৮০ ভাগ ফিট নেইমার

৮০ ভাগ ফিট নেইমার

গোল করেছেন বলে নয়, নেইমারকে নিয়ে খুশি হওয়ার বড় কারণ পঁয়তাল্লিশ মিনিট স্বাচ্ছন্দ্যে মাঠ দাপিয়ে খেলতে পেরেছেন বলে। বিশ্বকাপে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচের বাকি এখনও দুই সপ্তাহ। এ সময়ে পুরো নব্বই মিনিটের জন্যই ফিট হয়ে উঠবেন বলে প্রত্যাশা ব্রাজিলিয়ানদের। কিন্তু নেইমার নিজে কী বলছেন? কোচ তিতেই বা তার শিষ্যের চোট-পরবর্তী প্রথম পরীক্ষায় কত নম্বর দিতে পারছেন?

ঠিক এখানেই কিছু মন খচখচ করা কথা। নেইমার বলছেন, তিনি এখনও শতভাগ ফিট নন, ফিট আছেন আশি ভাগ। তিতের মতে, সম্পূর্ণ ফিট নেইমারকে পেতে অন্তত ব্রাজিলের গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। এ কথাগুলো বলেছেন তারা ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের পরপরই। যার অর্থ, নেইমারের মাঠে ফেরার ঘটনা কেবল খুশির উপলক্ষ নয়, অস্বস্তিও বয়ে নিয়ে এসেছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য নেইমার এগিয়ে রাখছেন দীর্ঘ বিরতির পর বল পায়ে ফিরতে পারার গুরুত্বপূর্ণ ধাপটিকেই। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি লীগ ওয়ানের খেলায় পায়ে চোট পেয়ে যে মাঠ ছেড়েছেন, তারপর অস্ত্রোপচার ও পুনর্বাসন কার্যক্রম শেষে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে ফিরলেন এই প্রথম।

নেইমার তাই খুশি, তবে পাশাপাশি শঙ্কিতও, ‘চোটের পর তিন মাস পেরিয়ে গেছে। তারপর যে নিজের সবচেয়ে পছন্দের জায়গাটায় আবার ফিরতে পেরেছি, খেলতে পেরেছি, এমনকি একটি গোলও করেছি… আমি খুবই খুশি। তবে এখনও কিছুটা ভয় রয়ে গেছে। আশার কথা হচ্ছে ধীরে ধীরে, একেকটি ট্রেনিং সেশনের মাধ্যমে আমি নিজেকে ফিরে পাচ্ছি।’ রাশিয়ায় যাওয়ার আগে আরও একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। আগামী রোববার ভিয়েনার সেই ম্যাচটির প্রতিপক্ষ অস্ট্রিয়া। হাতে যে সময় আছে, সেটিই নেইমারের ভরসা, ‘দেখা যাক, সামনের সপ্তাহের অনুশীলনটা কেমন যায়। আমি এখনও খানিকটা অস্বস্তিতে আছি। তবে একদিক থেকে এটা স্বাভাবিকও, কারণ অনেক দিন ধরেই আমি মাঠের বাইরে। আমি এখন আশি ভাগের মতো ফিট আছি।’

নেইমার এখন যে অবস্থায় আছেন, তাতেই ভীষণ সন্তুষ্ট কোচ তিতে। শতভাগ ফিট হতে সময় লাগবে মনে হলেও বর্তমান পর্যন্ত অগ্রগতি প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে বলে মন্তব্য তার, ‘স্বাভাবিক ফেরা যাকে বলে, তার চেয়ে ভালো আছে নেইমার। আমার প্রত্যাশার চেয়েও ওপরে। চোট-পরবর্তী ফেরাটা যেহেতু ধারাবাহিক একটি প্রক্রিয়া, তাই এতটা ভালো হয়ে উঠবে বলে ভাবিনি। তবে এখনও কয়েকটি ধাপ বাকি। আশা করি তৃতীয়, চতুর্থ বা পঞ্চম ম্যাচে সে তার নিজের লেভেলে পৌঁছে যাবে।’

তিতে অবশ্য আগামী সপ্তাহের অস্ট্রিয়া ম্যাচে নেইমারকে খেলাবেন কি-না, সে নিশ্চয়তা দেননি। কারণ বেশি খেললে ঝুঁকিও থাকে, ‘সে অন্য জাতের খেলোয়াড়। এ কারণে আবার প্রতিটি ম্যাচে জয় নিশ্চিতকরণের দায়িত্বটা ওর ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। এটা অমানবিক। সে আমাদের দলের মূল অংশ, কিন্তু সম্পূর্ণটা তো আর নয়। ওর সম্পূর্ণ ফিট হতে এখনও বেশ কিছু কাজ বাকি।’

নেইমার মাঠে ফেরায় খুশি তার সতীর্থরাও। ২০১৪ বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া থিয়াগো সিলভা ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে নেইমারের খেলার প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছেন আলাদাভাবে, ‘এ ধরনের একজন খেলোয়াড় ফিরে এলে যে কোনো দলই স্বস্তি পাবে। আমরা দারুণ দল। তবে নেইমারের আলাদা ঔজ্জ্বল্য আছে। যে কোনো ম্যাচ যখন কঠিন হয়ে ওঠে, নেইমার তখন চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে আসতে পারে। এই ম্যাচেও যেমন হলো।’ বিশ্বকাপে নেইমারদের প্রথম ম্যাচ ১৭ জুন সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment