পরীক্ষা শিশুদেরকে আত্মবিশ্বাসী করছে: প্রধানমন্ত্রী

পরীক্ষা শিশুদেরকে আত্মবিশ্বাসী করছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে পাবলিক পরীক্ষা শিশুদেরকে আত্মবিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তুলছে বলে মনে করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এর ফলে বড় হয়ে তাদের পরীক্ষা ভীতি কেটে যাচ্ছে। নতুন বছরের প্রথম দিন পাঠ্যপুস্তক উৎসবে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রস্তুত করা বই উদ্বোধন এবং পরে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল গ্রহণ করে শনিবার প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত বিভিন্ন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং শিশুদের হাতে বই তুলে দেন।

পরীক্ষা শিশুদেরকে আত্মবিশ্বাসী করছে: প্রধানমন্ত্রীপ্রাক প্রাথমিক থেকে শুরু করে মাধ্যমিক পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে বই দেন প্রধানমন্ত্রী। মূল ধারার শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, বাংলার পাশাপাশি ইংলিশ ভার্সনের শিক্ষার্থী, আদিবাসী এবং দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের হাতেও তুলে দেয়া হয় বই। এবার দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ একটি বিশেষ ধরনের যন্ত্র তৈরি করা হয়েছে। সেটিও একজন দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীর কাছে তুলে দেন শেখ হাসিনা।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে শিক্ষা ব্যবস্থায় কাঠামোগত বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকে বৃত্তি পরীক্ষা তুলে দিয়ে দুই পর্যায়ে সমাপনী পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। এর আগে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা এই দুটি পরীক্ষায় অংশ নিত, তবে এখন অংশ নেয় সবাই।

শিক্ষাবিদদের একটি অংশ এবং গণমাধ্যমগুলোতে এভাবে ঘন ঘন পরীক্ষা নেয়ার সমালোচনা আছে। তবে প্রধানমন্ত্রী বরাবর পরীক্ষা নেয়ার পক্ষে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। এই পরীক্ষার ফলে ছেলেমেয়েদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এসে যাচ্ছে।’

‘আমরা এর সুফল পাচ্ছি, পরীক্ষার ফল ভালো হচ্ছে, পাসের হার বেড়ে যাচ্ছে। ছেলেমেয়েদের মাঝে একটা আলাদা আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার।’

আগের পরীক্ষাপদ্ধতির বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১০ বছর পড়াশোনা করার পর যখন এসএসসি পরীক্ষা দিতে যেতাম… আমাদের সময় যেটা ছিল তখন পেটের মধ্যে গুরগুর করে, ভয়ে হাত কাঁপে, পা কাঁপে, গলা শুকিয়ে যায়, এ রকম একটা অবস্থা ছিল। এখনকার ছেলে মেয়েদের আর এটা হয় না। কারণ তারা তো পরীক্ষা দিয়ে আগেই একটা সার্টিফিকেট পাচ্ছে।’

এখন আর আলাদা করে বৃত্তি পরীক্ষা নেয়া হয় না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে বৃত্তিটা আমরা দেবো, সবাই পরীক্ষা দেবে। কোথায় কার মাঝে কোন মেধা লুকিয়ে আছে, আমরা তা জানব কোত্থেকে? কাজেই সবাই পরীক্ষা দেবে এবং আমরা তার মধ্য থেকে বৃত্তি দেবো।’

সরকারের নানা উদ্যোগে পড়াশোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে বলেও মনে করে প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘প্রত্যেক বাবা-মাই আজকে চিন্তা করে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শেখাবে। আর এই লেখাপড়া শেখানোর জন্য যা যা করা দরকার… আমরা বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি, বৃত্তি দিচ্ছি এবং স্কুলে টিফিনের ব্যবস্থা করা… স্বপ্রণোদিতভাবে এটা করা হচ্ছে। যার ফলে আমাদের ঝরে পড়া কমে গেছে, ছেলে মেয়েরা লেখাপড়ার দিকে মনযোগী হচ্ছে।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা, বিশেষ করে আইসিটির শিক্ষায় সরকার জোর দিচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আমাদের ছেলে মেয়েরা পিছিয়ে থাকতে পারে না।’

‘আমাদের লক্ষ্য, আমাদের ছেলে মেয়েরা যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলবে, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকবে এবং আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’

শিশুদেরকে নিজের ওপর বিশ্বাস রেখে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘লেখাপড়া ছাড়া কিন্তু মানুষের মত মানুষ হওয়া যায় না।’

‘তোমরাই তো এক সময় লেখাপড়া শিখে বড় হবে, বড় বড় চাকরি করবে, কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে, তোমাদের মধ্য থেকে মন্ত্রী হবে, তোমরাই তো দেশ চালাবে। কাজেই তোমাদের নিজেদের গড়তে হবে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment