থার্টি ফার্স্ট নাইট : পার্টি ও ডিজে গার্লদের বুকিং শেষ

থার্টি ফার্স্ট নাইট : পার্টি ও ডিজে গার্লদের বুকিং শেষ

 

Brand Bazaar

সারা বিশ্বে ২০১৮ সালটা বরণ করতে একটু বেশিই ঘটা করা হবে হয়তো। অনেকেই রূপক অর্থে বলছেন, আগামীবছর নতুন মিলেনিয়াম যৌবনে পা দিচ্ছে। অর্থাৎ ২০০০ সালের মধ্য দিয়ে যে নতুন মিলেনিয়ামের সূচনা হয়েছিল, সেটির ১৮ বছর পূর্তি হতে যাচ্ছে সামনে বছর।
বাংলাদেশেও থার্টি ফার্স্ট নাইটে বরাবরের মতো রয়েছে বর্ণিল আয়োজন।

থার্টি ফার্স্ট নাইট : পার্টি ও ডিজে গার্লদের বুকিং শেষ

রাতব্যাপী চলবে নাচ, গান ও ফ্যাশন শো। সেই সঙ্গে রয়েছে নানা চমক। তারকা হোটেলগুলোর বাইরেও হচ্ছে পার্টি। বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন ক্লাব ছাড়াও পার্টি হবে লঞ্চে। এসব পার্টির প্রচারণা চলছে মূলত পরিচিতদের মধ্যে। নিজেদের ফেসবুক পেজেও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ করে নিতে প্রস্তুতির শেষ নেই ডিজে, মডেল ও শিল্পীদের মধ্যে। পার্টিকে আকর্ষণীয় করতে সুন্দরী পার্টি গার্লদের বুকিং করা হয়েছে ইতোমধ্যে। এমনকি চলচ্চিত্রের আইটেম গানের মেয়েরাও বিটের তালে নেচে-গেয়ে মাতাবেন পার্টিতে অংশগ্রহণকারীদের। বরণ করে নেওয়া হবে নতুন বছরকে। দেশের ডিজে গার্লদের এসময় ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এবার রাজধানীর রেডিসন ব্লু হোটেলের ব্লু ওয়াটার গার্ডেনের বল রুমে থাকবে ‘নিউ ইয়ার কাউন্টডাউন’ পার্টি। দেশের প্রথম সারির ডিজেদের অন্যতম মারিয়া থাকবেন পার্টিতে। থাকবেন হালের জনপ্রিয় ডিজে পরী। এছাড়াও থাকবেন ডিজে যুবায়ের, শাম, লিটন, রাজন ও তুর্য। সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ পার্টিতে থাকবে লাতিন ড্যান্স, ফ্যাশন শো। টিকিট বিক্রি হচ্ছে চার হাজার টাকায়। কাপলের ক্ষেত্রে ছয় হাজার টাকা। পার্টি চলবে ভোর পর্যন্ত।
ডিজে মারিয়া জানান, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আয়োজিত ক্যাডেট কলেজ ক্লাবের ৩১ নাইট, রেডিসন ব্লু হোটেলের ‘নিউ ইয়ার কাউন্টডাউন’ পার্টিসহ কয়েক পার্টিতে অংশগ্রহণ করবেন তিনি। মারিয়া বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট এনজয় করতে সবাই যেভাবে প্রস্তুত ঠিক তেমনি ডিজে হিসেবে আমিও প্রস্তুত তাদের আনন্দের বন্যায় ভাসাতে। দর্শকদের মুগ্ধ করতে প্রস্তুতির কমতি নেই সুদর্শনা মারিয়ার। রাজনীতিক অস্থিরতা মুক্ত থাকার কারণে এবার পার্টিতে অংশগ্রহণকারী বেশি হবে বলেই ধারণা এই ডিজের।
একইভাবে লা মেরিডিয়ানের স্কাই বলরুমে অনুষ্ঠিত হবে ‘গ্রান্ড নিউ ইয়ার পার্টি’। ডিজে, ড্যান্স ও গানের পাশপাশি এতে থাকবে র‌্যাম্প মডেলিং। ডিজে পরী, ফারজানা, মেরাজ, প্রিন্স ও তন্ময় অংশ নেবেন এ পার্টিতে। ঢাকা রিজেন্সি মাতাবেন ডিজে সনিকা, সামান্তা, ডন, ইয়ামিন, রাজি ও রেইন। বিগেস্ট নিউ ইয়ার নামের এ পার্টি আয়োজন করেছে ঢাকা রিজেন্সি কর্তৃৃপক্ষ। পার্টিতে থাকবে ননস্টপ মিউজিক, ডিজে ও ফায়ার ড্যান্স ইত্যাদি। এ পার্টির টিকিটির মূল্য তিন হাজার টাকা। কাপল পাঁচ হাজার টাকা।
এছাড়া ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সদরঘাট থেকে একটি লঞ্চ যাত্রা করবে চাঁদপুরের দিকে। উদ্দেশ্য শুধুই আনন্দ-বিনোদন উপভোগ। সারারাত লঞ্চে নাচে-গানে মাতিয়ে রাখা হবে। সেইসঙ্গে থাকবে ডিজেরা। পপ ও হিন্দি গানের বিটে কেঁপে উঠবে রাতের আকাশ। লঞ্চে থাকবে খাবার ও পানীয়। এখানেই শেষ না। লঞ্চে একান্তে সময় কাটাতে রয়েছে কেবিনের ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে বুকিং প্রায় শেষ। আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাপলদের কেবিনসহ সাত হাজার টাকা দিতে হবে। সারা রাত নদীতে ভাসবে লঞ্চ। সকালে আবার ফিরবে সদরঘাটে। এভাবেই নদীর বুকে উপভোগ করা হবে থার্টি ফার্স্ট নাইট।
কমার্শিয়াল পার্টির বাইরে বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন আয়োজন করেছে নানা অনুষ্ঠানের। বেশ কয়েকটি তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে গানের অনুষ্ঠান। মূলত হোটেলের গেস্টদের জন্য থাকবে এ আয়োজন।
ঢাকার অভিজাত এলাকার বিভিন্ন বাসা-বাড়িতেও আয়োজন করা হয়েছে বর্ণিল পার্টির। এসব পার্টিতে থাকবেন নানা পর্যায়ের তারকা ব্যক্তিরা।
ডিজে পরী জানান, বছরজুড়েই দেশে-বিদেশে নানা পার্টিতে ডিজে হিসেবে বাজাই। কিন্তু থার্টি ফার্স্ট নাইটে দর্শকদের প্রত্যাশা থাকে বেশি। আমরা চেষ্টা করি ওই রাতে সবটুকু উজার করে দিতে। বাজাতে বাজাতে সমবেতদের আনন্দ দিতে অনেক সময় আমরা নিজেরাও ড্যান্স করি। এসবই হচ্ছে আনন্দ দেওয়ার জন্য। ডিজে পার্টিতে কাউকে বিমর্ষ হতে দেন না পরী। এবারও থার্টি ফাস্ট নাইটে সবাইকে আনন্দ দিতে প্রস্তুত এই ডিজে।
বহিরাগত নিষিদ্ধ গুলশান-ঢাবিতে : ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ সামনে রেখে যে কোনো ধরনের অঘটন এড়াতে রাজধানীর গুলশান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরির কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এর অংশ হিসেবে ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যেই বহিরাগতদের গুলশান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকা ছাড়ার নির্দেশনা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। গত ১৯ নভেম্বর ডিএমপি সদর দপ্ততরে বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে নিরাপত্তা ও ট্রাফিকসংক্রান্ত সমন্বয় সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন।
এদিন ডিএমপি কমিশনার বলেন, ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে কোনো উন্মুক্ত স্থানে বা বাড়ির ছাদে কোনো সমাবেশ, গান-বাজনা করা এবং আতশবাজি ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ৩১ ডিসেম্বর রাত ৮টার মধ্যে গুলশান এলাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবস্থানরত বাইরের লোক এলাকা ছেড়ে চলে যাবে। আর স্থানীয়রা রাত ৮টার মধ্যে নিজ নিজ এলাকায় প্রবেশ করবেন। শুধু কাকলী ও আমতলী ক্রসিং দিয়ে গুলশানে প্রবেশ করা যাবে। রাত ৮টার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার ব্যতীত কোনো গাড়িকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। পায়ে হেঁটে প্রবেশের ক্ষেত্রে আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে হবে।
কমিশনার আরও বলেন, যদি কেউ চার দেয়ালের মধ্যে নববর্ষ উদযাপন করতে চান তাতে কোনো বাধা নেই। তবে অনুষ্ঠানের পূর্বেই পুলিশকে জানাতে হবে। রাস্তায় যদি কেউ অপ্রীতিকর কাজ করে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত ঢাকা শহরের সকল বার বন্ধ থাকবে। কেউ এ নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ঢাকায় ১৫ হাজার র‌্যাব-পুলিশ : থার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে নিরাপত্তায় রাজধানীতে ১০ হাজার পুলিশের পাশাপাশি সাড়ে ৫ হাজার র‌্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রধান সড়কগুলো থেকে শুরু করে অলিগলিতেও র‌্যাব পুলিশের উপস্থিতি থাকবে। নাশকতার পাশাপাশি উচ্ছৃঙ্খলা ঠেকাতে এ নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। ডিএমপি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রাজধানীর স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে নাশকতা, উচ্ছৃঙ্খলা ঠেকাতে পুলিশ সকাল থেকে কাজ শুরু করবে। ডিপ্লোমেটিক এলাকা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, ধানমন্ডি, উত্তরাসহ বেশকিছু এলাকায় নিñিদ্র নিরাপত্তা নেয়া হবে।
যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ : সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় যানবাহনযোগে প্রবেশের জন্য শুধু কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) ব্যবহার করা যাবে। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকা-ফিনিক্স রোড ক্রসিং, বনানী ১১ নম্বর রোড ক্রসিং, চেয়ারম্যান বাড়ি ক্রসিং, আমতলী ক্রসিং, শুটিং ক্লাব, বাড্ডা লিংক রোড, গ্রুপ-ফোর, ডিওএইচএস বারিধারা-ইউনাইটেড হাসপাতাল ক্রসিং ও নতুন বাজার ক্রসিং ওই এলাকাসমূহে প্রবেশের জন্য ব্যবহার করা যাবে না, তবে ওই এলাকা থেকে বের হওয়ার জন্য এসব ক্রসিং ব্যবহার করা যাবে। আর সন্ধ্যার পরপরই হাতিরঝিল এলাকায় গাড়ি প্রবেশ এবং বাহির হতে দেওয়া হবে না। একইভাবে সন্ধ্যা ৭টা হতে পরদিন ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যতিত অন্য যেকোনো ব্যক্তি বা যানবাহন কেবল পুরনো হাইকোর্ট-দোয়েল চত্বর-শহীদ মিনার-জগন্নাথ হলের দক্ষিণ গেট-পলাশী মোড় রুটটি ব্যবহার করতে পারবেন। ওই এলাকায় প্রবেশের ক্ষেত্রে অন্যসব ক্রসিং বন্ধ থাকবে। ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের সহকারী পুলিশ কমিশনার সুমন কান্তি চৌধুরী বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ সবকিছু করবে। এছাড়া সন্ধ্যা ৭টার পর থেকেই যান চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনা হবে। এবারের থার্টি ফার্স্ট নাইটে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার ব্যাপারে কমিশনার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আরও বিস্তারিত কথা বলবেন। এদিকে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। রাজধানীতে পুলিশের পাশাপাশি সাড়ে ৫ হাজার র‌্যাব সদস্য মোতায়েন থাকবে। র‌্যাব সদর দপ্তরের মিডিয়া উইংয়ের মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment