মাদারীপুরে অসহায় বৃদ্ধা ও তার পরিবারের জমির মালিক সেজেছেন বর্গাচাষীরা।

 মোঃ ইব্রাহীম, মাদারীপুর প্রতিনিধি।

মাদারীপুর ভূমির মালিকের জমি দীর্ঘদিন বর্গাচাষ করার পর বর্গাদাররা নিজেরাই এখন ভূমির মালিক সেজে বসেছে। তারা এখন জমির ফসল দেয়া তো দূরের কথা জমির মালিকদের দখলে যেতে দিচ্ছে না। সম্পূর্ণ অন্যায় এবং বেআইনীভাবে উল্লেখিত জমির বলপূর্বক ভোগ দখল করছে ভূমি দস্যুরা অভিযোগে জানা গেছে। এ ব্যাপারে জমির মালিক জহিরউদ্দিন ফকির মাদারীপুর জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বর্গাদার ওয়াদুদ শিকদার গংদের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য ওয়াদুদ শিকদার গংরা নালিশী জমি দীর্ঘদিন ধরে বর্গাচাষ করে আসছে। এ ঘটনা ঘটেছে মাদারীপুর সদর উপজেলার চরনাচনা গ্রামে। এ ব্যাপারে এ প্রতিবেদক সদ্যবেশে চরনাচনা গ্রামে জহিরুল ফকিরের বাড়ীতে যান। তিনি সেখানে ৩টি অত্যান্ত জরাজীর্ণ ভাঙ্গা কুঁড়ে ঘর দেখতে পান। এ সময় জহিরুল হক ফকিরের মা সোনাভান বিবি জমি হারানোর শোকে ভাঙ্গা কুঁড়ে ঘরের দরজায় বসে আহাজারী করছিলেন। অসহায় বৃদ্ধা প্রতিবেদক কে দেখে হাত জড়িয়ে ধরেন এবং তার হারানো জমি ফিরে পাবার জন্য সাহায্য করতে বলেন। বৃদ্ধা সোনাভান বিবির কান্না দেখে প্রতিবেদকও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। ঘটনায় আরও জানা যায় জহিরুল ফকিরের বাবা আঃ হক ফকির ৮৫ নং চরনাচনা মৌজার আর এস ২২৫ খতিয়ানের ৩ একর ৮১ শতাংশ জমি আর একজন অংশীদার সহ নিলামে খরিদ করেন। পরে এ জমি এস এ জরিপে ২২৫ নং খতিয়ানে ১৭২০ নং দাগে উল্লেখিত জমির অর্ধেক ১ একর ৯০ শতাংশেরও বেশি আব্দুল হক ফকিরের নামে রেকর্ড হয়। স্বাধীনতাপর আব্দুল হক ফকির মারা যান। তিনি পেশায় একজন গ্রাম ডাক্তার ছিলেন। জহিরুল হক ফকিরের মৃত্যুর পর স্ত্রী সোনাবান ৭ জন পুত্র কন্যা নিয়ে সম্পূর্ণ নিরুপায় হয়ে পড়েন এবং পরিস্থিতির কারণে নালিশি ভূমি ওয়াদুদ শিকদার, সেলিম শিকদার ও শামীম শিকদার সহ অন্যান্যদের কাছে বর্গা দিয়ে ছেলে মেয়েদের নিয়ে ঢাকায় চলে যান। তাদের অনুপস্থিতির সুযোগে ধূর্ত এবং লোভী ওয়াদুদ শিকদার গংরা সোনাভান বিবি ও তার ছেলে জহিরুল হকদের ফসল দেয়া এক পর্যায়ে বন্ধ করে দেয় এবং জাল দলিল সৃষ্টি করে নিজেরাই এ জমির মালিকানা দাবী করে। কিন্তু এ জমির বি আর এস রেকর্ডও পর্যন্ত জহিরুল ফকির গংদের নামে হয়েছে। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, গত ইরি ধান চাষাবাদ মৌসুমে সেলিম শিকদার গংরা জহিরুল হক ফকির দের ইরি ধান জোরপূর্বক কেটে নেয়ার হুমকি দেয় এবং তাদের জমি বলে দাবী করে। নিরুপায় হয়ে হতদরিদ্র জহিরুল হক ফকির মাদারীপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন এবং সরেজমিন তদন্তে জমির মালিকানা জহিরুল হক ফকিরদের বলে সংশ্লিষ্ট তহশীলদার তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। অসহায় বৃদ্ধা সোনাভান বিবি তার জমি ফিরে পাবার জন্য জেলা প্রশাসন, সাংবাদিক এবং সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment