমিটি ঘোষণার আহ্বান জানান, যাতে নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয় এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠের রাজনীতিকেও চাঙ্গা করে। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও দলের সাধারণ সম্পাদকের এ আহ্বানে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ কতটা সাড়া দিয়েছে তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। এক বছর পার হলেও কমিটি না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় গত ৮ মে ওবায়দুল কাদের ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সমন্বয়ক ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ফারুক খান, দক্ষিণের সমন্বয়ক দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান এবং দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদকে নিয়ে বৈঠক করে ৩০ মের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। পরে আরো একদিন বাড়িয়ে ৩১ মে পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। দলের সাধারণ সম্পাদকের কথা যেন কানেই তুলেননি নেতারা। উল্টো দিনের পর দিন কালক্ষেপণ করতে থাকেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment