কর ফাঁকি : রবির সব ব্যাংক হিসাব জব্দের চিঠি

কর ফাঁকি : রবির সব ব্যাংক হিসাব জব্দের চিঠি

প্রায় ১৯ কোটি টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবির সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তিন দিনের জন্য জব্দ রাখতে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর। সোমবার এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) থেকে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
কর ফাঁকি : রবির সব ব্যাংক হিসাব জব্দের চিঠিএলটিইউ-এর কর কমিশনার মতিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, অন্য অপারেটররা নির্ধারিত সময়ে ভ্যাট দিলেও রবি দেয়নি। এ কারণে ‘প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে’ এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে রবি আজিয়াটা লিমিটেড বলছে, কর ফাঁকির কোনো ঘটনাই ঘটেনি। তাদের সঙ্গে ‘দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে’ এনবিআর এ ব্যবস্থা নিয়েছে।

কর কমিশনার মতিউর রহমানের স্বাক্ষরে ব্যাংকগুলোতে পাঠানো এনবিআরের চিঠিতে বলা হয়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি একজন অতিরিক্ত কমিশনারের নেতৃত্বে তাদের একটি প্রতিনিধি দল রবির করপোরেট অফিস পরিদর্শন করে। সে সময় ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির সর্বশেষ আর্থিক বিবরণী এবং সিম বিক্রির কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়।

সেই কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রবি অপরিশোধিত সম্পূরক শুল্ক, স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার ওপর প্রযোজ্য অপরিশোধিত ভ্যাট, কম প্রদর্শিত সিমের ওপর প্রযোজ্য অপরিশোধিত সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট এবং বিটিসিএলকে প্রদত্ত সেবার ওপর প্রযোজ্য অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ মোট ১৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার ৩২ টাকা নির্ধারিত সময়ে সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে কর ফাঁকি দিয়েছে।

ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাবদ ওই অর্থ ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে ভ্যাট আইনের আওতায় রবির ব্যাংক হিসাব আগামী তিন কার্যদিবস জব্দ রাখতে ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে। কর না দিলে রবির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী অন্য ব্যবস্থাও নেয়া হবে জানিয়ে কর কমিশনার মতিউর রহমান অন্য অপারেটররা ভ্যাট দেবে, আর তারা (রবি) দেবে না, তা তো হতে পারে না।

এনবিআরের এ পদক্ষেপের বিষয়ে রবির কমিউনিকেশনস অ্যান্ড করপোরেট রেসপনসিবিলিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইকরাম কবির বলেন, এটি কর ফাঁকি নয়। এনবিআর এর সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের চলমান ডিসপিউট। মূল্য সংযোজন কর আইনের ২৬ (খ) এর ৫ উপধারা অনুযায়ী, এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার আগে শুনানির সুযোগ দেয়াসহ আইনের অন্যান্য বিধান অনুসরণ করার কথা থাকলেও এনবিআর রবির ক্ষেত্রে তা করেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে প্রায় ৯২৫ কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি রবিকে চিঠি পাঠিয়েছিল এনবিআর। সে সময় রবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ‘ভিত্তিহীন’ অডিটের মাধ্যমে এনবিআর ‘অন্যায্য’ দাবি করছে। ২০১৬ সালে দুই অপারেটর রবি ও এয়ারটেল একীভূত হওয়ার পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন সেবাদানকারী কোম্পানিতে পরিণত হয় রবি আজিয়াটা লিমিটেড। সর্বশেষ ডিসেম্বর মাসের হিসাব অনুযায়ী, রবির গ্রাহক সংখ্যা ৪ কোটি ২৯ লাখ, যা দেশের মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের প্রায় ২৯ শতাংশ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment