জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে যেনতেন রায় দেয়া এতো সোজা নয়। ‘এতো সোজা নয় দেশনেত্রীকে যেনতেন একটা রায় দেবেন। জনগণ মেনে নেবে না।’শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষণা নিয়ে সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের বিভিন্ন ধরনের বক্তব্যে পরিষ্কার হয় যে, এ মামলার রায় আগে থেকেই নির্ধারিত। প্রহসনের এ বিচারের কোনো প্রয়োজন ছিল না।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারকাজ শেষ হয়েছে। আদালত আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ঘোষণা করেছেন। গত বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতের জজ ড. আখতারুজ্জামান এই দিন দেন।
এ মামলায় খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন—মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
রায়ের দিন ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছেন, যার ফলে ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজনৈতিক অঙ্গন।
খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সহ্য করা হবে না বলে গতকাল শুক্রবার সতর্ক করে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এর আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলায় ‘নেতিবাচক’ কোনো রায় হলে তার পরিণতি ‘ভয়াবহ’ হবে।
তবে এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের চকরিয়ায় জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা এ মামলার রায় নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, ‘অপেক্ষা করুন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে জেলে যেতে হবে। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে অন্যায়ভাবে জেলে নিয়ে যে নির্যাতন করেছেন, তাঁকেও তার ফল ভোগ করতে হবে।’
এর একদিন পরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এক টুইটে প্রশ্ন তুলেন, পত্রিকায় এসেছে, বিনাভোটের এক প্রতিমন্ত্রী বলেছে, “‘১৫ দিনের মধ্যে খালেদা জিয়াকে জেলে যেতে হবে।’ বিচারাধীন মামলার রায় ঘোষণা আদালত অবমাননা নয় কি?”
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের কথা বলতে না দিয়ে তাড়াহুরা করে এই মামলার কার্যক্রম শেষ করছে সরকার। এই মামলার সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কোনো ডকুমেন্টে তাঁর স্বাক্ষর নেই। মিথ্যা মামলা দিয়ে তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে পৃথিবীর ইতিহাসে এমন নজির নেই।’
‘খালেদা জিয়াকে এবং বিএনপিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই তড়িগড়ি করে রায় দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু খালেদা জিয়া উড়ে এসে জুড়ে বসেননি। তিনি বারবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। চাইলেই তাঁকে দূরে রাখা যাবে না।’