”শিক্ষার হার বাড়লে বেঁদেপল্লীতে পরিবর্তন আসবেই” : তানভীন সুইটি

''শিক্ষার হার বাড়লে বেঁদেপল্লীতে পরিবর্তন আসবেই'' : তানভীন সুইটি

 

Brand Bazaar

মোঃ মানিক মিয়া, স্টাফ রিপোর্টার(মুন্সীগঞ্জ)!!

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কুমারভোগ ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা আসনে উপনির্বাচন গত বৃহস্পতিবারের নবনির্বাচিত সদস্য তানভীন সুইটির সঙ্গে শুক্রবার পৌষের সোনাঝরা বিকেলে কথা বলছিলেন জাতীয় দৈনিক আগামীর সময় পত্রিকার মুন্সীগঞ্জ জেলার স্টাফ রিপোর্টার । সে বেঁদে সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করার লক্ষ্যে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। দেশের বেঁদে সম্প্রদায়ের অলিখিত রাজধানী হিসেবে খ্যাত লৌহজং উপজেলার খড়িয়ায় ছিল উৎসবের আমেজ।

''শিক্ষার হার বাড়লে বেঁদেপল্লীতে পরিবর্তন আসবেই'' : তানভীন সুইটি

দেশের নানা প্রান্তে থাকা খড়িয়া গ্রামের বেঁদেরা তাদের সম্প্রদায়ের প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য ভোটকেন্দ্রে ছুটে আসে। যশোর, কক্সবাজার, সাভার থেকেও আসে ভোটাররা। তাদের চোখে-মুখে ছিল নিজেদের সম্প্রদায়ের প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনার দৃঢ় প্রত্যয়। নিজেদের লোকেরা কোথায় আছে, কতক্ষণ পরে আসবে – এ নিয়ে ছিল রাজ্যের বিস্ময়। সাবেকদের সঙ্গে তারা পারবে তো? কিন্তু দিনশেষে অবশ্য তারাই বিজয়ী হন। গত ২৫ জুলাই কুমারভোগ ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য সাহেনা বেগমের মৃত্যু হলে ওই আসনটি শূন্য হয়। আর শূন্য আসনে গত বৃহস্পতিবার এ নির্বাচনে তিনজন প্রার্থী হন। এরা হচ্ছেন একদিকে সাবেক বা গৃহস্থ পরিবারের কলম প্রতীক নিয়ে রোকেয়া বেগম ও সূর্যমুখী প্রতীকে শাহিনুর বেগম। অন্যদিকে বেঁদে সম্প্রদায়ের তানভীন সুইটি বই মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আর এ নির্বাচন নিয়ে বেঁদে সম্প্রদায়ের মাঝে ছিল উন্মাদনা ও উচ্ছ্বাস। বেঁদে সম্প্রদায়ের ভোট ছিল প্রায় ১ হাজার ৩ শ’র মতো। সাবেকদের ভোট ছিল ১ হাজার ৮ শ’র মতো। কিন্তু গৃহস্থ বা সাবেক সম্প্রদায়ের প্রার্থী ছিল দুজন। যার ফলে ভোটের সমীকরণ ছিল একটু জটিল। এই দুই সম্প্রদায় একে অপরকে ভোট দেবে না – এমনটাই ভেবে রেখেছিল সবাই। অনেকটা হয়েছেও তাই। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, যেখানে সাবেক সম্প্রদায়ের দুই প্রার্থীর ভোট যোগ করলে দাঁড়ায় (৫৩২+৪৮৮) বা ১০২০। কিন্তু সেখানে বেদে সম্পদায়ের প্রতিনিধি তানভীন সুইটি পেয়েছেন ৬৬২ ভোট। অর্থাৎ নিকটতম প্রার্থীকে ১৩০ ভোটে পরাজিত করেন তিনি। সুইটির সঙ্গে যখন কথা হয় তখন তাঁকে দেখে বোঝার উপায় ছিল না যে, সে বেঁদে সম্প্রদায়ের মেয়ে নয়। গৃহস্থ ঘরের মেয়ে। তাঁর বাড়ি বরিশালে। মামাতো ভাইয়ের বেঁদে বন্ধুকে ভালোবেসে বিয়ে করে সে। পড়া-শোনাও করে ছিলেন দশম শ্রেনী পর্যন্ত। তাঁদের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। তারা স্বামীস্ত্রী এখন গাজীপুরের টঙ্গীতে থাকেন। নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের পীড়াপীড়িতে এ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। তাঁকে নিয়ে লৌহজং উপজেলার বেঁদে সম্প্রদায়ের মধ্যে ৪ জন ইউপি সদস্য রয়েছেন। এদের মধ্যে আবার দুজন পুরুষ ও দুজন মহিলা সদস্য। সংরক্ষিত আসনে নবনির্বাচিত সদস্য তানভীন সুইটিকে কিছু প্রশ্ন করা হয় তা নিম্নরূপঃ প্রশ্নঃ আপনি আপনার সম্প্রদায়ের জন্য কী পদক্ষেপ নেবেন? সুইটিঃ এই সম্প্রদায়ের মাঝে শিক্ষার ঘাটতি আছে, এখানে শিক্ষার হার বাড়াতে পারলে পরিবর্তন আসবে। প্রশ্নঃ আপনাদের মাঝে কী কী সমস্যা আছে বলে মনে করেন? সুইটিঃ প্রধান সমস্যা হচ্ছে – মাদক। এরপরে বাল্যবিবাহ। তবে এগুলো আগের চেয়ে অনেক উন্নতি হয়েছে। প্রশাসনের সাহায্য পেলে পুরোপুরিভাবে এসব বন্ধ করা সম্ভব। কর্মসংস্থান ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে পারলে ছেলেমেয়েরা শিক্ষাদীক্ষা লাভে উজ্জীবিত হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment