কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা, মুহুর্মুহু স্লোগানে কাপছেঁ রাজপথ

কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজপথে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা, মুহুর্মুহু স্লোগানে কাপছেঁ রাজপথ

আরিফুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি:

আজ সকাল থেকেই যমুনা ফিউচার পার্ক সংলগ্ন বসুন্ধরা,  নোয়াদ্দা, নতুনবাজার এলাকায় অবস্থান নিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেনডেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোটা সংস্কারের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে মুহুর্মুহু স্লোগানে কাপছেঁ রাজপথ। বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই,কোটা প্রথার সংস্কার চাই,স্বাধীনতার মূলমন্ত্র, বৈষম্যমুক্ত বাংলা গড়,কোটা প্রথার দিন শেষ, মেধাবীদের বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন স্লোগানে আন্দোলন করে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
চাকরির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থার ৫টি দাবি নিয়ে চাকরী প্রত্যাশীরা আন্দোলন করছেন। দাবিসমূহ হলো:

১.সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বর্তমান কোটা ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করা।
২.কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া।
৩.সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়সসীমা নির্ধারণ।
৪.কোটায় কোনও ধরনের বিশেষ পরীক্ষা না রাখা।
৫.চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের  পর সর্বপ্রথম ১৯৭২ সালে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়। সে সময় মেধাতালিকা ২০ শতাংশ বরাদ্দ রেখে, ৪০ শতাংশ জেলাভিত্তিক, ৩০ শতাংশ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য এবং ১০ শতাংশ যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ নারীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।পরবর্তী সময়ে বেশ কয়েকবার এই কোটা ব্যবস্থাটি পরিবর্তন করা হয়।

প্রথম আলোতে প্রকাশিত তথ্যমতে, নিবন্ধিত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দুই-আড়াই লাখ, অর্থাৎ এক হাজার মানুষের মাঝে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১.২ জন বা ১.৫ জন। যা সমগ্র জনসংখ্যার ০.১২/০.১৫ শতাংশ। ০.১২ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার জন্য কোটার পরিমাণ ৩০ শতাংশ। যা হাজারে রূপান্তর করলে দেখা যায়, এক হাজার জনতার মাঝে ১ থেকে ১.৫ (দেড়) জন মুক্তিযোদ্ধার জন্য কোটার পরিমাণ ৩০০।

বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৫৫ শতাংশের বেশি কোটা রয়েছে যার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, জেলাভিত্তিক কোটা ১০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ।তবে নিয়ম অনুসারে এসব কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে ১ শতাংশ প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের ১৯ (১), ২৯ (১) ও ২৯ (২) অনুচ্ছেদ সমূহে চাকুরির ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের সমান সুযোগের কথা বলা হয়েছে। অথচ আজ আমরা উপেক্ষিত। তাহলে এই কি আমাদের স্বাধীনতা!!!  এর জন্যই কি আমাদের দিতে হয়েছিল তাজা রক্ত?

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment